আমার জীবন কাহিনী
আমি, মোঃআব্দুল আওয়াল। জন্ম৩০জুন১৯৮৬.রোজ সোমবার।
আমার দাদার আট সন্তান চার ছেলে চার মেয়ে। আমি বাবার একমাত্র সন্তান।
আমার বাবা ছিলেন সকলের মধ্যে দ্বিতিয় সন্তান,ভাইদের মধ্যে প্রথম আমার বাবা একজন কৃষক মাঠে খেটে খাওয়া একজন মানুষ কৃষিকাজ করে আমাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।
পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি থাকার কারনে অতি কষ্টের মধ্যে দিন কাটত।ফ্যামিলি ট্যুর প্যাকেজ
আমার বাবা যেহেতু ভাইদের মধ্যে বড় সেহেতু দায়িত্ব টা তারই কাঁধে।
১৯৭১সলে মহাপ্লাবনের পর হঠাৎ করে অনেক মানুষের প্যরালাইসিস রোগ দেখাদেয় তার সঙ্গে আমার বাবার ও প্যরালাইসিস হয়।তখন থেকে বাবা স্বভাবিকভাবে হাটা, চলাফেরা করতে পরতেন না।
আমি বাবার একমাত্র সন্তান, বাবা তার প্রনের চেয়ে ভালো বাসতেন কারন বাবার বিয়ের চার বছর পরে নাকি আমার জন্ম হয়।
বাবার অস্বুস্থতাঃ
""""""""""""""""""""""
আমি তখন দশম শ্রেনির শেষভাগের ছাত্র হঠাৎ আমার বাবার পেট ব্যথাশুরু হয়। দ্রুত বাবাকে নিয়ে হাসপতালে যাই পরিক্ষা নিরিক্ষা করে ডাক্তার সাহেব বললেন আপনার বাবার লিভার সিরোসিস হয়েছে।
তারপর আমি তৎক্ষনাত বাবাকে নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে যাই।
সেখানে বাবার চিকিৎসা চলতে থাকে।
সপ্তাহ খানেক চিকিৎসা দেওয়ার পর বাবার অবস্থার কিছু টা উন্নতি হওয়ার কারনে বাবাকে নিয়ে আমরা বাড়ি ফিরে আসি।
২০০২সাল,এরমাঝে আমার এস,এস,সি পরিক্ষা আরম্ভ হয়।
তারপর হঠাৎ বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিয়ে আমরা পূনরায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে বাবার চিকিৎসা চলতে থাকে।
আমি সকালেএস,এস,সি পরীক্ষা দিয়ে বিকেলে হাসপাতালে বাবার কাছে গিয়ে ওষধ সহ অন্যান্ন প্রয়োজনিয় জিনিস পত্র কিনে দিয়ে রাত্রে আবার বাড়ি ফিরে আসতাম।সেখানে সার্বক্ষনিক বাবাকে দেখার জন্য ছোট ফুফিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
হাসপাতালের সকল অন্যান্ন দায়িত্ব পালন শেষ করে আমি রাত্রে বাড়িতে ফিরে আসতাম।
বাড়িতে এসেএকটু পড়ার পর ঘুমিয়ে পড়তাম কারন সারাদিন জার্নি করার পর শরীর ক্লান্ত হয়ে চোখে ঘুম চলে আসে।
এভাবে প্রতিটিদিন রাত কাটতে থাকে।এভাবে আমার সকল পরীক্ষা শেষ হলো।
বাবার শারীরিক অবস্থা ততদিনে আরও খারাপ হতে থাকে। এর মধ্যে প্রায় একমাস পার হয়ে গেছে টাকা পয়সা শেষ।
এখন কি করে চলবো,সংসার কিভাবে চলবে আর বাবার চিকিৎসাই বা কিভাবে করবো দুশ্চিন্তায় মাথায় কাজ করছিল না।আর কোন উপায়ান্ত না দেখে মায়ের সাথে পরামর্শ করে একটি জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই।
কারন জমির চেয়ে বাবার গুরুত্ব আমার কাছ অনেক বেশি।
জমি বিক্রি করতে কয়েক দিন সময় লেগে গিয়েছিল সে সময় একবেলা খেয়ে না খেয়ে দিন পার হচ্ছিল। তখন আমার পাশে কাউকে পায়নি তখন বুঝেছিলাম বিপদে পড়লে কেহ এগিয়ে আসে না।
যাই হোক জমি বিক্রি করে টাকা নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে আবার বাবার পাশে দাড়ালাম,বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল বাবা তোর পরীক্ষা কেমন হয়েছে, পাশ করবি তো?আমি বললাম হ্যা বাবা পাশ করব ইনশাআল্লাহ ।বাবা বললএত কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়ে কি পাশ করা যায় তারপর ও আমি দোয়া করি আল্লাহ তোর মঙ্গল করুক।আমি চাইনি কখনো বাবার মনোবল ভেঙ্গে যাক।
তারপর থেকে আমি হাসপাতালে বাবাকে সময় দিতে থাকি।
কয়েক দিন পর বাবার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে ডাঃতাকে রিলিজ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়েদেন।
বাড়িতে এসে বাবাকে অনেক স্বুস্থ মনে হচ্ছিল এভাবে তিন-চার দিন ভালই ছিল।দেখ মনে হয় যেন আমার বাবা সুস্ব হয়ে গেছেন।আমার মনটা খুশিতে ভরে উঠে।
আমি বাবাকে বলি বাবা তুমি সুস্থ হয়ে গেছ আর ভয় নেই।আমার কথা শুনে বাবা একটা মুচকি হাসি দেয়, বাবার সেই হাসি দেখে খুশিতে আমার প্রানটা ভরে যায়।
বাবার সেই হাঁসি টাই যে জীবনের শেষ হাঁসি আমি এটা কখনো ভাবতে পারিনি।