গল্প: শূন্য থেকে অসিম
পর্ব ২: প্রথম সিঁড়ি
রাহুলের জীবন যেন নতুন রঙে রাঙাতে শুরু করল সেই রাতে। বইয়ের পাতায় পড়া জ্ঞান তাকে এক অদ্ভুত সাহস দিলো, যা আগে কখনো অনুভব করেনি। পরের দিন স্কুলে গিয়ে সে আরও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করল। ছুটির সময় অন্যদের খেলার পরিবর্তে বইয়ের দোকানে গিয়ে বইগুলো ঘাঁটতে লাগল।
একদিন, দোকানদার জিজ্ঞেস করল, “ছেলেটা, তোমার এত আগ্রহ কেন বইয়ের মধ্যে?”
রাহুল সরল হেসে বলল, “আমি শিখতে চাই, বড় কিছু করতে চাই। শূন্য থেকে শুরু করব।”
দোকানদার হাতের কাছে একটা ছোট্ট বই দিলো—“কম্পিউটার বেসিকস”। রাহুল খুশি হয়ে সেই বই নিয়ে বাড়ি ফিরল। কম্পিউটার নিয়ে কিছুই জানতো না, কিন্তু বইয়ের ভাষা তার মনে সুখকর আগুন জ্বালিয়ে দিলো।
ঘরে যন্ত্রপাতি ছিলো না, তাই সে পাশের ইন্টারনেট ক্যাফেতে গিয়ে বই পড়তে পড়তে কম্পিউটার শিখতে শুরু করল। ধীরে ধীরে বুঝতে পারল, কিভাবে কোড লেখা যায়, কিভাবে সমস্যার সমাধান করতে হয়। স্কুলের শিক্ষকরা অবাক হয়ে দেখল, রাহুলের মাঝে এক নতুন আগ্রহ জন্ম নিচ্ছে।
একদিন শহরের বড় লাইব্রেরির বিজ্ঞাপন দেখে রাহুল তার বাবা-মাকে বলল, “আমাকে লাইব্রেরি যেতে দিন। সেখানে আরও অনেক কিছু শিখতে পারব।”
বাবা বললেন, “তুমি যা চাও, আমি তোমাকে বাধা দিব না। কিন্তু নিজে যত্ন নিও।”
লাইব্রেরির প্রথম দিনটি রাহুলের জীবনের প্রথম বড় সিঁড়ি। সেখানে গিয়ে সে নানা রকম বইয়ের সমুদ্রে ডুবে গেল। প্রতিটি পাতা তাকে শূন্য থেকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
রাহুল জানতো, এই সিঁড়িগুলোই তাকে একদিন তার স্বপ্নের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। শূন্য থেকে আজকের ছোট্ট ছেলেটা আস্তে আস্তে অসীমের পথে হাঁটছে।
#sifat10