**গল্পের নাম: শেষ শ্রাবণের দিন**
আজ শ্রাবণের শেষ দিন। আকাশ ভরে আছে ঘন মেঘে, মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি। গ্রামের মেঠোপথে কাদা জমে আছে, পায়ে হেঁটে চলা কষ্টকর। তবে আজকের দিনের সৌন্দর্য ঠিক আলাদা। মেঘ, বৃষ্টি আর বাতাস মিলেমিশে যেন এক অন্য রকম আবেশ তৈরি করেছে।
নির্বাচ, গ্রামের এক সাধারণ ছেলে। প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করে। নিজের ছোট্ট একটা সংসার—মা, স্ত্রী আর ছোট ছেলেটা। আজ স্কুল বন্ধ, তাই সে বসে আছে পুকুর পাড়ে। চারদিকে নিস্তব্ধতা, শুধু পোকা-মাকড়ের শব্দ, মাঝে মাঝে ব্যাঙের ডাক।
হঠাৎ করে তার পাশে এসে বসল শীলা—তার পুরনো স্কুলজীবনের বন্ধু। অনেক বছর পর হঠাৎ দেখা। শহর থেকে এসেছে ছুটি কাটাতে। চোখে মুখে ক্লান্তি, কিন্তু এক ধরনের প্রশান্তিও আছে। দু’জন কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে। তারপর শুরু হয় কথোপকথন—পুরনো স্মৃতি, স্কুলের দিন, পরীক্ষার ভয়, মাঠে দৌড়, বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া খাতা—সব উঠে আসে।
নির্বাচ বুঝতে পারে, শীলার চোখে এক রকম শূন্যতা। জিজ্ঞেস করতেই বলে, “সবকিছু তো আছে—চাকরি, গাড়ি, টাকা, বড় ফ্ল্যাট—but হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে। জানো, এই গ্রামের একটা মাটির ঘ্রাণ আজও মন ছুঁয়ে যায়।”
নির্বাচ কিছু বলে না। শুধু মুচকি হেসে বলে, “আমরা তো এখনো সেই মাটির সঙ্গেই আছি।” শীলা বলে, “ভালই করেছো। সব কিছু পেয়ে অনেক সময় কিছুই পাওয়া হয় না।”
বৃষ্টি একটু বেড়ে যায়। শীলা উঠে দাঁড়ায়, বলে, “চললাম। আবার দেখা হবে হয়তো।” নির্বাচ কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকে, তারপর বলে, “এই পথটা ঠিক থাকবে, যেদিন খুশি চলে এসো।”
শীলা হেঁটে চলে যায় কাদামাখা পথ দিয়ে। নির্বাচ বসে থাকে, পেছনে শ্রাবণের শেষ বৃষ্টিধারা। আজও এই গ্রামের বৃষ্টি শুধু ভেজায় না, মুছেও দেয় কিছু পুরনো অসমাপ্ত গল্প।
hasan12
Kommentar löschen
Diesen Kommentar wirklich löschen ?
Murad1234
Kommentar löschen
Diesen Kommentar wirklich löschen ?