বাংলাদেশের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্পট: প্রকৃতি, ইতিহাস ও সংস্কৃতির সম্মিলন
ভূমিকা
বাংলাদেশ—একটি সবুজ-শ্যামল, নদীমাতৃক দেশ। ছোট হলেও অপার সৌন্দর্য, ঐতিহ্য, ইতিহাস আর সংস্কৃতিতে ভরপুর এ দেশটি। প্রতিটি বিভাগের, প্রতিটি জেলার ভেতর লুকিয়ে আছে কিছু না কিছু দর্শনীয় স্থান যা চোখ জুড়িয়ে দেয়। এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হলো বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু ভ্রমণ স্পট, যা ভ্রমণপিপাসুদের মন ভরিয়ে দেয় এবং দেশের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানান দেয়।
১. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার বাংলাদেশের গর্ব। প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকত প্রতিদিন হাজারো দেশি-বিদেশি পর্যটককে আকর্ষণ করে। এখানে সূর্যাস্তের দৃশ্য, সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন এবং বালুকাময় তটভূমি মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
দর্শনীয় স্থানসমূহ:
হিমছড়ি জলপ্রপাত
ইনানি বিচ
লাবণী পয়েন্ট
রামু বৌদ্ধ বিহার
২. সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন্স। নীল জলরাশি, সাদা বালি ও ঝাউগাছের সারি মিলে এ দ্বীপ যেন এক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি। এখানকার জীববৈচিত্র্য এবং সামুদ্রিক খাবার পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
বিশেষ দিক:
রাতের আকাশে তারাভরা দৃশ্য
কাচের মতো স্বচ্ছ পানি
জীবন্ত প্রবাল ও কোরাল ফিশ
৩. সাজেক ভ্যালি
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়িতে অবস্থিত সাজেক ভ্যালি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এটি মেঘের রাজ্য নামে খ্যাত। সকাল-বিকেল-রাত—প্রতিটি সময়ে সাজেকের রূপ আলাদা।
কী দেখবেন:
কংলাক পাহাড়
হেলিপ্যাড থেকে সূর্যোদয়
স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা
৪. সুন্দরবন
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবন একটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণে অবস্থিত এই বনজঙ্গল একদিকে যেমন রহস্যময়, অন্যদিকে তেমনি মনোমুগ্ধকর।
আকর্ষণীয় দিক:
বাঘ, হরিণ, বানরসহ নানা বন্যপ্রাণী
টাইগার পয়েন্ট
কটকা, কচিখালি, দুবলার চর
৫. সোনারগাঁ
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এক সময় বাংলার রাজধানী ছিল। এটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আধার। এখানে রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য, মসলিন জাদুঘর এবং পানাম নগরী।
প্রধান আকর্ষণ:
পানাম নগরীর পুরনো ভবন
লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর
বারো ভূঁইয়ার স্মৃতিচিহ্ন
৬. পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার
নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে অবস্থিত পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাভুক্ত। গুপ্ত ও পাল যুগের নিদর্শন এই বিহার ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য এক অমূল্য ধন।
বিশেষ:
প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে পাওয়া নিদর্শন
স্থাপত্যশৈলী
ছোটখাটো জাদুঘর
৭. মাহাস্থানগড়
বগুড়ার মহাস্থানগড় বাংলাদেশের প্রাচীনতম শহর হিসেবে পরিচিত। এখানে মাউর্য, গুপ্ত ও পাল শাসনামলের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এটি প্রাচীন পুন্ড্রনগরের স্থান বলে ধারণা করা হয়।
দর্শনীয় এলাকা:
গোকুল মেধ
মহাস্থানগড় জাদুঘর
ভান্ডারগাছা
৮. কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় সমুদ্র সৈকত। এটি এমন একটি সৈকত যেখানে একই স্থান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখা যায়। এই বিরল অভিজ্ঞতা পর্যটকদের গভীরভাবে আকৃষ্ট করে।
দর্শনীয় স্থান:
ফাতরার চর
গঙ্গামতি সংরক্ষিত বন
রাখাইন পল্লী ও বৌদ্ধ বিহার
৯. রাঙ্গামাটি ও কাপ্তাই হ্রদ
রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয়। এখানে রয়েছে কাপ্তাই লেক, যার সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে।
বিশেষ:
ঝুলন্ত ব্রিজ
শুভলং ঝর্ণা
রাজবন বিহার
১০. মেঘালয়ঘেঁষা জাফলং ও বিছানাকান্দি
সিলেট বিভাগের দুটি অসাধারণ প্রাকৃতিক স্থান—জাফলং ও বিছানাকান্দি। ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণা আর স্বচ্ছ পানির ধারা এই এলাকাগুলোকে করে তুলেছে অপূর্ব।
জনপ্রিয় বিষয়:
পাথর উত্তোলনের দৃশ্য
নৌকা ভ্রমণ
মেঘ ও পাহাড়ের খেলা
১১. লালাখাল
সিলেটের আরেকটি নয়নাভিরাম স্থান লালাখাল। এখানকার পানি গাঢ় নীলাভ ও স্বচ্ছ, যা মূলত মেঘালয় থেকে নেমে আসা নদীর পানি।
কী করবেন:
নৌকায় করে ভ্রমণ
স্থানীয় খাবার উপভোগ
নদীর ধারে শান্ত পরিবেশে সময় কাটানো
১২. কমলগঞ্জের হাম হাম জলপ্রপাত
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত হাম হাম জলপ্রপাত একটি রোমাঞ্চকর ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত স্থান। প্রায় ১৬০ ফুট উঁচু এই জলপ্রপাত দেখতে হলে ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে হয়।
১৩. পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও হিমালয় দর্শন
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে শীতকালে স্পষ্ট দেখা যায় হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা। বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে হিমালয়ের শ্বেতশুভ্র চূড়া দেখার মতো অভিজ্ঞতা আর নেই।
১৪. মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারে অবস্থিত এই জলপ্রপাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এবং সহজেই যাওয়া যায়।
উপসংহার
বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হলেও এর মধ্যে রয়েছে নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ ভ্রমণ স্পট। কেউ যদি প্রকৃতির প্রেমিক হন, তাহলে তার জন্য রয়েছে সমুদ্র, পাহাড়, নদী ও ঝর্ণার মায়া। ইতিহাসপ্রেমী পর্যটকদের জন্য রয়েছে প্রাচীন নগর, বৌদ্ধ বিহার ও জাদুঘর। যেকোনো ঋতুতেই বাংলাদেশ ভ্রমণের আদর্শ গন্তব্য।
পর্যটন শুধু বিনোদন নয়, এটি দেশের অর্থনীতির একটি বড় খাত হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের উচিত এসব ভ্রমণ স্থানগুলো রক্ষা করা, পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য আরও সহজ ও নিরাপদ করে তোলা।
#বাংলাদেশ
কখনো কি বাংলাদেশকে এভাবে ভেবে দেখেছেন?
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন (Mangrove forest) সুন্দরবন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বদ্বীপের উপর অবস্থিত। এই বদ্বীপকে বঙ্গীয় বদ্বীপ বা গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ বলে। বিশ্বের বৃহত্তম এই বদ্বীপ আবার বিশ্বের বৃহত্তম উপসাগরের (Bay অর্থে) তীরে গড়ে উঠেছে। সেই উপসাগরকে আমরা বঙ্গোপসাগর বলি। বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর দীর্ঘতম অখণ্ডিত প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত যার নাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। সুন্দরবনে বাস করে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা বিষধর সাপ যার নাম king cobra বা শঙ্খচূড়। কক্সবাজারসহ চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্যাঞ্চলে বাস করে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা সাপ যার নাম Reticulated python বা গোলবাহার অজগর। পৃথিবীর বৃহত্তম উপসাগরের উত্তরে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা সামুদ্রিক পলল শাখা অবস্থিত যার নাম বেঙ্গল ফ্যান বা সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড। সুন্দরবনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কুমির, লোনাপানির কুমির বাস করে।
Upal
বাংলাদেশের ছেলেরা Ai দিয়ে মেয়েদের নোংরা ছবি ও ভিডিও বানায় অন্য দিকে চীনের ছেলেরা
👉 চীনের নদী পাহাড়া দিচ্ছে AI মাছ
ভাবুন তো, নদীর পানির নিচে সাঁতরে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট মাছ। কিন্তু ওগুলো আসলে মাছ নয়—রোবট! চীনে শুরু হয়েছে এক প্রযুক্তিগত বিপ্লব যেখানে বায়োনিক মাছ ব্যবহার করে বিশুদ্ধ করা হচ্ছে নদীর দূষিত পানি।
এই ছোট রোবট মাছগুলো দেখতে একদম আসল মাছের মতো। এগুলো বানিয়েছে চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৫৩ সেন্টিমিটার, মাথা ও লেজে রয়েছে দুটি চলনক্ষম জয়েন্ট। এদের চলাফেরা, সাঁতার কাটা একেবারে জীবন্ত মাছের মতো। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর দিক হলো, এরা কাজ করছে চীনের দীর্ঘতম নদী Yangtze River-এ পানির মান বিশ্লেষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে।
এই বায়োনিক মাছগুলোর ভিতরে আছে স্মার্ট সেন্সর, LED আলো এবং AI সিস্টেম। তারা পানির pH, তাপমাত্রা, দ্রবীভূত অক্সিজেন, এমনকি রাসায়নিক দূষণের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে। তারা পানির গভীরে গিয়ে নিজে থেকেই খুঁজে বের করে কোথায় দূষণ বেশি, কোথায় পানির মান খারাপ। তারপর সেই তথ্য পাঠিয়ে দেয় রিয়েল টাইমে গবেষকদের কাছে, যেন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
নানা ইস্যূ দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বয়ে যাচ্ছে। একটা বিষয় খুব অস্থিরতা তৈরি করছে নিজের মাঝে-গত কয়েকদিন ধরে।
সম্প্রতি মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি দেশের ক্ষুদ্র ঋণ (পড়ুন সুদী ক্ষুদ্র ঋণ) এর কার্যক্রম নিয়ে প্রায় ৪০০ পৃ. এর একটি ইংরেজি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ‘Micrifinance in Bangladesh-Annual Statistics, June 2024’ । এইটা পড়ে খুবই চিন্তায় পড়ে গেলাম।
প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে অনুমোদিত ও কার্যকর ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান এর সংখ্যা মোট ৭২৪টি। এগুলোর সদস্য সংখ্যা ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজার। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৩৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ (১৭ কোটি জনসংখ্যার হিসাবে)।
সহজে বললে-প্রায় ৪০ %। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জন বাংলাদেশির মধ্যে প্রায় ৩৮ জন এই গোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে। এতো বিশাল সংখ্যাক জনগোষ্ঠি সুদী ক্ষুদ্র ঋণের জালে আবদ্ধ! (অল্প কিছু এমআরএ ইসলামী হলেও অধিকাংশই সুদী)
BRAC ও ASA-এর সম্মিলিত সুদী ক্ষুদ্র ঋণের বাজার দখল প্রায় ৫১.১০%, অর্থাৎ শুধু দুই প্রতিষ্ঠান মিলে পুরো ME সেক্টরের অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে BRAC শীর্ষস্থানে রয়েছে। তাদের ME ঋণ বিতরণ বাজারের প্রায় ৩৪.৫১% দখল করে আছে।
ব্র্যাকের Portfolio Yield (PY) : 23.70%। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকা ঋণের বিপরীতে ২৩.৭০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে-দরিদ্র ঋণ গ্রহীতাদের থেকে।
এতো উচ্চ সুদের ব্যবসা তো সাধারণ ব্যাংকও করতে পারে না। তারা সেই ব্যবসা করে যাচ্ছে দরিদ্র মানুষের সাথে। ক্ষুদ্র ঋণের নামে দরিদ্র মানুষের রক্ষ চোষে যাচ্ছে। ঋণ গ্রহীতারা কতটুকু লাভবান হচ্ছে, সেটি বড় কথা নয়, তাদের পোর্টফোলিও পাহাড়তুল্য হয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন!
সরাসরি ঋণ গ্রহীতা থেকেই প্রতি ১০০ টাকায় ২৩.৭০% আয় করছে। ১০ হাজার টাকা ঋণ নিলে গ্রহীতাকে অতিরিক্ত ২৩৭০ টাকা আদায় করতে হবে। তাদের তথ্যানুসারে এখানে মাত্র ২০০ টাকা (প্রায়) সুদ আয় (অপারেটিং কস্ট বাদ দিলে থাকে 8.48%, সেই হিসাবে উক্ত নিট আয়)। ২১৭০ টাকাই তাদের ভাষায় অপারেটিং কস্ট। এই পুরো খরচ চাপিয়ে দেয়া হয় দরিদ্র ঋণ গ্রহীতার উপর!
এখানে একটি শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। তারা সব সময় চেষ্টা করে অপারেটিং কস্ট বেশি দেখিয়ে নিট আয় কম দেখাতে। মানুষ যেনো তাদের উচ্চ আয়ে প্রশ্ন উত্থাপন না করতে পারে। মানুষকে বলে- “আমরা তো মুনাফা করছি না, আয় যা হয়, প্রায় সবই খরচে চলে যায়”। মাত্র ২০০ (প্রায়) আয় হচ্ছে।
কিন্তু এখানে সত্য গোপন করার কৌশল রয়েছে। তাদের ভাষায় অপারেটিং কস্ট ১৫.২২%—তবে এটি আসলে একটি ম্যানিপুলেটেড ফিগার হতে পারে। তারা খরচ বেশি দেখায়। যেনো মানুষ তাদের গোপন উচ্চ আয়ে প্রশ্ন করতে না পারে।
দেখুন- ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর “Administrative Expenses”, “Staff Bonus”, “Loan Officer Incentives”, “Training”, “IT Cost”, এমনকি "Lobbying Cost" ইত্যাদিও অপারেটিং খরচ হিসেবে দেখিয়ে থাকে।
কিন্তু বাস্তবে এসব খরচের অনেকাংশই "Corporate Excess", "মুনাফা লুকানোর উপায়", অথবা পরোক্ষভাবে মালিকানার dividend-এ পরিণত হয়।
আরও লক্ষ্য করুন- Operating Self Sufficiency (OSS) 134.62% ও Operating Margin 27.35% এই দুইটি সূচক আসলেই প্রমাণ করে দেয়, তারা শুধু খরচ কভার করছে না, বরং বড় অঙ্কে মুনাফা করছে।
বাস্তবে মুদ্রার উল্টো চিত্র ভিন্ন রকম। তাদের নিট আয় আরও বেশি হয়ে থাকে। তাদের হিসাবে নিট মুনাফা 8.48%-এ সীমাবদ্ধ নয়। এটি না হলেও ১৫-২০% হবে।
কারণ, প্রতিষ্ঠানগুলো "Surplus Allocation", "Contingency Reserve", বা "Unrealized Income" এর মতো অ্যাকাউন্টিং টার্ম ব্যবহার করে প্রকৃত মুনাফার একটি অংশ আড়াল করে রাখে।
ফলে Reported Net Margin কম দেখানো হলেও বাস্তবিক অর্থে "Effective Net Margin" অনেক বেশি হতে পারে—১৫%–২০% বা তার চেয়েও বেশি।
মাত্র কিছুদিন আগে এমআরএ ভবন উদ্বোধন হল। (পড়ুন-প্রতারণা ভবন)
এই সরকার এসব সুদী ক্ষুদ্র ঋণের-প্রধান পৃষ্ঠপোষক-আগে থেকেই।
৪০০ পৃ. এর প্রতিবেদনের শুরুতে অর্থ উপদেষ্টাসহ অনেকেই এসব সুদী ক্ষুদ্র ঋণের প্রশংসা করেছেন-এগুলো দারিদ্রবিমোচন করে যাচ্ছে। অথচ মুদ্রার উল্টো চিত্র হল-এগুলো দারিদ্র বিমোচনের তুলনায় নিজেদেরকেই সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে। এতো বড় একটি প্রতিবেদনে MRA-এর আওতায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য Social Impact Assessment অনুপস্থিত।
এতো এতো মাদরাসা, মসজিদের শহর, আলেম-দ্বীনী মানুষের দেশ, অথচ প্রতি ১০০ জনে ৩৭ জন সুদে সম্পৃক্ত!! ভাবা যায়!!
আপনার চারপাশে কেউ এসবে জড়িয়ে থাকলে সচেতন করুন। বিত্তবান ও উদ্যোগীগণ এগিয়ে আসুন-বিকল্প শূন্য সুদ এমএফএস গড়ে তুলুন। সুদের শিরোনামে এসব প্রতারক এমএফএস এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। যারা শূন্য সুদ ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনা করছেন তাদের সহায়তা করুন।
মাগুর মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা
ভূমিকা: অবমানকল হতে বাংলাদেশে মাগুর মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত । এসব মাছ খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর । সূদূর অতীতে এ মাছগুলো প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের জলাশয়ে প্রচুর পাওয়া যেত । কৃত্তিম প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং চাহিদা ও বাজারদর বেশি হওয়ায় মাছের বাণিজ্যিক চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে।
পুকুর নির্বাচন : বাণিজ্যিক মাছচাষের জন্য অপেক্ষাকৃত বড় আকারের পুকুর, ৪০ শতাংশ বা তদূর্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়। পানির গভীরতা ৪ থেকে ৬ ফুটের মধ্যে হলে ভাল হয়। মাটি দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ এবং পুকুরটি আয়তাকার হওয়া উত্তম।
পুকুর প্রস্তুতি
* পাড় ও তলদেশ: পাড়ে ঝোপ-ঝাড় থাকলে পরিষ্কার করতে হবে। পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে (কমপক্ষে দৈনিক ৮ ঘন্টা) সূর্যালোক প্রবেশের সুবিধার্থে সম্ভব হলে বড় গাছ কেটে ফেলতে হবে। সম্ভব না হলে অন্তত ভেতর দিকের ডাল-পালা কেটে ফেলতে হবে প্রয়োজনে পানি নিষ্কাশন করে পুকুরের পাড় মেরামত ও তলদেশ অতিরিক্ত কর্মমুক্ত করে সমান করতে হবে। অন্যথায় পুকুরের পানির গুণাগুণ দ্রুত খারাপ হয়ে যাবে। তাছাড়া, তলদেশ সমান না হলে পরবর্তীতে মাছ আহরণ করা কঠিন হবে।
* জলজ আগাছা ও অবাঞ্চিত মাছসহ রাক্ষুসে মাছ দুরীকরণ: যদি পানি প্রাপ্তি বিশেষ সমস্যা না হয় তাহলে পুকুরের পানি নিষ্কাশন করে সব জলজ আগাছা এবং অবাঞ্চিত মাছসহ রাক্ষুসে মাছ অপসারণ করা যেতে পারে। পানি প্রাপ্তি সমস্যা হলে, প্রথমে পুকুরে বারবার জাল টেনে যতদূর সম্ভব সকল মাছ ধরে ফেলতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সব মাছ ধরে ফেলার জন্য প্রতিশতক আয়তন ও প্রতিফুট পানির গড় গভীরতার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম হারে রোটেনন প্রয়োগ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৪ ফুট পানির গড় গভীরতার এক একর পুকুরে ১০-১২ কেজি রোটেনন লাগবে।
* চুন প্রয়োগ: রোটেনন প্রয়োগ করা হয়ে থাকলে প্রয়োগর ২/১ দিন পর প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। এই হারে এক একর জলায়তন বিশিষ্ট পুকুরের জন্য চুন লাগবে ১০০ কেজি।
মাগুর চাষের সুবিধাসমূহ :মাগুর অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর মাছ।
■ অসুস্থ ও রোগমুক্তির পর স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এগুলো সমাদৃত মাছ।
■ অতিরিক্ত শ্বাস অঙ্গ থাকায় এর বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে দীর্ঘ সময় ডাঙ্গায় বেঁচে থাকতে পারে।
■ ৩-৪ মাসের মধ্যে বিক্রয়যোগ্য হয়, ফলে একই জলাশয়ে বছরে ৩-৪ বার চাষ করা সম্ভব (সঠিক নার্সারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে)।
তুলনায় চাহিদা ও বাজার মূল্য অত্যাধিক বেশি হওয়ায় এ মাছগুলোর বাণিজ্যিক চাষ দিন দিন বাড়ছে।
■ আন্তর্জাতিক বাজারেও ব্যাপক চাহিদা আছে।
মাগুর মাছের নার্সারি ও চাষ ব্যবস্থাপনা
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
■ নার্সারি পুকুরের আয়তন ১০-৫০ শতাংশ এবং গভীরতা ১.০-১.৫ মিটার।
■ পুকুর হতে অনাকাতিত মাছ ও প্রাণী দূর করা উত্তম; তবে পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে ১ ফুট পানির গভীরতায় ২৫-৩০ গ্রাম রোটেনন প্রয়োগ করতে হবে।
■ রোটেনন প্রয়োগের ৩-৪ দিন পর প্রতি শতাংশে ১.০ কেজি হারে চুন পুকুরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
■ চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর শতাংশ প্রতি ৫০০ গ্রাম খৈল, ১৫০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫-১০০ গ্রাম টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে।
■ ইউরিয়া সার পানিতে গুলে ছিটিয়ে এবং টিএসপি ও সরিষার খৈল ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর পানিতে গুলে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
■ সার প্রয়োগের ৫-৬ দিন পর পুকুরের পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হলে পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে।
■ নার্সারি পুকুরের চারপাশে ৩-৪ ফুট উঁচু মশারীর জালের বেষ্টনী দিতে হবে। এর ফলে ব্যাঙ ও সাপ পুকুরে প্রবেশ করে পোনার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।
■ হাঁসপোকা ও ক্ষতিকারক প্লাংকটন বিনষ্ট করার জন্য রেণু পোনা মজুদের ২৪ ঘন্টা আগে ৮-১০ মিলি সুমিথিয়ন প্রতি শতাংশে অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।ধানী পোনা মজুদ
■ নার্সারি পুকুরে ১৫-২০ দিন বয়সের ধানী পোনা প্রতি শতাংশে ৫,০০০-৬,০০০ টি হারে মজুদ করা যেতে পারে।
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
■ মাগুর মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ মাছ চাষের জন্য ৪-৬ মাস পানি থাকে এ রকম ১৫-৫০ শতাংশের পুকুর নির্বাচন করতে হবে। তবে এর চেয়ে বড় পুকুরেও এ মাছ চাষ করা যায়।
■ পুকুরের পাড় মেরামত ও জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
■ পুকুর সেচে পানি শুকিয়ে অনাকাক্ষিত মাছ ও প্রাণী দূর করতে হবে।
■ পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে ২৫-৩০ গ্রাম রোটেনন (১ ফুট গভীরতার জন্য) প্রয়োগ করে অনাকাক্ষিত মাছ দূর করতে হবে ।
■ প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ আবশ্যক।
■ চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পরে পূর্বের নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে। পোনা মজুদের পূর্বে পুকুরের চারিদিকে নাইলন/নেট জালের বেষ্টনী দিতে হবে।
■ সার প্রয়োগের ৭/৮ দিন পরে পুকুরে পোনা মজুদ করতে হবে।
পোনা সংগ্রহ ও মজুদ
■ পুকুরে চাষের জন্য মাগুর মাছের পোনা নিকটবর্তী ভাল হ্যাচারি হতে সংগ্রহ করে পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন দিয়ে পরিবহন করতে হবে।
■ প্রতি শতাংশে ০.৫-১.০ গ্রাম ওজনে সুস্থ সবল ৩০০-৪০০ টি পোনা মজুদ করতে হবে। তবে উন্নত ব্যবস্থাপনায় অধিক ঘনত্বে পোনা মজুদ করা যেতে পারে।
■ পোনা মজুদের সময় পোনাকে পুকুরের পানির সাথে ভালভাবে কন্ডিশনিং করে তারপর ছাড়তে হবে।
খাবার ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যা
■ পোনা মজুদের দিন থেকে ৩৫-৪০% আমিষ সমৃদ্ধ পিলেট খাদ্য নিম্নের ছক অনুযায়ী সকাল, দুপুর ও বিকালে পুকুরে ছিটিয়ে সরবরাহ করতে হবে।
JHuma771
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Sadia Akter
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?