#য়।তার প্রতি ভরসা জমে।
বিশাল আকাশ কুচকুচে ধূসর কালো আঁধারে তলিয়ে আছে।এটাই তার মহত্ত্ব।সকল প্রজাতির প্রাণী অথবা সারাদিন কর্ম ব্যাস্ত অথচ ক্লান্ত মানব দেহ টেনে টুনে বালিশে মাথা এলিয়ে যন্ত্রণা নিবারণ করার নিঃস্বার্থ সুযোগ দেয় এই অন্ধকার।তারাদের আজ দেখা নেই। মেঘের দেয়াল ভেঙে দুনিয়ায় উঁকি দিতে তারা অপারগ।
বিছানায় হাঁটু জড়িয়ে বসে জানালা দিয়ে একমনে আকাশ পানে চেয়ে আছে লামহা।ক্ষণে ক্ষণে লজ্জায় চোখ বুজে নিচ্ছে বাহুতে মুখ লুকাচ্ছে। দু'পাশের গালে যেন আবিরের মেলা বসেছে।বার বার চোখের তারায় ভেসে আসছে আদিবের দুষ্টুমাখা মুখশ্রী।শায়নের পর এই কারো চেহারা মনে করে তার হৃদয় আন্দোলিত হচ্ছে। অদৃশ্য অনুভূতিতে অস্থির অস্থির লাগছে ভেতরটা।
সকালে আদিব তাকে কোলে নেয়ার কথা শুধু মুখে বলেনি; কাজেও করে দেখিয়েছে। রমণী যখন ক্ষিপ্র মেজাজে জেদ ধরে বসেছিল -কিছুতেই লোকটার সাথে যাবে না।বুকে হাত বেঁধে একরোখা নিষ্ঠুরীণির ন্যায় শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আদিব জন সম্মুখে হুট করে ঝটকায় কোলে তুলে নেয় তাকে। সে ছিল তখন স্তব্ধ। এমন কিছু ঘটে যাবে কল্পনাতীত ছিল। হুঁশ ফিরতেই গলা জড়িয়ে আশপাশে তাকায় লামহা। পথিকেরা যে যার কর্মে ব্যাস্ত। কেবল হাতে গুনা ক'জোড়া চাহনি কোণা চোখে একপল দেখে ফিরিয়ে নিয়েছে দৃষ্টি।নামিয়ে দিতে কতোই না ছুটাছুটি করেছিল সে। কিন্তু হাল ছাড়েনি আদিব!অথচ? গাড়ির ডোর খোলে ধফ করে ছুঁড়ে ফেলেছিল ফ্রন্ট সিটে। ভাগ্যিস তুলতুলে স্থানে পড়েছে বিধায় ব্যাথা লাগেনি।
শুধু এটুকুই না। লাঞ্চের সময় ফের হসপিটালে এসে হাজির।মাইশার সাথে মিলে তাকে সঙ্গে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকলো। জোরপূর্বক নিজের হাতে খাইয়ে দিল। ইশশ্ কী লজ্জাজনক ব্যাপার!
-“ আমি যদি খুব ভুল না বলে থাকি —তুই কী লজ্জা পাচ্ছিস!
মাইশার আগমনে নড়েচড়ে গম্ভীর হওয়ার চেষ্টা করে তার দিকে তাকালো। তেঁতুল চাটনির বাটিখানা দু'জনের মধ্যবর্তী স্থানে রেখে দুষ্টু ইঙ্গিত দিয়ে ভ্রু নাচালো মাইশা!
-“ জিজুর কথা মনে করে লজ্জা পচ্ছিলিস , না?যায় বলিস,ব্রো কিন্তু রোম্যান্টিক আছে!
ঘাড় হেলিয়ে চাইলো লামহা।সেকেন্ড কয়েক নিশ্চুপ চেয়ে হাসলো মৃদু মন্দ।বলল,
-“ নারে!আমি জিজুর কথা মনে করে মোটেও লজ্জা পাচ্ছিলাম না!একটুও না!ডক্টর তাওসিফকে যখন একটা মেয়ে এসে আমাদের সামনে এক্সাইটেড হয়ে জড়িয়ে ধরলো তারপর অস্থির কন্ঠে বললো -- কংগ্রেট্স ডক্টর তাওসিফ!আপনি বাবা হতে যাচ্ছেন আর আমি মা!আ..আমি ভীষণ এক্সাইটেড!ক..কী করবো না করবো সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। প্লিজ বাড়ি চলো! অনেক কিছু বলার আছে তোমায়।আমি তো তখনকার দৃশ্য মনে করে লজ্জা পচ্ছিলাম!
মেয়েটা যেভাবে উত্তেজিত কন্ঠে তাওসিফের উদ্দেশ্যে বলেছিল?ঠিক সেভাবে অঙ্গি ভঙ্গি করে বলার চেষ্টা করছিলো লামহা! মূহুর্তেই নিভে এলো মাইশার মুখশ্রী।লামহার কাঁধে আলতো কিল দিয়ে হতাশার সুরে আওড়ালো,
-“ কাঁটা ঘায়ে লবন ছিটা দিচ্ছিস! পাঁচ নম্বরের মতো কাউকে ট্রু লাভ করার মনস্থির করেছিলাম! শালার এটাও বিবাহিত হওয়া লাগলো!
-“ সামনে বাবাও হবে!
হুঁ হুঁ হেসে দিল লমহা!মাইশা হঠাৎ তাকালো তার দিকে।সব ভুলে গেল কিছু পলের জন্য।কতো দিন পর এভাবে মনখুলে হাসছে মেয়েটা!সেই যে লুবনার মৃ/ত্যুর আগে হেসেছিল। এরপর আর কই?হাসিই যেন ফুরিয়ে গেছিলো তার।যা ছিল সব যেন জোরপূর্বক!
মুচকি হেসে লামহার গালে হাত রেখে বলে উঠলো মাইশা,
-“ ছয় নম্বরে যাকে পছন্দ হবে,সে-ই হবে আমার রিয়েল লাভার!দেখে নিস!
——
-“ শুনলাম তুমি নাকি বই কেটে খেয়ে ফেলেছো?
রাতের খাবার সেরেছে মাত্রই। পরপরই শায়ন বেরিয়ে গেছে হসপিটালের জন্য।একটু আগে বাকিরাও টেবিল ছেড়ে যে যার রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়িয়েছে। রান্নাঘরে শুধু দুই শাশুড়ি আছেন। ছোট মায়ের পেট ব্যাথা উঠেছে অপ্রত্যাশিত ভাবে।তার জন্য প্লেটে খাবার সাজিয়ে নিয়ে গেছে স্মিতা। স্নিগ্ধা ডাইনিংয়ে গ্লাসে পানি ঢালছিল, আকম্মাৎ পেছন থেকে আর্যার কথা শুনে ঘুরে দ