#নেই!"
চিত্রা এবার নিঃসংকোচে জড়িয়ে ধরে মানুষটাকে। এতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে যেন মিশে যাবে এখুনি মানুষটার শরীরের সাথে। কোনো ভাবেই যেন আর যেতে দিবে না।
মুচকি হেসে উষ্ণ আলিঙ্গনটাকে সাদরেই গ্রহণ করেন বাহার ভাই। মাথায় হাত বুলানো জারি রেখেই ফিসফিস করে বললেন,
"চিন্তা নেই, মেয়ে। পালাবো না তোমায় একা করে।"
"কিন্তু আমার বুকে যে বড়ো ভয় হচ্ছে। আপনি কিছু ভুল করবেন না তো?"
"ভুল করবো না ঠিক আমার জানা নেই। কেবল এতটুকু জানি, এবার যেখানেই যাবো তোমায় নিয়ে যাবো, রঙ্গনা। তোমায় ছাড়া আমার একেকটি যুগ যেন হাজার বছরের সমান। তুমি কেবল পাশে থেকো। থাকবে তো?"
চিত্রা ঘোরে ডুবে গেলো। কোঁকড়া চুলের মানুষটার বুকে মুখ গুঁজে অস্ফুট উত্তর দিলো,
"থাকবো। মরতে বললে একসাথে মরবো।"
"মরবো কেন, মেয়ে? আমাদের তো সংসার করা বাকি।"
চিত্রা বুকে মুখ গুঁজে রেখেই হাসলো। মাথা নাড়িয়ে কেবল সম্মতিটুকু দিলো।
*
অনুষ্ঠান বাড়িতে তখনও মোটামুটি সজাগ অনেকেই। আবার ঘুমিয়ে গিয়েছে কেউ কেউ। রান্নাঘরে খুটখাট যেন স্থায়ী ভাবেই চলছে। এই কেউ চা খাচ্ছে তো এই খাচ্ছে কফি। কেউ বা রাত বিরেতে বিরিয়ানিটা গরম করে নিয়ে টিভির সামনে বসছে। সবকিছুই নিয়ম ভেঙে মত্ত কেবল আনন্দে।
তুহিনের ঘরের আলোটুকু নেভানো। ল্যাপটপ স্ক্রিনের আলোটাই কেবল এসে পড়ছে মুখে। অন্ধকার ঘরটা পুরোপুরি অন্ধকারও বলা যায় না। বাহিরের রঙ বেরঙের জ্বলতে থাকা ছোটো লাইট গুলোর আলোর এক অংশ এসে তার ঘরের ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
ঠিক তখনই দরজায় টোকার শব্দ হলে। কেউ একজন আসার অনুমতি চাচ্ছে। তুহিন মনযোগ স্থির রেখেই অনুমতি দিলো আসার।
এক মগ গরম কফি নিয়ে ছেলের ঘরে ঢুকলেন মুনিয়া বেগম। তুহিন সেদিকে তেমন খেয়ালও করেনি। একবার দেখেওনি কে এসেছে। তবুও খুব করে বুঝতে পারলো মা এসেছে। এবং মুখ না তুলেই বলল,
"ঘুমাওনি, আম্মু? তোমার প্রেশার বাড়বে যে!"
মুনিয়া বেগম এসে বসলেন ছেলের পাশে। কফির মগটা ছেলের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন,
"নে কফিটা। তুইও তো ঘুমাসনি! রাত যে অনেক হলো। ঘুমিয়ে পর।"
"অফিসের অনেকগুলো কাজ জমে গিয়েছে, আম্মু। এগুলো একটু একটু করে শেষ করি। এরপর নাহয় ঘুমাবো?"
মুনিয়া বেগম শান্ত চোখে পরখ করলেন নিজের ছেলেটাকে। নীল স্ক্রিনের আলোটুকুতে বুঝা গেলো তুহিনের চোখের নিচের কালো দাগ গুলো। শুকিয়ে যাওয়া মুখটির অসহায়ত্ব গুলো। কিছুটা রয়েসয়ে তিনি ছেলের উদ্দেশ্যে বললেন,
"আমি ভাবছিলাম একটা বউ যদি ঘরে আনা যায় কেমন হয়?"
কফির কাপে চুমুক দিতে গিয়েও থামলো তুহিন। মায়ের কথায় এক পলক তাকালো মায়ের দিকে। এরপর আবার কফির কাপটি তুলে নিলো মুখে। এক চুমুক কফি পা