কবি
বাংলাসাহিত্যকে যে ক'টি উপন্যাস অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে তার মধ্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কবি' অন্যতম। কবি উপন্যাসের উপজীব্য অন্ত্যজ শ্রেণির একজন কবিয়ালের জীবনগাথা।
কবিয়ালের নাম নিতাইচরণ। ঘটনাক্রমে সে ভালবেসে ফেলে বন্ধুর রাজার আত্মীয়া বিবাহিত ঠাকুরঝিকে। অসম্ভব জেনেও ঠাকুরঝির প্রতি গভীর ভালবাসা জন্মায় কবি নিতাইয়ের মনে এবং একসময় এ কথা জানাজানি হলে নিতাই গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। যুক্ত হয় ঝুমুর দলের সাথে। সেখানে তার পরিচয় হয় বসন্তের সাথে। বসন্তের মাঝে সে ঠাকুরঝির ছায়া দেখতে পায়। ফলশ্রুতিতে বসন্তের প্রতি দুর্বলতা জন্ম নেয় তার। কিন্তু বিধি বাম। এই বসন্তও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে নিতাইকে ছেড়ে চলে যায় পরলোকে। কবি নিতাইচরণ মনের দুঃখে আবারও নিজ গ্রামে ফিরে আসে। সেখানে এসে জানতে পারে, তার ঠাকুরঝি তার বিরহে পাগলিনী হয়ে মারা গেছে কিছুদিন আগে। সেই মর্মান্তিক হৃদয়ভারের কথাই যেন ফুটে উঠেছে নিতাইয়ের পদে,
'ভালবেসে মিটলো না স্বাদ, কুলাল না এ জীবনে/ হায়! জীবন এত ছোট ক্যানে, এ ভুবনে?'