গভীর রাতে, যখন পুরো সিলেট শহর ঘুমে অচেতন, তখন আকাশটা কেমন শান্ত আর পরিষ্কার থাকে, তাই না? শহরের আলো দূরে আবছা দেখায়, আর তারাদের ঔজ্জ্বল্য যেন আরও বাড়ে। শীতল বাতাস গায়ে লাগলে একটা অন্যরকম শান্তি অনুভব হয়।
সিলেটের রাতের বেলাকার ব্যস্ততা তখন একেবারেই উধাও। ক্বীন ব্রিজের ওপর দিয়ে দু-একটা গাড়ি হয়তো ছুটে যায়, কিন্তু দিনের সেই চেনা ভিড় আর নেই। মনে হয় যেন পুরো শহরটাই একটা গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে।
সুরমা নদীর পাড়টাও তখন অন্যরকম রূপ নেয়। দিনের বেলায় যেখানে মানুষের আনাগোনা থাকে, রাতে সেখানে শুধু নদীর কলকল ধ্বনি শোনা যায়। চাঁদের আলো পড়লে নদীর জল চিকচিক করে, এক মনোরম দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
গভীর রাতে শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের নীরবতা এক বিশেষ আধ্যাত্মিক পরিবেশ তৈরি করে। দিনের বেলায় যেখানে কত মানুষের আনাগোনা, রাতে সেখানে এক শান্ত, স্নিগ্ধ ভাব বিরাজ করে।
সিলেটের আশেপাশে যেসব টিলা আর পাহাড় আছে, গভীর রাতে সেগুলো আরও রহস্যময় লাগে। অন্ধকারের আবরণে ঢাকা, শুধু ঝিঁঝি পোকার ডাক আর বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ। মনে হয় যেন কোনো প্রাচীন রহস্য লুকিয়ে আছে এই পাহাড়গুলোর বুকে।
গভীর রাতে চা বাগানের নীরবতাও অন্যরকম। দিনের বেলায় যেখানে শ্রমিকদের ব্যস্ততা থাকে, রাতে সেখানে শুধু গাছের পাতার মর্মরধ্বনি শোনা যায়। মনে হয় যেন প্রকৃতি নিজেই বিশ্রাম নিচ্ছে।
আসলে, গভীর রাত শুধু ঘুমের সময় নয়, এটা একটা অন্যরকম অনুভূতি আর উপলব্ধির সময়। বিশেষ করে এমন একটা সুন্দর শহরে, রাতের নীরবতা যেন শহরের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে।