উহুদের যু*দ্ধে মুসলমানদের একটি ভুলের জন্য পুরো মুজাহিদ বাহিনী ক্ষতির সম্মুখীন হলো। কাফেররা সুযোগ পেয়ে একের পর এক আ*ক্রমণ করে মুসলিম শিবিরকে নাস্তানাবুদ করে ফেলতে শুরু করে।
এসবের ফলে যখন পরিস্থিতি মুসলমানদের প্রতিকূলে চলে গেলো, তখন নবী করিম (সাঃ) অরক্ষিত হয়ে পড়লেন। চারিদিক থেকে শত্রুরা তাকে ঘিরে ফেল্লো। সেই সময় আনসারদের এগারো জন ও মুহাজিরদের মধ্যে তালহা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে দৃঢ় ভাবে অবস্থান নেন। শত্রুপক্ষের একের পর এক আ*ক্রমণ প্রতিহত করে চলেন তাঁরা।
কিন্তু একটা সময় অবস্থা আরো বেগতিক হয়ে পড়ে। নবী করিম (সাঃ) এর চারপাশে অবস্থান করা এগারোজন আনসার সদস্য একে একে শা*হাদাত বরণ করেন। কা*ফেরদে আ*ঘাত তীব্র মাত্রা ধারণ করে। নবী করিম (সাঃ) এর পবিত্র দাত মোবারক শহীদ হয়ে যায়। তার চেহারা থেকে ফিনকি দিয়ে র*ক্ত বেরুতে থাকে।
এমন ঘোর সংকট কালে নবী (সা এর সাথে কেবল হযরত তালহা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ছিলেন। শ*ত্রুপক্ষ বারবার আ*ক্রমণ করতে থকলেও তিনি একা তিন তিনবার শ*ত্রুপক্ষকে বাধা দিয়ে নবী (সা- কে উহুদ পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে আসতে সক্ষম হন এবং শ*ত্রুমুক্ত করেন।
এই অবস্থা দেখে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) দৌড়ে এসে দেখেন তালহা (রাঃ) এর গায়ে ৭০ থেকে ৭৯ টি আ*ঘাতের চিহ্ন। তার এক হাতের কবজি নেই। অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। তার শরীরে যে আ*ঘাত ছিলো তা একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে যান।
এই ঘটনার পর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা হযরত তালহা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে জীবন্ত শহীদ বলে আখ্যা দেন। হযরত তালহা বিন উবায়দুল্লাহ আত তাইমি (রাঃ) এর সম্পর্কে নবী করিম (সা: বলেন- "যদি কেউ প্রকৃতপক্ষে শাহাদাতপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে দেখে আনন্দিত ও তার চক্ষুদ্বয়ককে শীতল করতে চায়, তাহলে সে যেন তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রাঃ) কে দেখে।" এই হাদিসটি রয়েছে তিরমিযী শরীফের ৩৭৪০ নাম্বারে।
শুধু তাই নয়, আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর সামনে এরপর যখনই উহুদের যুদ্ধের প্রসঙ্গ আসতো, তখনি তিনি বলতেন- 'উহুদ যুদ্ধের সারাটা দিন ছিলো তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রাঃ) এর'।
আহ! কত ত্যাগ স্বীকার করেছেন সাহাবারা ইসলামের জন্য। আল্লাহ এবং তার রাসুলের জন্য তাদের নিজের জীবন, জান-মাল সব কিছু বিলিয়ে দিতেও একটু ভাবেননি। অথচ আমাদের কী হলো? আমরা আজ এতো ব্যস্ত হয়ে পড়লাম যে আমাদের রীতিমত পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ পড়ার সময় হয়না। ঘরের এক কোণায় পড়ে আছে ক্বোরআন শরীফ, ধুলো জমে যাচ্ছে তার উপর। অথচ আমাদের সেটা একবার হাতে নিয়ে দেখার সময় হয়না। এতই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি আমরা এই দুনিয়ায়!
একবার ভাবুন কী নিয়ে দাঁড়াবো রবের সামনে? (ইয়া আল্লাহ)