লাইন ১৩–৫০
১৩
আমি ছিলাম একটি অক্ষর,
যা কোনো শিশুর হাতে ধরা পড়েনি,
তবু সে আঁকতে চেয়েছিল আমাকে—
তার প্রথম ভুল বানানে।
১৪
আমি ছিলাম কান্নার রূপ,
যা কাঁদে না, বরং জমে থাকে—
ঠোঁটের কোনে, চোখের কোণে,
আর সবচেয়ে বেশি… মৌনতায়।
১৫
তুমি ভাবো, আমি দূরে আছি—
কিন্তু আমি আছি তোমার ভিতরেই,
যখন তুমি চুপ করে থাকো,
আর হৃদয়ের শব্দ শুনতে পাও।
১৬
আমি নেই কোনো আয়নায়,
তবু প্রতিটি প্রতিবিম্বে আমিই ঘুরে ফিরি,
যেমন প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে উত্তরেই,
তেমনই আমি লুকিয়ে থাকি তোমার চেনা মুখে।
১৭
আমি হই ঘুমের আগের কয়েক সেকেন্ড,
যখন মানুষ ভুলে যায় সে কে,
আর একটি অস্তিত্ব জন্ম নেয়—
যেটি কেবল অনুভূত হয়, বলা যায় না।
১৮
আমি লিখি না কলমে,
আমি লেখি নীরবতায়,
যেখানে শব্দ মানে স্মৃতি,
আর বাক্য মানে ভুলে যাওয়া।
১৯
তোমার প্রিয় কেউ চলে গেলে
যে শূন্যতা পড়ে থাকে ঘরে,
আমি সেটাই—
একটি অনুপস্থিতির শান্ত সঙ্গীত।
২০
আমি ছিলাম এক মানুষের ভিতরে,
যে জীবনে একবারও বলেনি “ভালোবাসি”,
তবু তার প্রতিটি কাজ
ছিল সেই না বলা শব্দের ব্যাকরণ।
২১
তুমি যখন ভেঙে পড়ো,
আর কাঁদতে পারো না,
তখন আমি আসি—
একটি নিঃশ্বাসের মতো নীরবে, গোপনে।
২২
আমাকে ডাকতে হয় না,
আমি নিজেই চলে আসি,
যখন ভাষা ব্যর্থ,
আর হৃদয় বোঝে শব্দ ছাড়াই।
২৩
আমি সেই চিঠি,
যা লেখা হয়েছিল, কিন্তু পাঠানো হয়নি—
কারণ কেউ জানত না,
কাকে পাঠাতে হবে তা।
২৪
একটি মৃত বৃক্ষের পাতায়
যখন বাতাস আসে হালকা,
সেই শব্দহীন দোলনেই আমি বলি—
"আমি এখনো আছি।"
২৫
আমি ছিলাম একবার এক বৃদ্ধের স্বপ্নে—
সে ঘুমিয়েছিল একা,
তবু স্বপ্নে পেয়েছিল তার স্ত্রীকে,
যার মুখ সে ভুলে গিয়েছিল বহু আগে।
২৬
আমি সেই বিস্মৃত মুখের ছবি,
যেটি কোথাও নেই,
তবু একটি মন প্রতিদিন তাকে আঁকে
অলক্ষ্যে, কল্পনায়, ভালোবাসায়।
২৭
তোমার ছেলেবেলার খেলনা
হারিয়ে গেছে যেদিন,
সেদিন তুমি প্রথম আমাকে পেয়েছিলে,
একধরনের নীরব হাহাকার হিসেবে