মশাররফের পরে অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হলেন মোজাম্মেল হক। গদ্য ও পদ্য রচনায় অসামান্য কৃতিত্বের অধিকারী মোজাম্মেল হক প্রধানত মুসলমান সমাজের জাগরণমূলক কাব্য রচনা করলেও তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটে মূলত গদ্যে। তিনি জীবনচরিত ও উপন্যাস রচনায় এবং ফারসি থেকে অনুবাদে কৃতিত্ব অর্জন করেন। মুসলমানদের জন্য সর্বপ্রথম পাঠ্যপুস্তক রচনাও তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব। মূল ফারসি থেকে শাহনামা কাব্যের প্রথমাংশের অনুবাদ তাঁর অমর কীর্তি। শেখ আবদুর রহিমের কৃতিত্ব হজরত মোহাম্মদের (দ.) জীবন-চরিত ও ধর্মনীতি নামে বাঙালিদের মধ্যে প্রথম হযরত (স.)-এর জীবনী রচনা। পন্ডিত রেয়াজউদ্দীন আহমদ মাশহাদী সমাজ সংস্কারক গ্রন্থের জন্য সমধিক খ্যাত। মুসলমান সমাজকে সংঘবদ্ধ করা এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে জামালুদ্দীন আফগানীর বৈপ্লবিক চিন্তাধারা প্রচারের কারণে প্রকাশের অল্প পরেই এ গ্রন্থটি সরকার বাজেয়াপ্ত করে।
প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা কাব্যের ঋদ্ধ ও বেগবান ধারা উনিশ শতকের প্রথমার্ধে এসে প্রায় শুষ্ক অবস্থায় পতিত হয়। এ সময়ের উল্লেখযোগ্য কবি ছিলেন কেবল ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (১৮১২-১৮৫৯)। তাঁকে বলা হয় যুগসন্ধির কবি। নিজের সম্পাদিত সংবাদ প্রভাকরে তিনি নিজের এবং অন্যদের কবিতাও প্রকাশ করতেন। তাঁর মহান কীর্তি হলো প্রাচীন কবিদের জীবনী ও কাব্য সংগ্রহ করে প্রকাশ করা।