"শেষ ট্রেনটা চলে গেছে"
রাত সাড়ে বারোটা। শহরের শেষ লোকাল ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে গেছে।
স্টেশনের বেঞ্চে বসে আছে এক যুবক, নাম সায়ন। পরনে মলিন কোট, হাতে একটা পুরনো ডায়েরি। আশেপাশে কেউ নেই, কেবল বাতির তলে ঘুরে বেড়ানো পোকা আর হঠাৎ হঠাৎ কুয়াশার ঢেউ।
হঠাৎ করে একটা ঘোষণা বাজে না—বরং শোনা যায় এক কণ্ঠস্বর, যেন বাতাসেই ভেসে আসে—
"শেষ ট্রেনটা কখনো কাউকে ফেলে যায় না। শুধু দেখে, কে প্রস্তুত।"
সায়ন চমকে ওঠে। সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক মহিলা—দীর্ঘ চুল, ম্লান হাসি, চোখে গভীর ক্লান্তি। নাম ইরা।
সে বলে,
“তুমি কি জানো, এই স্টেশনে যারা থাকে—তারা সবাই কিছু না কিছু ফেলে এসেছে।”
সায়ন ভাবে, সে তো ফেলে এসেছে সব—
মা-বাবার মৃত্যুর পর কোনো সম্পর্ক আর টেকেনি।
যে মেয়েটিকে ভালোবেসেছিল, সে আর অপেক্ষা করেনি।
যে কবিতাগুলো সে লিখেছিল, সেগুলো কেউ পড়েনি।
সে বলে, “আমি কোথাও যাবো না।”
ইরা চুপ করে বসে। তারপর বলে,
“এই স্টেশনটা দুনিয়ার শেষ স্টেশন না। এটা সময় আর স্মৃতির মাঝখানে আটকে থাকা জায়গা। তুমি চাইলে থাকতে পারো, কিন্তু জীবন আর অপেক্ষা করবে না।”
সায়ন ধীরে ধীরে ডায়েরির পাতা খুলে—লেখা নেই কিছুতেই। সব মুছে গেছে, কালি উঠে গেছে পাতাগুলো থেকে।
তখন ইরা তার হাতে দেয় একটা টিকিট—
টিকিটে লেখা: