#
সামনের বেঞ্চে বসা মেয়ে গুলো পিছনে ঘুরে আরহানকে দেখছে। আরহান বুকের কাছে হাত গুজে প্রশ্ন করলো, “ কি নিয়ে কথা হচ্ছিলো?”
ইশা চুপ করে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। সে একটি বারের জন্যও আরহানের দিকে তাকাচ্ছে না।
ইশা প্রতি উত্তরে কিছু না বলায় আরহান ভ্রু কুঁচকে বললো,” "Get out of my class.I will not tolerate any kind of disturbance. Anyone who wants to talk instead of learning—leave now."
বলতে বলতে আরহান নিজের ডেস্কের সামনে চলে গেলো। ইশা বিরক্তি নিয়ে আরহানের চলে যাওয়া দেখছে। কথা কি সে একা বলেছে? পাশের যে ডাইনি লোকটাকে খেতে চাইলো তাকে তো কিছুই বলল না। ইশাও নিজের ব্যাগ নিয়ে আরহানের সামনে দিয়ে হনহনিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলো।
আরহান ভ্রু কুঁচকে ইশার চলে যাওয়া দেখলো। তারপর মনে মনে বলল “ স্টুপিড”।
এরপর থেকে কোনো এক কারণে প্রতিদিনই আরহান ইশাকে ক্লাস চলাকালীন রুম থেকে বের করে দিচ্ছে। স্যার মানুষ দেখে ইশা কিছু বলতেও পারছে না। দাঁতে দাঁত চিপে রাগে গজ গজ করতে সে বেরিয়ে যায়। লোকটা একেকদিন একেক অজুহাত দিয়ে সমানে তাকে ক্লাস থেকে বহিস্কার করছে। আজকেও তাই হলো, ইশা ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতেই আমিনুল সাহেবের সামনে পড়ে গেলো।
আমিনুল সাহেব রাউন্ডে বেরিয়েছিল। ইশাকে বের হতে যেতে দেখে তিনি চোখ গরম করে বললেন,” ক্লাস না করে কোথায় যাচ্ছো? জলদি ক্লাসে যাও।”
ইশা অভিযোগ করার আগেই আরহান ব্যাপারটা খেয়াল করে সাথে সাথেই ইশাকে ডাকলো, “ একশ এগারো ”
ইশা দাঁতে দাঁত চিপে আরহানের দিকে তাকালো। একশ এগারো কি? তার কি কোনো নাম নেই। সারাদিন শুধু একশো এগারো, একশো এগারো। কি যে করতে মন চাইছে এই লোকটাকে!!
“ ভিতরে আসো।”,
ইশা ভিতরে এসে গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে রইলো।
আরহান একদম তার সামনে থাকা টেবিলের দিকে ইশারা করলো। ইশা বুঝতে না পেরে পাল্টা ঈশারা করে বলল, “কি?”
“ এইখানে বসো।”, আরহান ধমক দিতেই ইশা চুপ করে সামনের বেঞ্চে বসে পড়লো। একদম টিচারের মুখের সামনে হওয়ায় এই বেঞ্চে সাধারনত কোন স্টুডেন্ট বসে না। ইশার মনে হচ্ছে আরহানকে কেউ ৩x জুম করে তার মুখের সামনে ধরে রেখেছে। ইশা বাইরে তাকিয়ে দেখলো আমিনুল সাহেবও নেই।
ইশা নিজের ফাঁকা খাতার দিকে তাকিয়ে আছে। এই বৃহৎ লোকটা তার সামনে দাড়িয়ে থাকলে সে লিখবেটা কি? ইশা আড় চোখে একবার আরহানের দিকে তাঁকালো। আরহানের দৃষ্টি তার দিকে স্থির।
“ কি ব্যাপার। এটা না আমি গতকাল সলভ করে দিলাম?”,
“ গতকাল তো খুব আপনি আমাকে ক্লাস করতে দিয়েছিলেন?”, ইশা দাঁতে দাঁত চিপে আস্তে করে বললো।
আরহানের কপালের ভাজ দূর হয়ে গেলো। সে ভাঙবে কিন্ত মচকাবে না।
“ এটা তো বেসিক প্রবলেম। এটা সলভ করতে পারছো না! তুমি কি চা ছুঁড়ে মারা, অজ্ঞান হবার নাটক ছাড়া কিছুই পারো না?”, বলতে বলতে আরহান ঝুকে এসে ইশার হাত থেকে কলম নিয়ে নিতেই ইশা ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকালো।
“ শুধু চা না। আরো অনেক কিছু ছুঁড়ে মারতে পারি।”, ইশা বির বির করলো।
“ Shut up.”, আরহানের ধমকে ইশা আড় চোখে তাকালো।
ইশা প্রতি উত্তরে কিছু বলল না। আরহান ইশার খাতায় প্রবলেম সলভ করে দিতে দিতে বলল, “ এখন থেকে আমার ক্লাস করতে চাইলে এই বেঞ্চে বসবে। আমার ঠিক সামনে। আর যদি আমি তোমাকে পিছনে বসতে দেখি, তাহলে…”, আরহান বলে শেষ না করতেই ইশা আনমনে বলে উঠলো, “Get out?”
আরহান ইশার দিকে তাকিয়ে বলল, “ exactly,” বলেই আরহান উঠে দাড়ালো।
ক্লাস শেষে ইশা বেরিয়ে যাবে এমন সময় নাইমা তার সামনে এসে দাড়িয়ে পড়লো। ইশা বিরক্ত হয়ে তাকালো। আবার কি চায় এই মেয়ে? নাইমা টান দিয়ে ইশার হাতে থাকা কলমটি নিয়ে যেতে যেতে বলল, “এটা আমি নিয়ে গেলাম।”
ইশা হা করে তাকিয়ে আছে। এটা কি হলো? আশ্চর্য!
একপাশ থেকে নেহা বলল, “ ও কলমটা কেনো নিয়ে গেলো বুঝেছিস?”
ইশা না সূচক মাথা নাড়ল।
কলম নিয়ে যাওয়ার কারণটা ইশা পরের দিন ঠিকই বুঝলো। আরহান ইশাকে যেই বেঞ্চে বসতে বলেছিল নাইমা আগে এসে সেই জায়গা দখল করে বসে আছে। স্কুল কলেজের মেয়েরা এমন করলে মানা যায় কিন্তু ভার্সিটিতে! মনে হয় ডাইনিটা নির্লজ্জ লোকটার প্রেমে পড়েছে।
ইশা কোনো কথা না বলে পিছনে গিয়ে বসে।
প্রতিদিনের মতন আরহান ক্লাসে এলো। ঢুকেই তার নজরে পড়লো সামনের বেঞ্চে বসা মেয়েটির দিকে। আরহান ভ্রু কুচকে বলল, “ রোল একশ এগারো আসেনি?”
ক্লাসের