পদগুলো পুরুষের জন্য তৈরি, তাই পদগুলোয় ‘পতি’র বাড়াবাড়ি। ভূপতি, রাষ্ট্রপতি, সভাপতি, দলপতি। পত্নীদের তো ঘরবন্দি রাখা হত এবং হয়, পত্নীদের তো শিক্ষিত হতে দেওয়া হত না এবং এখনও হয় না। এখন লিঙ্গ বৈষম্যের প্রকটতাকে একটু হালকা করার জন্য, সংরক্ষণ বা ওই জাতীয় কিছুর কারণে, দিব্যি লেখাপড়া শিখে ‘কানে কলম গুঁজে আপিস যেতে থাকা গিন্নিদের’ (নারীশিক্ষার বিরুদ্ধে বাংলার শিক্ষিত পুরুষদের অনেক ব্যঙ্গোক্তির একটি), হঠাৎ করে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় এমন এমন সব পদের সামনে, যে পদগুলোয় তাদের পা বাড়ানোর অধিকার নেই। প্রেসিডেন্ট পদে ‘আনটাচেবল’ হল, ‘মাইনরিটি মুসলিম’ হল, এখন ওদের সঙ্গে এক কাতারে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক, অন্য অর্থে ‘সর্বোৎকৃষ্ট আনটাচেবল’ আর মাইনরিটি অর্থাৎ নারীকে ওই পদে বসিয়ে দিলে ভারত নামক রাষ্ট্রটির উদারনীতি নিয়ে বিশ্বে নাম ফাটবে। রাষ্ট্রের ‘পতি’ হতে যাবেন একজন নারী। পতি তো পুরুষ, পুরুষের জন্য তৈরি করা পদটিতে কেন নারী আসীন হবেন? পুরুষের জন্য ‘পদ’ তৈরি করা হয়ে গেছে, এখন নারী সেই পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন বলে পদটির নাম বদলে যাবে, এ কথা না মানার লোক প্রচুর। এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী আছেন, ‘বাঘা বাঘা নারীবাদী’ও আছেন। আমার মতে, উঁচু পদগুলো অধিকার করার অধিকার যে কেবল পুরুষের নয়, তা যে নারীরও, সে কথা পদ তৈরি করার সময় কোনও পুরুষেরই মাথায় আসেনি, আসেনি বলে আজ তার প্রায়শ্চিত্য হোক। ‘পতি’ পদের অবলুপ্তি হোক, নয়তো নারী-পদ অর্থাৎ লিঙ্গ-নির্দিষ্ট পদ তৈরি হোক। সবচেয়ে ভালো নয় কি নারী পুরুষ উভয়ের জন্য পদ অর্থাৎ লিঙ্গ-নিরপেক্ষ পদ রচিত হওয়া? অনেকে সেটায় রাজি নন, পুরুষপদটিই যেমন আছে, তেমন রেখে দিতে চান, ‘তা নাহলে স্ট্যাম্প-প্যাড ইত্যাদি পাল্টাতে হবে, খুব ‘প্র্যাকটিক্যাল’ নয় নাকি ব্যাপারটা। পুরোনো জিনিস দিয়ে চালিয়ে নিলে ‘প্র্যাকটিক্যাল’ হয়। পুরুষের পদটা অ্যকসিডেন্টালি অধিকার করেছে নারী, এমন তো আর সচরাচর ঘটবে না, সুতরাং পদটি যে নামে আছে, সে নামেই থাকুক।’ ব্যয় সাপেক্ষ, বাড়তি ঝামেলা এসব যুক্তি দেখিয়ে পুরুষের নামেই পদটি বহাল থাকুক, তা পুরুষবাদী নারী পুরুষ সকলেরই মনের কথা।
আমি এটি মানি না। ‘ব্যয়’ এবং ‘বাড়তি ঝামেলা’ এই ক্ষেত্রে বহন করাটা অত্যন্ত জরুরি। অনেক অপ্রয়োজনীয় খাতে রাষ্ট্রের অর্থব্যয় হয়। এই অর্থব্যয়টি মানবতার স্বার্থে যুগান্তকারী সংস্কারের জন্য। আর, নতুন করে অফিসের কাগজপজ্ঞে পদের নাম পরিবর্তন করা এমন কিছু আহামরি খরচ নয় যে ভারত সরকার তা