7 m
##একটি পুরোনো ঘড়ির আত্মকথা......
আমি একটি ঘড়ি। হ্যাঁ, সময় দেখানোর সেই যন্ত্র, তবে আমি যন্ত্র নই—আমি ইতিহাস। আমার জন্ম হয়েছিল ১৯৬৫ সালে, ঢাকার এক প্রখ্যাত ঘড়ির দোকানে। কাঠের খোলসে মোড়া, ঝকঝকে কাঁচ, আর লম্বা দুলন্ত এক পেন্ডুলাম ছিল আমার অহংকার।
প্রথম যে বাড়িতে গিয়েছিলাম, সে বাড়ির কর্তা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। তিনি আমাকে রাখতেন ঘরের মাঝখানে—যেখানে সবাই আমাকে দেখে সময় বুঝতো, কেউ কেউ হয়তো জীবনও মেপে নিতো। শিশুরা আমার ঘণ্টাধ্বনিতে বুঝতো কখন পড়তে বসতে হবে। বউমা রান্না শেষ করতেন আমার টিকটিক শব্দে। আমি শুধু সময় দিতাম না, আমি ছন্দ দিতাম সেই বাড়ির জীবনযাত্রায়।
কিন্তু সময় কারো জন্য দাঁড়ায় না। আমার কাঠে ফাটল ধরলো, পেন্ডুলাম ঝিমিয়ে পড়লো। নতুন ডিজিটাল ঘড়ির ভিড়ে আমি হয়ে উঠলাম অবহেলিত। একদিন আমাকে সরিয়ে রাখা হলো ঘরের এক কোণায়। আর এখন, আমি এক পুরোনো ট্রাঙ্কে শুয়ে আছি—চুপচাপ। মাঝে মাঝে কেউ ঝেড়ে দেখে, ভাবে, “ফেলে দেবো?” কিন্তু না, স্মৃতির ভারে আমিও রয়ে যাই।
আমি হয়তো সময় দেখাই না আর, কিন্তু আমি এক সময়ের সাক্ষী। আমি কাঁপা কাঁপা হাতে লেখার চিঠির সময় দেখেছি, প্রথম টেলিভিশন আসার মুহূর্ত দেখেছি, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর আমার কাঁপা কাঁপা টিকটিক শব্দে শান্তি ফিরে আসতে দেখেছি।
আমি একটি পুরোনো ঘড়ি। আমি নীরব, কিন্তু আমার বুকের মধ্যে এখনো বেজে চলে এক অনন্ত সময়ের গান।
##rashid#
Read Less
tamimahmod123
حذف نظر
آیا مطمئن هستید که می خواهید این نظر را حذف کنید؟