কাঠাল চোরের কাণ্ড
গ্রামের নাম বাহাদুরপুর। আর কাঠাল গাছের রাজা হলেন বজলু চাচা। বিশাল গাছ, বছরে দেড়-দুইশো কাঠাল দেয়। তবে এই গাছের একটা রহস্য আছে—যে হাত দেয়, সে ধরা পড়ে!
পাঁচ বছর ধরে গাছ থেকে যে কাঠাল চুরি করতে গেছে, সবারই কেমন করে যেন থানা-পুলিশে পড়ে, বা বাড়িতে ধরা পড়ে যায়। কেউ কেউ বলে, গাছে “জিন” আছে!
এবার গ্রীষ্মে হঠাৎ দেখা গেল, প্রতিদিন ভোরে একটা করে আধা-কাটা কাঠাল পড়ে থাকে গাছের নিচে। কেউ খায় না, কেউ নেয় না। সবাই ভয় পায়। গ্রামের মুরুব্বিরা বলল, “এইবার বড় জিন ক্ষেপেছে!”
চাচা হুকুম দিলেন, গাছ পাহারা দেওয়া হবে। মুরগির খাঁচার মতো করে খুঁটির ওপরে মাচা বানিয়ে তিনজন তরুণ পাহারা শুরু করল। প্রথম রাত গেল চুপচাপ। দ্বিতীয় রাতেও কিছু না। তৃতীয় রাতে—হঠাৎ মাচা দুলে উঠল!
পেছন থেকে “ঢপ!” একটা শব্দ। সবাই টর্চ মারল—আরেক কাঠাল পড়ে আছে, পাশে একটা পেটির ছায়া!
ধরা পড়ল মন্টু, গ্রামের সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলে পরিচিত এক তরুণ।
চাচা রাগে কাঁপছেন, “তুই! তুই কেন রে?”
মন্টু মাথা চুলকে বলল, “আসল কথা শুনেন চাচা। আমি চুরি করতাম না। আমি পরীক্ষা করতাম—এই গাছে জিন আছে কি না!”
সবাই হাঁ করে তাকিয়ে।
মন্টু হাসে, “প্রথম কাঠাল আমি কাটছিলাম খেতে। পরে শুনি জিন আছে! ভয় পাইলাম, তাই ভাবলাম, নিয়মিত আধা কাঠাল কাটি, দেখি ধরা পড়ে কি না। দেখা গেল, এবারেই ধরা পড়লাম!”
চাচা হেসে ফেললেন। বললেন, “তোরে শাস্তি দেওয়া লাগবে না—গল্পই তো বানাইছিস!”
সেই থেকে গাছের নাম হয়ে গেল—“গল্প-কাঠাল গাছ”। আর মন্টু? সে এখন নিজেই “গল্পওয়ালা মন্টু” নামে পরিচিত।
#sifat10