পুতুলনাচের ইতিকথা
বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অনন্য সৃষ্টি 'পুতুল নাচের ইতিকথা'। উপন্যাসে প্রধান চরিত্র শশী, পেশায় ডাক্তার। বাস্তবতা ও আধুনিকতার সংযোগে উপন্যাসটি অসাধারণ মর্যাদা লাভ করেছে।
বাংলা সাহিত্যে এই চরিত্র অসামান্য মহিমায় মহিমান্বিত হয়েছে। শশী একদিক থেকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। ভালবাসে একই গ্রামের বাসিন্দা পরানের বউ কুসুমকে। পুতুল নাচের ইতিকথার মাঝে আক্ষরিক অর্থে পুতুল নাচের কোনও কাহিনী নেই। কিন্তু মানুষ গুলো যে কি করে পুতুলের মতো নেচে বেড়ায় তা-ই দেখানো হয়েছে উপন্যাসে।
ক্ষয়িষ্ণু সমাজ বাস্তবতার বিভিন্ন আঙ্গিক এখানে ফুটে উঠলেও কুসুম আর শশী ডাক্তারের ভালবাসা বাঙ্গালির মনকে করেছে আন্দোলিত। এই উপন্যাসের আর একটি দিক হলো, প্রতিটি চরিত্রই একই সাথে দুটো সত্ত্বা লালন করে থাকে। শশীর চরিত্রের দুটো ভাগ-একটাতে তার আবেগ,অন্য দিকে বাস্তবতা। কুসুমকে পুরোপুরি প্রশ্রয় দেয় না ঠিকই কিন্তু, সে একদিন না দিলেই সে ব্যাকুল হয়ে পড়ে। কিন্তু উপন্যাসের শেষ সকলেরই জানা, কুসুম আর শশীর বিচ্ছেদ। পুতুলনাচের ইতিকথা রোমান্টিক ঘরানার উপন্যাস না হলেও শশী-কুসুমের বিয়োগাত্মক পরিণতি পাঠকের মনকে ব্যথিত করে।