#
"হ্যাঁ
হান্নান গেল না? আগেও বলা যেত। "
কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল হান্নান খান কথাটা।
আনিসুর খান বাকা হাসেন। কারণ তিনি জানে মোনাকে কেন এ বাড়িতে নিয়ে আসছে আসরাফ খান।
"বাবা আমার মনে হয়। মোনার বাবা আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করে। তাকে এ বাড়িতে কিছুদিন থাকতে দিলে সমস্যা হবে না৷ "
"সমস্যার কথা আমি বলিনি। মোনার সাথে সবাই কম্ফোর্ট অনুভব করবে কিনা৷ সেটাই আমার প্রশ্ন। "
"দাদা মোনা ওই মেয়েটা না। ওই যে ২ বছর আগে যে এসেছিল এক বার। এবং সে আরহাম ভাই এর রুমে থাকতে চেয়েছিল।" (আনান)
আরহাম কথাটা শুনে মাথা তুলে তাকায়।
"থাকতে চেয়েছিল কিন্তু থেকেছিল ত না।
তাকে অন্য রুম দেওয়া হয়েছিল।
আসলে আরহামের রুমটা সুন্দর তাই৷ "
(আসরাফ খান)
"সমস্যা নেই দাদা মেয়েটা বেশ ভালো। আবার আরহাম ভাই যখন দেশে ছিল তখনত ওরাও দেশে ছিল। আমাদের বাসায়ত আশা যাওয়া করত। "
"ঠিক আছে সবাই যেহেতু মত দিয়েছো। তাহলে সেটাই থাক। "
ওদের কথোপকথনের মাঝে খান বাড়ির বাইরে গাড়ির শব্দ শোনা গেল।
গার্ড'স গাড়ির দরজা খুলে দিতে এক লাস্যময়ী নারী বেরিয়ে এলো।
পরনে লাল রঙা একটা টাইট গাউন।
মুখশ্রীতে কৃত্রিম সাজ লেগে আছে। যা তাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।
মেয়েটা মাত্রাতিরিক্ত ফর্সা। তার উপর মেকাপ যেন বেশি বেশি লাগছে। তবে সুন্দরও লাগছে।
মেয়েটা নিজের ব্যাগ পাশে থাকা গার্ডের হাতে দিয়ে ভেতরে চলে আসে।
"আসরাফ আঙ্কেল, মাধবি আন্টি। আপনারা কোথায়?"
মোনার ডাক সার্ভেন্ট তাকে ডাইনিং এড়িয়াতে যেতে বলে।
মোনা সে দিকে চলে যায়।
হৃদি, মোনাকে দেখে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। ও বাবা কি লম্বা। আবার কি সুন্দর।
প্রেমা হৃদির হাতে কুনুই দিয়ে ধাক্কা দেয়।
হৃদির ধ্যান ফিরে,
"এভাবে থাকিয়ে কি দেখছিস? কালকেটো একটা।
ছোবল মারলে বুঝবি কেমন লাগে। "
হৃদি আসলে মোনাকে চিনে না। মোনার সম্পর্কে তার কোন ধারনা নেই।
তাদের দু'জনের এই প্রথম দেখা হলো।
হৃদি চোখ নামিয়ে নেয়।
মোনা গিয়ে মাধবি বেগমকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,
"কেমন আছেন আন্টি?
আই মিস উ সো মাচ৷ আপনি জানেন৷ আমেরিকার আকাশে বাতাসে শুরু আপনাদেরকে খুঁজে বেড়িয়েছি আমি। বাই দ্য ওয়ে সবাই কেমন আছো?"
সবাই ভালো আছি বলে সম্মতি দেয়।
মাধবি বেগম হাসলেন,
"খাবার সময় আপন জনই আসে মোনা। এসো বসো।"
"তোমাড আন্টি ঠিকই বলেছে মোনা।
আমাদের সঙ্গে জয়েন করো।"
"হ্যাঁ আঙ্কেল অবশ্যই। "
মোনা মাথা তুলে তাকায়।
"ওটা আরহাম না? "
"হ্যাঁ।"
মোনা এগিয়ে যায়।
আরহামের ঘাড়ে হাত রাখে।
হৃদির এবার অসহ্য লাগতে লাগল।
আরিস তাকিয়ে আছে। খাওয়া থেকে সামনের ড্রামাটা বেশি এনজয়এবল।
আরহাম মোনার দিকে তাকায়।
তার খুবই স্ট্রং একটা ডার্ক এনার্জি অনুভব হচ্ছে এই মুহুর্তে।
আরহামের চোখে চোখ পড়তে মোনা, আরহামের পাশে একটা চেয়ার খালি ছিল সেখানে বসে পড়ে,
"আমার কথা ভুলে গেলে? বিদেশে যাওয়ার আগে কত দুষ্টুমি করতে ছোট থাকতে।। ভুলে গেলে সব দুষ্টু।"
আরহাম নিজের গাড়ের দিকে তাকায়।।
ওর দৃষ্টি দেখে মোনা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। নিজের হাতটা সরিয়ে নেয়।
"তুমি অনেক হ্যান্ডসাম হয়ে গেছো আরহাম।
অনেক বেশি হ্যান্ডসাম। "
আরহাম চোখ ঘুরায়।।
হৃদি তাকিয়ে আছে মোনার দিকে।। কি বেহায়া।
গায়ে পড়া মেয়ে।
হৃদি নিজের খাওয়ার দিকে মন দেয়।
এমন সময় হৃদি অনুভব করে তার পায়ের উপর একটা হাত।
হৃদি নিচে তাকায়।
কোন হাত নেই। তার এক পাশে আরহাম অন্য পাশে প্রেমা।
ওরাত খাচ্ছে।
হৃদি তাকিয়েই আছে। তার তখনো মনে হচ্ছে কেউ তার উরুতে হাত রেখেছে।
তবে নড়াচড়া হচ্ছে না।
হৃদি ভাবে তার মনের ভুল।
সে পুনরায় খাবার লোকমা মুখে তুলতে হাতটা তার উরুতে বিচরণ করা শুরু করে।
হৃদির খাবার গলায় আঁটকে যায়।। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে।। সামনে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।
কেউই নেই। তাহলে কি হচ্ছে তার সাথে। কেন হচ্ছে।
হৃদি বাম হাত উরুতে রাখে।
সে স্পষ্ট অনুভব করছে কারোর হাত৷
হৃদি এবার আরহামের দিকে তাকায়।
আরহাম তার মত মত খাচ্ছে।
মোনা কথা বলছে তার হু হা জবাবা দিচ্ছে।
মাধবি বেগম হৃদির সামনা সামনি বসে আছে।
হৃদিকে খাওয়া বন্ধ করতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
"কি ব্যাপার। খাচ্ছিস না কেন হৃদ?"
"খ খাচ্ছি।
আ আসলে আমার খাওয়া হয়ে গেছে। আর খেতে মন চাইছে না৷ ".
তখনি হৃদির উরুতে যন্ত্রণা শুরু হয়৷ হাতটা তাকে শক্ত করে চেপে ধরেছে।
হৃদি ভয়ে উঠে দাড়ায়।
" পরে খাব আবার।"
হৃদি দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়।
আরহামের আভা ঘন অন্ধকার।
মোনা আরহামের দিকে তাকিয়ে বাকা হাসে।
"তাহলে এটাই তোমার পদ্মা৷ তোমার হৃদয়ের মধ্যমনি।"
মনে মনে কথাটা বলে মোনা।
আরহাম নিজের খাবারের শেষ লোকমা মুখে নিয়ে উঠে যায় সেখান থেকে।
"আরহাম। "
বাবার ডাকে আরহাম থেমে যায়।
"বলো।"
"আমি চাই তুমি মোনাকে একটু সময় দেও।"
"আমার কাছে অনেক কাজ আছে। সমনের ইভেন্টও আমার দায়িত্ব।
তুমি এই মুহুর্তে এমন সিলি প্রস্তাব কিভাবে দিতে পারো?"
"আমি তোমাকে সাহায্য করব।"
"সরি বাবা৷ আমাকে সাহায্য করাটা বাদ দিয়ে মোনাকে তুমি সময় দিও।"
কথাটা বলে আরহাম চলে যায় নিজের রুমে।
আরিস, বরাবরই আরহামের উপর ক্রাশ খায়।
কি অদ্ভুত সুন্দর করে কথা গুলো গুছিয়ে বলতে পারে।
একটা আলাদা প্রভাব আছে আরহামের কথায়।। প্রতিটা কথার ন্যায্য অর্থ আছে।। প্রতিটা কথার ভার একেব