* স্বপ্নের সাথে তুলনা: মায়াকে প্রায়শই স্বপ্নের সাথে তুলনা করা হয়। যেমন স্বপ্নে আমরা বিভিন্ন জিনিস দেখি এবং সেগুলোকে বাস্তব বলে মনে করি, তেমনই জাগতিক অভিজ্ঞতাও মায়াময় হতে পারে। ঘুম ভাঙলে যেমন স্বপ্নের বাস্তবতা vanishing হয়ে যায়, তেমনই আত্মজ্ঞান লাভ করলে জগতের আপাত বাস্তবতাও বিলীন হয়ে যায়।
* নৃত্যশিল্পী ও নর্তকীর উপমা: মায়াকে কখনও কখনও একজন নৃত্যশিল্পী বা নর্তকীর সাথে তুলনা করা হয়, যিনি মঞ্চে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেন। এই জগৎ এবং এর সবকিছু সেই নর্তকীর বিভিন্ন রূপের মতো, যা ক্ষণস্থায়ী এবং পরিবর্তনশীল। আসল সত্তা সেই নর্তকী নিজে, তেমনি এই জগতের পেছনের অপরিবর্তনীয় সত্য হল ব্রহ্ম।
* জলের উপর বুদবুদের দৃষ্টান্ত: মায়াকে জলের উপর ক্ষণস্থায়ী বুদবুদের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। বুদবুদ যেমন জল থেকেই উৎপন্ন হয় এবং আবার জলেই মিলিয়ে যায়, তেমনই এই জগৎ ব্রহ্ম থেকেই উদ্ভূত হয়েছে এবং ব্রহ্মেই ফিরে যাবে। বুদবুদের নিজস্ব কোনো স্থায়ী সত্তা নেই, তেমনই জগতের আপাত স্বতন্ত্র অস্তিত্বও পরম সত্যের সাপেক্ষে ক্ষণস্থায়ী।
* রজ্জুতে সর্পভ্রম: অদ্বৈত বেদান্তের একটি বিখ্যাত উদাহরণ হল "রজ্জুতে সর্পভ্রম"। অন্ধকারে পড়ে থাকা একটি দড়িকে ভুল করে সাপ মনে করা হয়। এই ভ্রমের কারণ হল জ্ঞানের অভাব। তেমনই, অজ্ঞানতার কারণে আমরা এই ক্ষণস্থায়ী জগৎকে বাস্তব বলে মনে করি। জ্ঞান লাভ হলেই এই ভ্রম দূর হয় এবং পরম সত্যের উপলব্ধি হয়।
* তিনটি গুণ (সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ): হিন্দু দর্শনে মায়াকে তিনটি গুণের সমষ্টি হিসেবেও দেখা হয় – সত্ত্ব (বিশুদ্ধতা, জ্ঞান), রজঃ (কর্ম, আবেগ), এবং তমঃ (অন্ধকার, জড়তা)। এই তিনটি গুণের মিশ্রণেই জগতের বৈচিত্র্য এবং আমাদের অভিজ্ঞতার বিভিন্নতা সৃষ্টি হয়।