- নীরবতার মাঝে কেবল এক টুকরো তা**চ্ছি****ল্যে***র হাসি হেসে কুঞ্জ সেখান থেকে চলে যায়। তন্ময়ের সামনে থাকলে হয়তো সকলের সামনে তাকে আরো জ***ঘ***ন্য ভাবে অ***প***মা*নি***ত হতে হবে।
আজ প্রায় দুবছর পর দেশে ফিরেছে হোসেন পরিবারের বড় ছেলে , রাফিউল হোসেন তন্ময়। হোসেন পরিবারে আজ যেনো আনন্দের ছোঁ***য়া লেগেছে। কতদিন পর নিজের ছেলেকে চোখের সামনে দেখার সুখ রাহেলা হোসেন কে পা****গ***ল করে তুলছে। দুবছর আগে এক অ**ল***ক্ষি*ণী**র জন্য রাহেলা তার ছেলেকে নিজের থেকে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। আজ তার দী**র্ঘ অপেক্ষার অবসান হয়েছে।
এত সব আয়োজন, জাঁকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠানের মাঝে বাড়ির এক প**রি*ত্য****ক্ত বস্তুতে পরিণত হয়েছে কুঞ্জ। সকাল থেকেই নিজেকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছে সে। কেনো জানি তার সেই মানুষটার মুখোমুখি হতে ইচ্ছে করছে না, ইচ্ছে করছে না তার পানে একবারের জন্য চেয়ে থাকতে। ভালো তো সে তাকে কম বাসে নি, কিন্তু সেই ভালবাসাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে সে তো ঠিকই তাকে ছেড়ে চলে গেছে, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আর এদিকে কুঞ্জ রয়ে গেছে অন্যের গ**ল***গ্র*হ হয়ে।
হঠাৎ দরজায় সজোরে করাঘাত পড়ায় কুঞ্জের ভাবনায় ছে**দ পড়ে। অবসর শ**রী**র**টা**কে জোর করে বিছানা থেকে টেনে নিয়ে কাপা হাতে দরজা খুলতেই এক দফা রা***গী দৃষ্টির সম্মুখীন হয় সে। তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গোলগাল ফর্সা মহিলা কুঞ্জ কে উদ্দেশ্য করে কড়া কন্ঠে বলে,
- পটের বিবি হয়েছিস, মহারানী সেজেছিস, সকাল থেকে দোর দিয়ে তিনি পালঙ্কে শুয়ে আরাম করবেন আর আমরা খেটে খেতে ম***র**ব। আমরাই যদি সব কাজ করি, তাহলে দিনে তিন বেলা ভাত গিলিয়ে তোকে পুষছি কেনো বাসায়? রান্নাঘরে যা তারাতারি, আমার যেনো দ্বিতীয়বার তোকে বলতে না হয়।
এই বলে মহিলাটি চলে যেতে নিলে কি যেনো একটা মনে পড়ায় আবার পিছন ফিরে তাকায়। কুঞ্জ তখনও মুখ নিচু করে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো শুকনা, মুখ আবেগহীন। আর কতই বা কাদবে সে, জন্মের পর থেকে এই অ**শ্রু**ই তার চি**র**স***ঙ্গী। মা বাপ ম*****রা মেয়ের জীবন আর কতই বা ভালো হতে পারে।
- আর শোন ভুলেও তন্ময়ের সামনে যাওয়ার সাহস করবি না। যদি দেখি তুই আমার মেয়ের কপাল পো****ড়া*নো***র চেষ্টা করেছিস তাহলে তোকে আমি কেটে বত্রিশ টু**ক*রা করে পানিতে ফেলে দিয়ে আসব। বিশ্বাস নেই, মায়ের মতই তো রূপ পেয়েছিস। রূপ দেখিয়ে তন্ময়ের মন গলানোর চেষ্টা করবি না এর তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। এবারেই রাত্রির সাথে তন্ময়ের বিয়েটা দিয়ে দিবো আমি।
কুঞ্জের চোখ বেয়ে নীরবে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে। তার ভাবতেও খা**রা***প লাগছে তার নিজের চাচী নিজের মেয়ের জন্য তার এত বড় ক্ষ******তি করতে চাইছে।
কুঞ্জ মাথায় বড় করে একটা ঘোমটা টেনে তার চাচিকে পাশ কাটিয়ে নিচে চলে যায়।
- ভাব দেখে বাচি না। এ****তি***ম মেয়ের আবার দেমাগ। এই মা******গী*******কে তন্ময়ের কাছে ঘেঁ***ষ**তে দেওয়া যাবে না। পুরুষ মানুষের মন, সুন্দরী বউ কে দেখে কখন মন গলে যায় কে জানে।
কুঞ্জ মাথা নিচু করে সিঁড়ি দিয়ে নামছিল তার তার সামনের মানুষটাকে সে খেয়াল করেনি। ফলে তন্ময়ের সাথে ধা***ক্কা লাগায় কুঞ্জ ধুরে ছিটকে পড়ে। ভদ্রতার খাতিরে তন্ময় একবারের জন্য ও তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি, বরং চ****র***ম অপমা*ন করতে সে ভুলে নি। ছোট থেকেই কুঞ্জ তার চোখের বি*****ষ, যত তাকে দেখে ততই যেনো তার রা**গে**র পরিমাণ বেড়ে যায়।
বাড়িতে আজ প্রচুর মানুষের আগমন ঘটেছে। কুঞ্জ নিচে এসে এত মানুষ দেখে কিছুটা ভরকে যায়। মন চাইছিল আবারো ঘরে ফিরে যেতে কিন্তু সেটা করলে আজ চাচী নিশ্চয়ই একটা কু***রু*****ক্ষে***ত্র বাঁ***ধা**বে। তাই মনে কে শ***ক্ত করে সে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়।
কাজ করার সময় নিজের পিছনে কারো অস্তিত্ব অনুভব করায় কুঞ্জ পিছনে ফিরে তাকায়। কিন্তু তার আগেই কেও তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তার পিছনে থাকা মানুষটা কে সেটা আন্দাজ করতে পেরে কুঞ্জের মুখে একটু হাসি ফুটে উঠে।
- আজ টিউশনি নেই রিমি?
- না আপু, আজকে এতদিন পর ভাইয়া বাসায় ফিরেছে, আজ কি টিউশনিতে যাওয়া উচিত বলো?
রিমির মুখে তন্ময়ের কথা শুনতেই কুঞ্জের মুখে কালো হয়ে যায়। মৌনতা বজায় রেখে একমনে হাতের কাজ সারতে থাকে সে। নিজের ভুলের জন্য রিমি জিহ্বায় কা***""ম******ড় দেয়। মনে মনে নিজেকে খানিক গা*********লি দিতে একটু হেসে বলে,
- ভাবি না মানে আপু কিছু খেয়েছো সকাল থেকে?
রিমির কথা শুনে কু***ঞ্জ স্ত***ব্ধ হয়ে যায়। এই বাড়িতে এক মাত্র রিমীই তার খোঁজ খবর নেয়। বাড়িতে থাকলে তাকে না খাইয়ে সে কখনোই খায় না। এমন ননদ কতজনের কপালে জোটে। কুঞ্জ আনন্দের অ****শ্রু চোখে রিমির দিকে তাকিয়ে বলে,
- আমি পড়ে খেয়ে নিব, হাতের কাজ গুলো সেরে নেই আগে।
- না না, আগে খেয়ে নাও। মুখ দেখে তো মনে হচ্ছে রাতেও খাবার জুটেনি। দাড়াও আমি খাবার বেরে আনি।
রিমি প্লেটে করে কিছু খাবার নিয়ে আসে কুঞ্জের জন্য। রিমির জোরাজুরিতে কুঞ্জ কাজ ফেলে রান্নাঘরের মেঝেতে বসে খেতে শুরু করে। কুঞ্জ সবে মাত্র এক লোকমা খাবার মুখে তুলেছিল ঠিক তখনই কেও তার চুলের মুঠি শ**ক্ত করে ধরে তাকে দাঁড়া করায়। তার সামনে থেকে খাবার কেড়ে নিয়ে তার গালে এক থা******প্প******ড় বসিয়ে বলে,
- রাজ্যের কাজ ফেলে মা******গী খেতে বসেছে। আর তোর সাহস কি করে হলো নিচে নামার। আমার ছেলেকে আবারো তুই কে*ড়ে নিতে চাস। নিজের মা বাবাকে খেয়েছিস,