বছরের মাঝামাঝি, সেই বছরটার মাঝামাঝি, ইহুদিরা সাভার মাঝখানে মূল মহল্লায় বোমা ফেলে, হানা দেয় আমাদের গাজায়, বোমা আর আগুন ছোড়া নিয়ে। সেই ঘটনাটা আমার রুটিন খানিকটা পালটে দিয়ে থাকবে- তবে সেদিকে নজর দেবার খুব একটা ফুরসৎ বা উপায় আমার ছিল না। এই গাজা পেছনে ফেলে রেখে আমি চলে যাব, ক্যালিফোর্নিয়া, নিজেকে নিয়ে নিজে বাঁচব, আমার এই হতভাগা বেচারি জীবন কত ভুগেছে, কত সয়েছে! গাজা আর গাজার লোকজনদের আমি অবজ্ঞা করতে শুরু করেছিলুম- তাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা আর ঘৃণা। সেই কাটা-ছেঁড়া শহরে সবকিছু আমায় মনে করিয়ে দিত কোনো মানসিক রোগীর ছাই রঙে আঁকা ব্যর্থ সব ছবির কথা। হ্যাঁ-হ্যাঁ, আম্মা, ভাবি আর তার বাচ্চাদের জন্যে সামান্য টাকা পাঠাতুম আমি, যাতে তারা কোনোক্রমে টিকে থাকতে পারে, তবে এই শেষ বন্ধনটাও আমি ছিঁড়ে ফেলে নিজেকে মুক্ত করে ফেলব, ওখানে, সবুজ ক্যালিফোর্নিয়ায়। এই হার, এই পরাজয়ের পচা গন্ধ থেকে বাঁচাব নিজেকে গত সাত-সাত বছর যে দুর্গন্ধ আমার নাকে হু-হু করে ঢুকে পড়েছে। যে সহানুভূতি, যে-সমব্যথা আমাকে আমার ভাইজানের বাচ্চা-কাচ্চাদের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছিল, তাদের আম্মা আর আমারও আম্মা- এরা কেউই কোনোকালে এই খাড়াই থেকে উড়াল ঝাঁপকে কোনো মানে দিতে পারবে না। অনেকদিন কেটেছে- আর এই পিছুটান টানাহেঁচড়া চলবে না। আমাকে পালাতেই হবে।