31 w ·Translate

২ বছর ফেসবুকে প্রেম করার পর, জোর করে ঠিকানা বের করে দেখা করতে গিয়ে শুনি, এই আইডির মেয়ে ৩ বছর আগেই মারা গিয়েছে।।


'Add friend' লিস্টে দুনিয়ার সব সুন্দরীর লিস্ট থাকে।।

ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট সেন্ড, প্রায় ৫০ জনকে করে ফেললাম।। দু *র্ভাগ্যের ব্যাপার কেউ রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করেনি।

প্রায় ৯ দিন পর দেখলাম, কেউ একজন রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করেছে।

ওরেহ, ভাই, সে এত্ত সুন্দর ছিলো, প্রোফাইল ফটোতেই চোখ ঝলসে যাচ্ছে আমার।

★ইনবক্স-

আমি -: প্রোফাইলে ফটো চেঞ্জ করে নিয়ো

-: আপনি চেঞ্জ করতে বলার কে?

-:বলতে অধিকার লাগবে?

-:অবশ্যই হ্যাঁ।

-: ১- মিনিট অপেক্ষা করো, অধিকার বানায় দিচ্ছি।

-: আচ্ছা, করলাম।

-: ১মিনিট শেষ, এবার চেঞ্জ করো।

-: মানে, অধিকার কিভাবে বানালেন?

-:এইযে আমার কথায় ১ মিনিট অপেক্ষা করলে, আমার কথা শুনেছো, অধিকার ছিলো বলেই।.....

এরপর ৫ মাস.......

মিস ইউর ভিডিও কল...
এরপর ২ বছর হয়ে গেল-

দিশাকে বললাম, মিট করবো।

দিশা রাজি হলো না, ২ বছরেও রাজি করাতে পারি নি।।

দিশা পছন্দ করতো না, ওর পরিচিতিদের সাথে কথা বলি।

ওর আইডি থেকে একজনের সাথে আমার অন্য আইডি দিয়ে কথা বলে, ওর পরিচিত ১ জনের ঠিকানা নিয়ে ওর বাসায় চলে এলাম।

অনেক খুজে দিশা কে পাচ্ছি না।

দিশা সব সময় বলতো, ও বিকালে এই গাছ টার নিচে বসে সময় কাটায়।

অদ্ভুত আজকে কেন আসছে না দিশা।

আমি দিশাকে মেসেজে বললাম, আমি ওর বাসার সামনে, ও আমাকে রিপ্লাই করছে না।

বিরক্ত হয়ে, রাগে দিশার বাসায় ঢোকার সিদ্ধান্ত নিলাম। বাসায় ঢুকে বললাম,

-:দিশা আছে?

-: (মধ্য বয়স্কা) দিশা মানে, কোন দিশা বাবা?

-: (চেহারা দেখেই চিনেছি, দিশার আম্মা উনি) আন্টি আপনার

মেয়ে দিশা, ও বাসায় নেই?

-: (উনি আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে) কি বলছো, দিশা

আরো ৩ বছর আগে মারা গেছে।

-:আমি হেসে দিলাম, আন্টি আপনি মজা করছেন, ওকে আপনি বলেন, আমি দেব এসেছি।

-:বাবা, আমি আমার মরা মেয়েকে নিয়ে মজা করবো কেন? তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে।

-:আন্টি এইযে দেখেন, দিশা কাল আমার সাথে কথা বলেছে।

আন্টি দিশার ভিডিও কলের ছবি দেখে অবাক। হ্যাঁ এটা তো দিশা,

আন্টি ফ্যামিলির সবাইকে ডাকাডাকি করে হাজির করলো।

আমি সব কিছু খুলে বললাম, আমি কলকাতায় থাকি, আর দিশা
দমদম ক্যান্টমেন্টে থাকে।

এমনকি আমি দিশার পাঠানো ভয়েজ রেকর্ডও সবাইকে শুনিয়েছি, সবাই চমকে উঠলো, হ্যা, এটা তো দিশার কণ্ঠ। কিন্তু কিভাবে।

দিশার ছোট ভাই আমাকে দিশার সমাধিস্থ স্থানের সামনে নিয়ে গিয়ে দেখালো।

দিশা সব সময় যে গাছের নিচে বসে আছে বলতো, সেই গাছের নিচেই দিশার সমাধিস্থল।

কিন্তু কিভাবে, আমি তো দিশার সাথে অডিও কল, ভিডিও কল সব ভাবেই কথা বলেছি, দিশা, দিশার মা, বাবা ছোট ভাই, যাদের কথা বলেছে, সবাই আছে, সব কিছুই সত্যি, শুধু দিশা ছাড়া।

আমি মানতে পারছিলাম না।

প্রায় ৩ দিন হয়ে গেলো, দিশাকে ফেইসবুকে মেসেজ করে যাচ্ছি, রিপ্লাই আসেনি। সিনও হয়নি।

দিশার মা অনেক বুঝিয়ে আমাকে কলকাতাতে পাঠাতে চাইলো।।

আমি ট্রেনে করে শিয়ালদহ চলে আসলাম আজ।।

স্বাভাবিক কোনো ভাবেই হতে পারছিনা, তাহলে দিশার আইডি থেকে মেসেজ কিভাবে আসলো।

ভাবতে ভাবতে আমি ক্লান্ত, কোনো সমাধান পাইনি।

দিশাকে ভুলতে দিশার একাউন্ট আনফ্রেন্ড করে দিয়েছি।

তারপর প্রায় ১ বছর কেটে গেলো।।

আমার গ্রাজুয়েশন শেষ হলো।

দিশার পর আর কারোর সাথে সম্পর্ক হয়নি।

সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলে-ভাবলাম, অস্ট্রেলিয়া থেকে হায়ার

এডুকেশন শেষ করে দেশে এসে বিয়ে করবো।

চলে এলাম অস্ট্রেলিয়ায়।
পড়ায় মনোযোগ দিয়েছি।

একদিন বিকেলে সিডনির লেক পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি, গান শুনছিলাম, সুন্দর বিকাল।

একজন মধ্যবয়স্ক মহিলার কণ্ঠে,

-:দিশা ওইদিকে যাস না, এদিকে আয়।

নাম শুনতেই চমকে দেখি, একটা মেয়ে আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।

অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, মেয়েটা তো আমার দিশার মতো দেখতে, যার সাথে ফেইসবুকে কথা হতো।

ভিডিও কলের সেই একই হাসি,

-: আমাকে একটু সাইড দিবেন, ছবি তুলবো।

ওর কন্ঠটাও একই।

কিন্তু কিভাবে, আবার সব কিছু ওলট পালট লাগছে।

এরপর মেয়েটার ব্যাপারে সব জানলাম-অনেক কষ্টে পরিচয়, কথা।

আমার পূর্বের কোনো কথা দিশাকে বলিনি।

তারপর মেলা মেশা, দিশা আমাকে পছন্দ করে। আজকে দিশা নিজেই প্রোপজ করেছে।

দিশার কাছে ফেইসবুক আইডি চেয়েছি অনেক বার, ও বলেছে, বাস্তবে পুরোনো দিনের মতো প্রেম করবে, চিঠি, দেখা করা, এই

সব, তাই আর জোর করিনি।

অনেক ঝড় ঝামেলা শেষে, দিশার আমার বিয়ে ঠিক হলো। বিয়েটাও করে ফেললাম।। আমাদের অনেক ভালো সম্পর্ক, দুইজন
অনেক সুখে আছি।

রাতে বাসায় ফিরেই, দিশার কোলে শুয়ে পড়লাম। দিশা ফেইসবুক চালাচ্ছিল।

আমাকে বললো, দেব তোমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছি, একসেপ্ট করো।

আরেহ আমার বউ আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছে।।

তাড়াতাড়ি

আমি আমার ফোন থেকে ফেসবুকে লগ ইন করতেই, আমার চোখ উলটে যাওয়ার অবস্থা, এটা তো দমদমে থাকা দিশার একাউন্ট থেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট।

,এটা আমার বউ দিশার একাউন্ট কিভাবে হয়।

যে প্রোফাইল ফটো দেখে, ফেসবুকে প্রেম হয়েছিলো দিশার সাথে একই প্রোফাইল ফটো আমার বউয়ের ফেইসবুকে প্রোফাইলে।

ভয়ে ভয়ে একসেপ্ট করলাম, এবার আর আমি কিছু ভাবতে পারছি না।

বাকি অংশ

#sifat10