🕋 ইসলামে ঈমানের সংজ্ঞা:
ঈমান শব্দটি আরবি “আমান” শব্দ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ নিরাপত্তা, শান্তি ও বিশ্বাস।
শরীয়তের পরিভাষায়, ঈমান হলো:
> "হৃদয় দ্বারা বিশ্বাস করা, মুখে তা স্বীকার করা এবং কর্মের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা।"
---
✨ ঈমানের ছয়টি মূল ভিত্তি (আকীদাহ):
হযরত জিবরাইল (আ.) এর প্রশ্নের উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈমানের ছয়টি মূল ভিত্তি বর্ণনা করেন, যা “ঈমানের অঙ্গ” হিসেবে পরিচিত:
১. আল্লাহর উপর ঈমান
– বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ এক, তিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, সর্বশক্তিমান ও সব কিছুতে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন।
২. ফেরেশতাদের উপর ঈমান
– বিশ্বাস করা যে, ফেরেশতা একটি অদৃশ্য সৃষ্টিজগৎ, যারা আল্লাহর নির্দেশ পালন করেন।
৩. আসমানী কিতাবসমূহের উপর ঈমান
– যেমন: তাওরাত, যবুর, ইনজিল ও সর্বশেষ পবিত্র কুরআনুল কারীম।
৪. নবী ও রাসূলদের উপর ঈমান
– আল্লাহ বিভিন্ন যুগে নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন মানবজাতিকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য। সর্বশেষ নবী হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
৫. আখিরাত বা পরকালের উপর ঈমান
– কেয়ামত, পুনরুত্থান, হিসাব-কিতাব, জান্নাত ও জাহান্নাম—এসবের উপর বিশ্বাস।
৬. তাকদীর বা ভাগ্যর উপর ঈমান
– ভালো-মন্দ, লাভ-ক্ষতি, জীবন-মৃত্যু সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও নির্ধারণ অনুযায়ী ঘটে।
---
🧭 ঈমানের প্রকাশ ও প্রমাণ কীভাবে হয়?
রাসূল (সা.) বলেছেন:
> “ঈমানের ৭০টিরও অধিক শাখা আছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ স্তর হলো 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলা, আর সর্বনিম্ন হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কিছু সরিয়ে দেওয়া।”
— (সহীহ মুসলিম)
অর্থাৎ, ঈমান শুধু অন্তরের বিশ্বাস নয়; তা মানুষের আচরণ ও কর্মে প্রকাশ পায়—সততা, ন্যায়পরায়ণতা, বিনয়, দয়া, ধৈর্য, অন্যের উপকার—সবই ঈমানের বহিঃপ্রকাশ।
---
🌙 ঈমান ব্যতীত ইসলাম পূর্ণ হয় না
যে ব্যক্তি শুধু নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, হজ্ব করে—কিন্তু অন্তরে ঈমান নেই, তার আমল গ্রহণযোগ্য হবে না। আবার যিনি বিশ্বাস করেন কিন্তু তা অনুযায়ী কাজ করেন না, তাঁর ঈমান দুর্বল হয়ে যায়।
---
📜 উপসংহার:
ঈমান হলো ইসলামি জীবনের মূল ভিত্তি। এটি যেমন অন্তরের বিশ্বাস, তেমনি জ্ঞানের আলোয় পরিচালিত চিন্তা ও চরিত্রের পরিপূর্ণতা। যে ঈমান রাখে এবং তার অনুসারে জীবনযাপন করে, সে-ই প্রকৃত মুমিন।