আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ!
রেডমি নোট ১৪ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। যেহেতু রেডমি নোট ১৩ সম্প্রতি (২০২৪ সালের শুরুর দিকে) বাজারে এসেছে, রেডমি নোট ১৪ মডেলটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি বা বাজারে আসেনি।
তবে, সাধারণত নতুন মডেলগুলো পূর্ববর্তী মডেলগুলোর আপগ্রেড সংস্করণ হয়। রেডমি নোট ১৪ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও, এর সম্ভাব্য বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে আমি কিছু বিষয় খুঁজে দেখতে পারি।
আপনি যদি রেডমি নোট ১৪ সম্পর্কে কোনো গুজব বা ফাঁস হওয়া তথ্য সম্পর্কে জানতে চান, অথবা রেডমি নোট সিরিজের ভবিষ্যৎ দিক সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন, তাহলে জানাতে পারেন।
আমি রেডমি নোট ১৪ সম্পর্কে কোনো নতুন ঘোষণা, গুজব, বা সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে তথ্য খুঁজে দেখার জন্য নিচে কিছু সার্চ ক্যোয়ারী তৈরি করছি:
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ!
আপনার রেডমি নোট ১৪ সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখে ভালো লাগলো। আমার অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, রেডমি নোট ১৪ সিরিজটি ইতিমধ্যেই কিছু বাজারে, বিশেষ করে ভারতে, ২৫শে জুলাই, ২০২৫ তারিখে লঞ্চ হয়েছে। এমনকি, এর একটি বিশেষ সংস্করণ, Redmi Note 14 SE 5G, ও গত ২৮শে জুলাই, ২০২৫ তারিখে ভারতে উন্মোচন করা হয়েছে।
এই সিরিজটিতে সাধারণত বেশ কয়েকটি মডেল থাকে, যেমন Redmi Note 14 5G, Redmi Note 14 4G, Redmi Note 14 Pro 5G, Redmi Note 14 Pro+ 5G এবং Redmi Note 14 SE 5G। আমি প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রেডমি নোট ১৪ সিরিজের কিছু সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরছি:
রেডমি নোট ১৪ সিরিজের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো (মডেল ভেদে ভিন্ন হতে পারে):
ডিসপ্লে:
৬.৬৭ ইঞ্চির AMOLED ডিসপ্লে।
ফুল HD+ রেজোলিউশন (১০৮০ x ২৪০০ পিক্সেল)।
১২০Hz রিফ্রেশ রেট, যা অত্যন্ত মসৃণ ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা দেয়।
২০০০ নিটস বা তার বেশি (যেমন: ২১০০ নিটস) পিক ব্রাইটনেস, যা সরাসরি সূর্যের আলোতেও স্ক্রিন দেখতে সাহায্য করে।
কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫ (Gorilla Glass 5) সুরক্ষা।
ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর (কিছু মডেলে)।
পারফরম্যান্স:
Redmi Note 14 5G/SE 5G: MediaTek Dimensity 7025 Ultra (6nm) প্রসেসর। এটি 5G কানেক্টিভিটি সমর্থন করে এবং দৈনন্দিন ব্যবহার ও গেমিংয়ের জন্য শক্তিশালী পারফরম্যান্স দেয়।
Redmi Note 14 4G: MediaTek Helio G99 Ultra প্রসেসর।
RAM অপশন: ৬জিবি, ৮জিবি, ১২জিবি।
স্টোরেজ অপশন: ১২৮জিবি, ২৫৬জিবি। মাইক্রোএসডি কার্ডের স্লট থাকতে পারে।
ক্যামেরা:
পিছনের ক্যামেরা (সাধারণত ট্রিপল সেটআপ):
৫০ মেগাপিক্সেল (MP) প্রধান ক্যামেরা (Sony LYT-600 সেন্সর সহ OIS)। এটি কম আলোতেও ভালো ছবি তুলতে সক্ষম।
৮ মেগাপিক্সেল (MP) আলট্রাওয়াইড ক্যামেরা।
২ মেগাপিক্সেল (MP) ম্যাক্রো সেন্সর।
সামনের ক্যামেরা: ১৬ মেগাপিক্সেল (MP) অথবা ২০ মেগাপিক্সেল (MP) সেলফি ক্যামেরা।
ব্যাটারি ও চার্জিং:
সাধারণত ৫০০০ mAh বা ৫১১০ mAh এর বড় ব্যাটারি।
৪৫W বা ৩৩W ফাস্ট চার্জিং সমর্থন, যা দ্রুত ফোন চার্জ করতে সাহায্য করে।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য:
অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ভিত্তিক Xiaomi HyperOS।
ডুয়াল স্পিকার এবং ডলবি অ্যাটমস (Dolby Atmos) অডিও সাপোর্ট।
৩.৫ মিমি হেডফোন জ্যাক।
IP64 বা IP54 রেটিং (ধুলো এবং জলের ছিটা প্রতিরোধক)।
পাতলা এবং হালকা ডিজাইন।
কিছু নির্দিষ্ট মডেলের তথ্য:
Redmi Note 14 SE 5G:
ভারতের বাজারে এটি প্রায় ₹14,999 (প্রায় ১৯,৯৯৯-২০,৯৯৯ টাকা, এক্সচেঞ্জ রেট অনুযায়ী) থেকে শুরু হয়েছে।
এটি ৬জিবি RAM এবং ১২৮জিবি স্টোরেজ সহ আসে।
আগস্ট ৭, ২০২৫ থেকে এটি বিক্রি শুরু হবে।
বাংলাদেশে প্রাপ্যতা ও দাম:
যদিও রেডমি নোট ১৪ সিরিজ ভারতের বাজারে এসেছে, বাংলাদেশে এটি কবে নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে আসবে বা এর দাম কত হবে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে, সাধারণত নতুন রেডমি নোট সিরিজগুলো কয়েক মাস পরে বাংলাদেশে আসে, এবং দাম সাধারণত ভারতীয় দামের চেয়ে কিছুটা বেশি হয় শুল্ক ও অন্যান্য খরচের কারণে।
আপনি যদি রেডমি নোট ১৪ সিরিজের কোনো নির্দিষ্ট মডেল বা তার কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
পরোপকারে উদ্বুদ্ধ করেছেন নবীজি
মো. আবদুর রহমান
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ০৩:১২ এএম আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ০৩:১২ এএম
পরোপকারে উদ্বুদ্ধ করেছেন নবীজি
পরোপকারে উদ্বুদ্ধ করেছেন নবীজি
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে কেউ একা বাস করতে পারে না। সমাজের প্রত্যেক মানুষ একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল। সমাজে বসবাসরত প্রত্যেক মানুষ পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করে। সুখ-দুঃখ পরস্পর ভাগ করে নেয়। মানবিকতার দাবিতে পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হয়। এভাবে একে অন্যের প্রয়োজনে বা উপকারে আসার নামই পরোপকার। রাসুল (সা.) ছিলেন সবচেয়ে বড় পরোপকারী এবং তিনি সবাইকে পরোপকারে উদ্বুদ্ধ করেছেন। পরোপকার মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের পরিচায়ক। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎকাজের আদেশ দাও এবং অসৎকাজে নিষেধ করো। আর আল্লাহকে বিশ্বাস করো।’ (সুরা আলে ইমরান ১১০)
আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি অনুযায়ী একজন মুসলমান কেবল অপর মুসলমানকে নয়, বরং সমাজের অন্য মানুষের বিপদেও পাশে এসে দাঁড়াবে, এটিই ইসলামের মহান শিক্ষা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’ (সহিহ বুখারি) তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার একশটি প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।’
(সহিহ মুসলিম)
পরোপকার মানুষকে মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব মনীষী স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন, তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন পরোপকারী। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরোপকারের মূর্ত প্রতীক। তিনি নিজে সবসময় মানুষের উপকার করতেন। অন্যকেও উপদেশ দিতেন মানুষের উপকার করতে। মানুষের উপকার করে তিনি আনন্দিত হতেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর কাছে কোনো কিছু চাওয়া হলে তিনি কখনো না বলতেন না।’ (সহিহ মুসলিম) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। রমজান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমজানের প্রতি রাতেই জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে দেখা করতেন এবং তারা একে অপরকে কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রবাহমান বায়ু অপেক্ষাও অধিক দানশীল ছিলেন।’
(সহিহ বুখারি)
পরোপকারের জন্য রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতেন। যায়েদ ইবনে আসলাম (রা.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘ওমর (রা.)-কে আমি বলতে শুনেছি, রাসুল (সা.) (তাবুক যুদ্ধের সময়) আমাদের দান-সদকা করার নির্দেশ দেন। সৌভাগ্যক্রমে ওই সময় আমার সম্পদও ছিল। আমি (মনে মনে) বললাম, যদি আমি কোনো দিন আবু বকর (রা.)-কে অতিক্রম করে যেতে পারি, তাহলে আজই সেই সুযোগ। ওমর (রা.) বলেন, আমি আমার অর্ধেক সম্পদ নিয়ে এলাম। রাসুল (সা.) বললেন, তোমার পরিবার-পরিজনদের জন্য তুমি কী রেখে এসেছ? আমি বললাম, এর সমপরিমাণ। আর আবু বকর (রা.) তার পুরো সম্পদ নিয়ে এলেন। রাসুল (সা.) বললেন, হে আবু বকর! তোমার পরিবার-পরিজনদের জন্য কী রেখে এসেছ? তিনি বললেন, তাদের জন্য আল্লাহ ও তার রাসুলকেই রেখে এসেছি। আমি (মনে মনে) বললাম, আমি কখনো আবু বকর (রা.)-কে অতিক্রম করতে পারব না।’ (তিরমিজি)
সমাজের গরিব, দুস্থ, অভাবী ও অসহায় মানুষকে উপকার করার প্রতি ইসলাম অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে। সুযোগ হলে সাধ্যমতো তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করা, খাবার খাওয়ানো এবং খোঁজখবর নেওয়া উচিত। পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় মহান আল্লাহ গরিব, অসহায় ও মিসকিনদের খাবার দান করার কথা বলেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি। অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি কি জানেন, সেই ঘাঁটি কী? তা হচ্ছে দাসমুক্ত করা কিংবা দুর্যোগ ও সংকটের দিনে এতিম, আত্মীয়স্বজন ও ধুলো-ধূসরিত মিসকিনদের অন্নদান করা।’ (সুরা বালাদ ১০-১৬) অভুক্ত ব্যক্তিকে আহার্য দেওয়ার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মানুষের কল্যাণ সংশ্লিষ্ট যত কাজ আছে, সেগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম হচ্ছে দরিদ্র ও ক্ষুধার্তকে খাবার দান করা।’ (সহিহ বুখারি) বস্তুত মানুষের সেবা করা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাই গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসা উচিত।
মানবপ্রেম ও মানুষের সেবা করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি অনেক ফজিলতের কাজ। মানুষের সেবা করার একটি ফজিলত হলো, এর দ্বারা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ শুধু তার আমল দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (মুসনাদে আহমদ) নেক আমলের পাশাপাশি আল্লাহর রহমত থাকলেই মুক্তি পাওয়া যাবে। আল্লাহর রহমত লাভের সবচেয়ে সহজ পথ হলো, তার সৃষ্টির প্রতি সহযোগিতা ও উপকারের হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
বিষয়:
দৈনন্দিন ইসলাম
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
যেসব গুণে সৌভাগ্যবান হওয়া যায়
সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত সুমামা (রা.)
বিদায় হজে রাসুল (সা.)-এর ১০ উপদেশ
সূর্য যখন সেজদায় লুটিয়ে পড়ে
prothomalo-bangla
কলাম
মতামত
ইসলামে পরোপকারের গুরুত্ব ও ফজিলত
শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
Published: 16 Oct 2020, 09:52
মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক হতে হলে পরোপকারী হতে হবে। একজন অন্যজনের বিপদে এগিয়ে আসা, পাশে দাঁড়ানো, সহমর্মী হওয়া, শুধু নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত না হয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করাই মনুষ্যত্ব।
পরোপকার মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের অলংকার। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাধা দেবে।’ (সুরা-৩ আলে-ইমরান, আয়াত: ১১০)। এ বিষয়ে বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি সদয় হও, তাহলে আসমানের মালিক আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (তিরমিজি: ১৮৪৭)।
মানুষের সদ্গুণাবলির অন্যতম হচ্ছে পরোপকার। একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া জীবন যাপন করা কঠিন। যখন কোনো সমাজে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা হ্রাস পায়, সে সমাজের মানুষ সব দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ে। সে সমাজে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, শান্তি বিলুপ্ত হয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা তিরোহিত হয়।
ইসলাম সহানুভূতির ধর্ম। পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতা ইসলামের অন্যতম বিষয়। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। তাই পরোপকারের চেতনায় কোনো শ্রেণিভেদ নেই। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, আত্মীয়-অনাত্মীয়, স্বজাতি-বিজাতি, মুসলিম-অমুসলিম এসব ব্যবধানের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামের শান্তি ও সৌহার্দ্যের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মিলেমিশে থাকে। তার মধ্যে ভালো কিছু নেই, যে মিলেমিশে থাকতে পারে না। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৫৭৮৭)।
পরোপকারী হতে হলে অনেক ধনসম্পদের মালিক হতে হবে এমন নয়। প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ অবস্থানে থেকে পরোপকারী হতে পারে। পরোপকার নির্দিষ্ট সীমারেখায় আবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে এবং শারীরিক, আর্থিক ও মানসিক কর্মকাণ্ডে এর পরিধি পরিব্যাপ্ত ও বিস্তৃত।
বিজ্ঞাপন
পরোপকার মানুষকে মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব মনীষী স্মরণীয়–বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন পরহিতৈষী। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম ওহিপ্রাপ্তির পর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে খাদিজা (রা.)-কে বললেন, ‘আমাকে কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দাও, আমি আমার জীবনের আশঙ্কা করছি।’ তখন খাদিজা (রা.) নবীজি (সা.)-কে অভয় দিয়ে বলেছিলেন, ‘আল্লাহ কখনোই আপনার অমঙ্গল করবেন না। কারণ, আপনি আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করেন, গরিব-দুঃখীর জন্য কাজ করেন, অসহায়-এতিমের ভার বহন করেন,
তাদের কল্যাণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।’ (বুখারি: ৪৫৭)।
পরোপকারে নিজেরও কল্যাণ সাধিত হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘অবশ্যই দান-সদকা মানুষের হায়াত বৃদ্ধি করে। অপমৃত্যু থেকে বাঁচায় এবং অহমিকা দূর করে।’ (আল-মুজামুল কাবীর: ১৩৫০৮)।
অনাথ-অসহায় ও অনাহারির কষ্টে সমব্যথী হতে আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে রোজা ফরজ করেছেন। নিঃস্ব ও অভাবীর অভাব মোচনে জাকাত ফরজ ও সাদাকুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন। দান-সদকা ও অন্যের জন্য খরচে উদ্বুদ্ধ করে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। আল–কোরআনে রয়েছে, ‘কে আছে যে আল্লাহকে কর্জে হাসানা উত্তম ঋণ দেবে, তাহলে তিনি তার জন্য একে বর্ধিত করে দেবেন এবং তার জন্য সম্মানজনক প্রতিদানও রয়েছে।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১১)।
বিজ্ঞাপন
কোরআন কারিমে রয়েছে, ‘আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে, এর বিনিময়ে।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ১১১)। ‘নিশ্চয়ই দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, যে ক্ষেত্রে তারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে তাদের প্রতিদান বর্ধিত করা হবে এবং তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক প্রতিদান।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১৮)।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি সমস্যাগুলোর একটি সমাধান করে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার আখিরাতের সংকটগুলোর একটি মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তাআলাও তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-গুণ গোপন করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ (মুসলিম: ২৬৯৯)।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব
smusmangonee@gmail.com
আরও পড়ুন
জাপায় এবার ‘ছাঁটাই রাজনীতি’, মহাসচিব বদলসহ ৭ দিনে ১১ নেতাকে অব্যাহতি
দল বেঁধে রাতে বাসায় ঢুকে বলে, ‘তুই আওয়ামী লীগ করিস, বাঁচতে হলে ২০ লাখ টাকা দে’
নির্বাচনে কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে, তরুণেরা যা ভাবছেন
নিজের সিদ্ধান্তমতো সন্তান নিতে পারেন মাত্র ২৩% নারী
পুতিন বরখাস্ত করার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ মন্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’
স্বত্ব © ২০২৫ প্রথম আলো
prothomalo-bangla
কলাম
মতামত
ইসলামে পরোপকারের গুরুত্ব ও ফজিলত
শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
Published: 16 Oct 2020, 09:52
মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক হতে হলে পরোপকারী হতে হবে। একজন অন্যজনের বিপদে এগিয়ে আসা, পাশে দাঁড়ানো, সহমর্মী হওয়া, শুধু নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত না হয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করাই মনুষ্যত্ব।
পরোপকার মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের অলংকার। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাধা দেবে।’ (সুরা-৩ আলে-ইমরান, আয়াত: ১১০)। এ বিষয়ে বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি সদয় হও, তাহলে আসমানের মালিক আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (তিরমিজি: ১৮৪৭)।
মানুষের সদ্গুণাবলির অন্যতম হচ্ছে পরোপকার। একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া জীবন যাপন করা কঠিন। যখন কোনো সমাজে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা হ্রাস পায়, সে সমাজের মানুষ সব দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ে। সে সমাজে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, শান্তি বিলুপ্ত হয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা তিরোহিত হয়।
ইসলাম সহানুভূতির ধর্ম। পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতা ইসলামের অন্যতম বিষয়। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। তাই পরোপকারের চেতনায় কোনো শ্রেণিভেদ নেই। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, আত্মীয়-অনাত্মীয়, স্বজাতি-বিজাতি, মুসলিম-অমুসলিম এসব ব্যবধানের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামের শান্তি ও সৌহার্দ্যের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মিলেমিশে থাকে। তার মধ্যে ভালো কিছু নেই, যে মিলেমিশে থাকতে পারে না। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৫৭৮৭)।
পরোপকারী হতে হলে অনেক ধনসম্পদের মালিক হতে হবে এমন নয়। প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ অবস্থানে থেকে পরোপকারী হতে পারে। পরোপকার নির্দিষ্ট সীমারেখায় আবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে এবং শারীরিক, আর্থিক ও মানসিক কর্মকাণ্ডে এর পরিধি পরিব্যাপ্ত ও বিস্তৃত।
বিজ্ঞাপন
পরোপকার মানুষকে মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব মনীষী স্মরণীয়–বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন পরহিতৈষী। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম ওহিপ্রাপ্তির পর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে খাদিজা (রা.)-কে বললেন, ‘আমাকে কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দাও, আমি আমার জীবনের আশঙ্কা করছি।’ তখন খাদিজা (রা.) নবীজি (সা.)-কে অভয় দিয়ে বলেছিলেন, ‘আল্লাহ কখনোই আপনার অমঙ্গল করবেন না। কারণ, আপনি আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করেন, গরিব-দুঃখীর জন্য কাজ করেন, অসহায়-এতিমের ভার বহন করেন,
তাদের কল্যাণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।’ (বুখারি: ৪৫৭)।
পরোপকারে নিজেরও কল্যাণ সাধিত হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘অবশ্যই দান-সদকা মানুষের হায়াত বৃদ্ধি করে। অপমৃত্যু থেকে বাঁচায় এবং অহমিকা দূর করে।’ (আল-মুজামুল কাবীর: ১৩৫০৮)।
অনাথ-অসহায় ও অনাহারির কষ্টে সমব্যথী হতে আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে রোজা ফরজ করেছেন। নিঃস্ব ও অভাবীর অভাব মোচনে জাকাত ফরজ ও সাদাকুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন। দান-সদকা ও অন্যের জন্য খরচে উদ্বুদ্ধ করে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। আল–কোরআনে রয়েছে, ‘কে আছে যে আল্লাহকে কর্জে হাসানা উত্তম ঋণ দেবে, তাহলে তিনি তার জন্য একে বর্ধিত করে দেবেন এবং তার জন্য সম্মানজনক প্রতিদানও রয়েছে।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১১)।
বিজ্ঞাপন
কোরআন কারিমে রয়েছে, ‘আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে, এর বিনিময়ে।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ১১১)। ‘নিশ্চয়ই দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, যে ক্ষেত্রে তারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে তাদের প্রতিদান বর্ধিত করা হবে এবং তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক প্রতিদান।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১৮)।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি সমস্যাগুলোর একটি সমাধান করে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার আখিরাতের সংকটগুলোর একটি মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তাআলাও তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-গুণ গোপন করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ (মুসলিম: ২৬৯৯)।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব
smusmangonee@gmail.com
আরও পড়ুন
জাপায় এবার ‘ছাঁটাই রাজনীতি’, মহাসচিব বদলসহ ৭ দিনে ১১ নেতাকে অব্যাহতি
দল বেঁধে রাতে বাসায় ঢুকে বলে, ‘তুই আওয়ামী লীগ করিস, বাঁচতে হলে ২০ লাখ টাকা দে’
নির্বাচনে কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে, তরুণেরা যা ভাবছেন
নিজের সিদ্ধান্তমতো সন্তান নিতে পারেন মাত্র ২৩% নারী
পুতিন বরখাস্ত করার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ মন্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’
স্বত্ব © ২০২৫ প্রথম আলো
prothomalo-bangla
কলাম
মতামত
ইসলামে পরোপকারের গুরুত্ব ও ফজিলত
শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
Published: 16 Oct 2020, 09:52
মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক হতে হলে পরোপকারী হতে হবে। একজন অন্যজনের বিপদে এগিয়ে আসা, পাশে দাঁড়ানো, সহমর্মী হওয়া, শুধু নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত না হয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করাই মনুষ্যত্ব।
পরোপকার মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের অলংকার। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাধা দেবে।’ (সুরা-৩ আলে-ইমরান, আয়াত: ১১০)। এ বিষয়ে বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি সদয় হও, তাহলে আসমানের মালিক আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (তিরমিজি: ১৮৪৭)।
মানুষের সদ্গুণাবলির অন্যতম হচ্ছে পরোপকার। একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া জীবন যাপন করা কঠিন। যখন কোনো সমাজে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা হ্রাস পায়, সে সমাজের মানুষ সব দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ে। সে সমাজে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, শান্তি বিলুপ্ত হয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা তিরোহিত হয়।
ইসলাম সহানুভূতির ধর্ম। পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতা ইসলামের অন্যতম বিষয়। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। তাই পরোপকারের চেতনায় কোনো শ্রেণিভেদ নেই। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, আত্মীয়-অনাত্মীয়, স্বজাতি-বিজাতি, মুসলিম-অমুসলিম এসব ব্যবধানের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামের শান্তি ও সৌহার্দ্যের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মিলেমিশে থাকে। তার মধ্যে ভালো কিছু নেই, যে মিলেমিশে থাকতে পারে না। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৫৭৮৭)।
পরোপকারী হতে হলে অনেক ধনসম্পদের মালিক হতে হবে এমন নয়। প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ অবস্থানে থেকে পরোপকারী হতে পারে। পরোপকার নির্দিষ্ট সীমারেখায় আবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে এবং শারীরিক, আর্থিক ও মানসিক কর্মকাণ্ডে এর পরিধি পরিব্যাপ্ত ও বিস্তৃত।
বিজ্ঞাপন
পরোপকার মানুষকে মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব মনীষী স্মরণীয়–বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন পরহিতৈষী। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম ওহিপ্রাপ্তির পর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে খাদিজা (রা.)-কে বললেন, ‘আমাকে কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দাও, আমি আমার জীবনের আশঙ্কা করছি।’ তখন খাদিজা (রা.) নবীজি (সা.)-কে অভয় দিয়ে বলেছিলেন, ‘আল্লাহ কখনোই আপনার অমঙ্গল করবেন না। কারণ, আপনি আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করেন, গরিব-দুঃখীর জন্য কাজ করেন, অসহায়-এতিমের ভার বহন করেন,
তাদের কল্যাণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।’ (বুখারি: ৪৫৭)।
পরোপকারে নিজেরও কল্যাণ সাধিত হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘অবশ্যই দান-সদকা মানুষের হায়াত বৃদ্ধি করে। অপমৃত্যু থেকে বাঁচায় এবং অহমিকা দূর করে।’ (আল-মুজামুল কাবীর: ১৩৫০৮)।
অনাথ-অসহায় ও অনাহারির কষ্টে সমব্যথী হতে আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে রোজা ফরজ করেছেন। নিঃস্ব ও অভাবীর অভাব মোচনে জাকাত ফরজ ও সাদাকুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন। দান-সদকা ও অন্যের জন্য খরচে উদ্বুদ্ধ করে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। আল–কোরআনে রয়েছে, ‘কে আছে যে আল্লাহকে কর্জে হাসানা উত্তম ঋণ দেবে, তাহলে তিনি তার জন্য একে বর্ধিত করে দেবেন এবং তার জন্য সম্মানজনক প্রতিদানও রয়েছে।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১১)।
বিজ্ঞাপন
কোরআন কারিমে রয়েছে, ‘আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে, এর বিনিময়ে।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ১১১)। ‘নিশ্চয়ই দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, যে ক্ষেত্রে তারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে তাদের প্রতিদান বর্ধিত করা হবে এবং তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক প্রতিদান।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১৮)।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি সমস্যাগুলোর একটি সমাধান করে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার আখিরাতের সংকটগুলোর একটি মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তাআলাও তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-গুণ গোপন করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ (মুসলিম: ২৬৯৯)।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব
smusmangonee@gmail.com
আরও পড়ুন
জাপায় এবার ‘ছাঁটাই রাজনীতি’, মহাসচিব বদলসহ ৭ দিনে ১১ নেতাকে অব্যাহতি
দল বেঁধে রাতে বাসায় ঢুকে বলে, ‘তুই আওয়ামী লীগ করিস, বাঁচতে হলে ২০ লাখ টাকা দে’
নির্বাচনে কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে, তরুণেরা যা ভাবছেন
নিজের সিদ্ধান্তমতো সন্তান নিতে পারেন মাত্র ২৩% নারী
পুতিন বরখাস্ত করার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ মন্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’
স্বত্ব © ২০২৫ প্রথম আলো