বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: শফিউল ইসলামের উত্থান ও প্রভাব
জুন–জুলাই ২০২৫-এর দিকে, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল শ্রীলঙ্কার মাঠে তিন ফরম্যাটে (২টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে, ৩টি টি২০) বিশ্বমানের লড়াই চালাচ্ছে |
তবে সম্প্রতি সবার নজর কাড়ছে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে, যেখানে শফিউল ইসলাম আবারো তার সেরা ছন্দে ফিরে এসে বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবন যোগালো।
মাঠের গল্প: দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ
তারিখ ও স্থান
১৩ জুলাই ২০২৫, ডাম্বুল্লা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের ইনিংস
লিটন দাস ও হামিম হোসেন সামনের দিক থেকে শক্তিশালী শুরু করলেও সময়মতো বিপুল সংগ্রহের পথ উন্মুক্ত করলেন দুজনে। কেপটেন লিটন ৫০ বলের মধ্যে ৭৬ রান করেন, এবং হামিম ইন-উইন ছন্দে ৪৮ রানের ইনিংস উপস্থাপন করেন । তবে তাদের সংযুক্ত অবদান টিমকে ১৭৭/৭ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয় – যা শ্রীলঙ্কার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিং।
শ্রীলঙ্কার পেসে আউট
টার্গেট ১৭৮, শ্রীলঙ্কার শক্তিশালী ব্যাটিং একেবারে শুরুতেই বিপর্যয়ে পতিত হয়। প্রথম ৫.১ ওভারে চার উইকেট হারায় তারা, যেখানে কুসাল মেন্ডিস রানআউট, এবং শফিউল ইসলাম পেনাল্টিতে দুটি উইকেট শিকার করেন – কুসাল পেরেরা ও অভিষ্কা ফার্নান্ডোকে ফেলে । এই সময়ে শফিউল ছিলেন খুব নির্ভরযোগ্য: ৩ ওভারে ১২ রান দিয়ে ২ টি উইকেট
অতঃপর রিষাদ হোসেন (৩/১৮) মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মেহেদী–সাইফুদ্দিনও তাদের ভূমিকা যথা সময়ে পালন করেন, যার ফলে শ্রীলঙ্কাকে ১৫.২ ওভারে মাত্র ৯৪ রানের ভিতরে গুটিয়ে ফেলা হয় । ফলাফল: বাংলাদেশ ৮৩ রানে বড় জয় এনে দলে প্রাণ সঞ্চার করে সিরিজ ১–১ করে তুললো ।
শফিউল ইসলামের সূচনালগ্ন ও অর্জন
দীর্ঘ পথ
শফিউল ইসলাম তাঁর ফার্স্ট‑ক্লাস অভিষেক করেন ২০১৭–১৮ সিজনে রাজশাহী বিভাগ থেকে
Wikipedia
। ডান হাতের এই দ্রুতগতির পেসার আস্তে আস্তে দলে প্রতিষ্ঠিত হন, বিশেষভাবে ২০২৪ সালের লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে যোগ দিয়ে; যেখানে ক্যান্ডি ফ্যালকন্স প্রতিনিধিত্ব করেন ।
বিপুল পরের পটভূমি
লোকাল ডোমেস্টিক ক্রিকেটে – যেমন ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ – এগিয়ে থেকে শফিউল পেয়েছেন উল্লেখযোগ্য কাপ–১০–১৫ উইকেট, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্কেলে তার অবস্থানকে দৃঢ় করেছে ।
দ্বিতীয় টি২০তে তার ভূমিকার বিশ্লেষণ
শক্তিশালী শুরু: powerplay-এ শফিউল মেঞ্চিসহ দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকারে শ্রীলঙ্কাকে বিপদে ফেলার ক্ষেত্রে চমৎকার ভূমিকা নেন ।
অভিজ্ঞতা ও নিয়ন্ত্রণ: মাত্র ৩ ওভারে ১২ রান—এই পারফরম্যান্স খারাপ গতির দিনে অনেকসময় ম্যাচের গতি ঘুরিয়ে দেয়।
দলগত সক্রিয়তা: রিষাদ–মেহেদী–সাইফুদ্দিন–মাস্তুফিজুরদের সঙ্গে শফিউল তৈরি করেন এক জম্বো ‘বোলিং ইউনিট’, যা সিরিজে ড্র করতে সাহায্য করে।
মানসিক প্রভাব: টার্নিং পয়েন্টে পেসারদের প্রয়োগ দলের আস্থা বৃদ্ধি করে, যা ভবিষ্যতের ম্যাচে কাজে লাগতে পারে।
সিরিজের সামগ্রিক দৃষ্টিকোন
টেস্ট: শ্রীলঙ্কা ২ টেস্টে ১–০ এগিয়ে ।
ওয়ানডে: সিরিজে শ্রীলঙ্কার ২–১ জয় ।
টি২০: সিরিজ মূলত ডেসাইড ম্যাচে পৌঁছেছে, এবং শফিউল + রিষাদের শীর্ষ বোলিং ডিউয়েট বাংলাদেশের জন্য মুখ্য চালক। এটি আগামীর বিশ্ব কাপ প্রস্তুতির জন্য দারুণ সাফল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
শফিউল ইসলামের ভবিষ্যৎ
বিশ্ব ক্রিকেটে দ্রুত গতির পেসারদের সাফল্য নির্ভর করে ধারাবাহিকতা ও বড় ম্যাচে সফলতায়। শফিউল তার সময়–মতো উইকেট নিয়েক, নিয়ন্ত্রিত রানের টাকাতেই প্রমাণ করছেন নিজের গুরুত্ব। লঙ্কার বিপক্ষে তাঁর এই পারফরম্যান্স শুধুমাত্র একটি জয়ের উদযাপন নয়, বরং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে (যেমন টি২০ বিশ্বকাপ বা এশিয়া কাপ) বাংলাদেশের বোলিং আক্রসধারণের দৃঢ় লক্ষণ বলেও ধরে নেওয়া যায়।
সমালোচনা ও পরবর্তী চ্যালেঞ্জ
তবে শফিউল কোমর-মেরুদণ্ডের অগ্রগতি ও দৈহিক সুস্থিতির উপর আরো নিয়ন্ত্রণ গঠন প্রয়োজন। দ্রুতগতির পেসারদের জন্য ধারাবাহিকতা সৌন্দর্য হলেও পুনরায় ইনজুরির আশঙ্কা সবসময় থাকে। বোলিং আক্রমণের সার্বিক ভারসাম্য রক্ষায় ও শ্রীলঙ্কার মতো হার্ড পিচে নিয়মিত সফলতার জন্য শারীরিক ফিটনেস ও দক্ষতা নিশ্চিত রাখতে হবে তাঁকে।
সম্প্রদায় ও ফ্যান প্রতিক্রিয়া
এতে অনুভূত হয়েছে, বেশিরভাগ অনুরাগীদের কাছে শফিউলের পারফরম্যান্স প্রশংসার উপযুক্ত, যদিও কিছু মানুষ ধর্মঘটের মত বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
বিকল্প স্পর্শ
দলের সতেজতা ও আত্মবিশ্বাস নিশ্চিত করতে প্রধান নির্বাচকরা বেশ কিছু কৌশল গ্রহণ করেছেন:
টিম রোটেশন: প্রথম টি২০য়ের পর Taskin Ahmed–Mustafizur Rahman অপশন পরিবর্তন
মাশরুফ–নিয়মানের জায়গায় মুক্তচিন্তা: তাজা পেস ট্রায়ো প্রয়োগ শফিউল, মাস্তুফিজুর, সাইফুদ্দিনের মাধ্যমে স্পিনারদের সাপোর্ট।
উপসংহার
দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে শফিউল ইসলাম তাঁর দক্ষতা ও মানসিক বলিষ্ঠতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি বাংলাদেশের আগামীর পরিকল্পনার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। দুই উইকেট, সীমিত রান খরচ এবং দলীয় মানসিকতায় তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।
গাণিতিক পদ্ধতিতে বললে, ‘ম্যাচ উইনার' হিসেবে তাঁকে মূল্যায়ন করলে খুব কম বল বলা যাবে; বরং একাধিক দলের ইমার্জিং স্টার হিসেবেও স্বীকৃত। ধারাবাহিকতা ও পরিশ্রমের মিশ্রণে শফিউল বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের বড় জয় এনে দিতে পারে।
এবার বাকি ম্যাচগুলোও দেখে নেওয়া যা