মঙ্গলকাব্য এ সময়ে ধর্মমঙ্গল ও শিবায়ন বা শিবমঙ্গল বিশেষ স্বাতন্ত্র্য লাভ করে। রামচন্দ্র যতির চন্ডীমঙ্গলও (১৭৬৬-৬৭) এ সময়ের উল্লেখযোগ্য মঙ্গলকাব্য। ধর্মমঙ্গলের কবিরা হলেন ঘনরাম চক্রবর্তী, নরসিংহ বসু, মাণিকরাম গাঙ্গুলী, রামকান্ত রায়, সহদেব চক্রবর্তী প্রমুখ। ঘনরাম চক্রবর্তী ‘কবিরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত হন এবং সাহিত্যে তাঁর স্থান ছিল ভারতচন্দ্র ও রামপ্রসাদের পরেই। তাঁর ধর্মমঙ্গলে (১৭১১) উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। বর্ধমানরাজ কীর্তিচন্দ্রের সমসাময়িক ছিলেন নরসিংহ বসু। মাণিকরাম গাঙ্গুলীর ধর্মমঙ্গলে (১৭৮১) ঘনরামের প্রভাব আছে। রামকান্ত রায়ের ধর্মমঙ্গলে বর্ণিত আত্মকাহিনীতে নতুনত্ব এসেছে বেকারত্বের সঙ্গে কাব্য-উপলক্ষের নাটকীয় বর্ণনায়। তাঁর কাব্যের রচনাকাল সম্ভবত ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দ। এ সময় নতুন দেবদেবীদের নিয়েও কিছু মঙ্গলকাব্য রচিত হয়, যেমন: সূর্যমঙ্গল, গঙ্গামঙ্গল, শীতলামঙ্গল, লক্ষ্মীমঙ্গল, ষষ্ঠীমঙ্গল, সরস্বতীমঙ্গল প্রভৃতি। এগুলির মধ্যে দুর্গাদাস মুখার্জীর গঙ্গাভক্তিতরঙ্গিণী উল্লেখযোগ্য।