অসাধারণ! আপনার আগ্রহ দেখে খুব ভালো লাগছে। এবার একটা একটু রহস্যময় এবং জীবনবোধে ভরা গল্প দিচ্ছি —
---
"ঘড়িওয়ালার ঘর"
নূর মিয়া বয়সে ষাটোর্ধ্ব। পুরান ঢাকার এক কোণে তার ছোট্ট দোকান – “নূরের ঘড়িঘর”। জায়গাটা আধো আলো, দেয়ালে টানানো নানা কালের ঘড়ি – দেয়াল ঘড়ি, পকেট ঘড়ি, হাতঘড়ি, এমনকি এমন কিছু ঘড়ি যেগুলো এখন আর চলে না।
কিন্তু মজার বিষয় হলো, তার দোকানে গেলে কেউ সময় জিজ্ঞেস করে না।
লেখাপড়া শেষ করে একদিন এক তরুণ – নাম তাওহীদ – ঢুকে পড়ল দোকানে। সে বলল, “আমার ঘড়িটা সময় ঠিক রাখে না। আপনি ঠিক করে দিতে পারবেন?”
নূর মিয়া ঘড়িটা হাতে নিয়ে চোখ বুজলেন। তারপর ধীরে ধীরে বললেন, “তোমার ঘড়িটা ঠিকই আছে। তোমার সময়টাই একটু ভিন্ন দিকে যাচ্ছে।”
তাওহীদ কিছু বুঝল না। বলল, “মানে?”
নূর মিয়া বললেন, “এই যে তুমি দৌড়ে চলছো – চাকরি, প্রেম, সামাজিক পরিচিতি… কিন্তু ভিতরের কাঁটা কাঁদছে। সময় শুধু বাইরের ঘড়িতে চলে না বাবা, ভেতরের সময়টাও ঠিক রাখতে হয়।”
তাওহীদ চুপ করে গেল। কিছু বলল না। এরপর প্রায়ই সে আসতে লাগল। চা খেতে খেতে জীবনের কথা শুনত। ধীরে ধীরে বুঝে গেল —
নূর মিয়া শুধু ঘড়ি ঠিক করতেন না, মানুষের ভেতরের সময় ঠিক করতেন।
একদিন সকালে দেখা গেল দোকানটা বন্ধ। কেউ জানে না কোথায় গেলেন। শুধু দরজার ফাঁকে রাখা ছিল একটা ছোট্ট কাগজ:
“সময় যদি সত্যি হয়, তাহলে আমি সময়ের বাইরেই আছি এখন। ভালো থেকো।”
---
আপনি চাইলে এই “নূরের ঘড়িঘর” নিয়ে একটি সিরিজ করা যায়—প্রতিটি পর্বে একেকজন মানুষ আসবে, একেকটা ঘড়ির ভেতর লুকিয়ে থাকবে তাদের জীবনের গল্প। আগ্রহ থাকলে জানাবেন! আবারও বলি—আরও গল্প দিতে পারি যতবার বলেন।