একটি খেজুর ও আমানতের শিক্ষা।
গল্প: খালিদের একটি দিন
খালিদ মাত্র ১২ বছরের এক বালক। সে মদিনার এক প্রান্তে তার পরিবারসহ বসবাস করে। তার বাবা আব্দুল্লাহ একজন সৎ ও পরহেজগার খেজুরচাষী। ছোটবেলা থেকেই খালিদ বাবার সাথে খেজুর বাগানে কাজ করে, পানি দেয়, গাছের নিচে পড়ে থাকা খেজুর কুড়িয়ে আনে। তাদের সংসার খুব বড় নয়, কিন্তু তাতে বরকত আছে।

একদিন সকালে, খালিদ স্কুলে যাওয়ার পথে তার বাবা তাকে বলল, “খালিদ, আজ তুমি স্কুল থেকে ফেরার পথে বাগানে গিয়ে দেখো, কিছু খেজুর ঝরে পড়েছে কি না। যদি পাও, তবে সেগুলো সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে এসো।”

খালিদ মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে রওনা হলো। স্কুল শেষে বাগানে গিয়ে সে দেখে মাটিতে কয়েকটি খেজুর পড়ে আছে। সে সেগুলো কুড়িয়ে একটি ছোট থলিতে রাখল। তারপর হঠাৎ তার চোখ পড়ল একটি খুব পাকা ও রসালো খেজুরে। দেখতে লোভনীয়, হাতে তুলতেই মুখে পানি চলে এলো।

তার মন বলল, “এটা তো খেজুর বাগানেরই খেজুর। আমি তো বাগানের কাজ করি, এটুকু খেলে কিছু হবে না।”

কিন্তু হঠাৎ তার মনে পড়ল—বাবা সবসময় বলেন, “আমাদের কাজ হোক বা কারো কাজ, মালিকানা যার, অনুমতি ছাড়া কিছু নেওয়া হারাম।”

খালিদ দ্বিধায় পড়ে গেল। খেজুরটি ছিল সত্যিই লোভনীয়। সে কিছুক্ষণ সেটিকে হাতে নিয়ে ভাবল, তারপর থলিতে রেখে দিল। নিজে খেল না।

ঘটনাপ্রবাহ: এক সৎ সিদ্ধান্ত
বাড়ি ফিরে খালিদ সব খেজুর বাবাকে দেখালো এবং সেই বিশেষ খেজুরটির কথাও বলল।

আব্দুল্লাহ মুচকি হেসে বললেন, “খালিদ, এটা তোমার জন্য একটি পরীক্ষা ছিল। আল্লাহ দেখেছেন তুমি কেমন করো। তুমি নিজের লোভ সংবরণ করেছো, এটা খুব বড় ব্যাপার।”

তিনি খালিদের মাথায় হাত রেখে বললেন, “এই একটা খেজুরের মধ্যে যে আমানতের শিক্ষা তুমি পেয়েছো, তা সারাজীবন কাজে লাগবে।”

আমানতের সংজ্ঞা ও গুরুত্ব
‘আমানত’ অর্থ: বিশ্বাসযোগ্যতা, নিরাপত্তা, গচ্ছিত রাখা জিনিসের প্রতি দায়িত্বশীলতা। এটি শুধু বস্তুগত বিষয় নয়, বরং কথাবার্তা, দায়িত্ব, সময়, জ্ঞান—সব কিছুতেই আমানতের গুরুত্ব আছে।

কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন:

إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَىٰ أَهْلِهَا
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেন যে, তোমরা আমানতসমূহ তার উপযুক্ত মালিকের নিকট ফিরিয়ে দাও।”
(সূরা আন-নিসা: ৫৮)

রাসূল (সা.) বলেছেন:

"لا إيمان لمن لا أمانة له"
“যার মাঝে আমানতদারি নেই, তার ঈমানও নেই।”
(মুসনাদ আহমাদ)

খালিদের এই একটি ছোট কাজের মাধ্যমে তার মধ্যে আমানতের বীজ রোপিত হলো।

শিক্ষার বিস্তার
এই ছোট ঘটনা আমাদের অনেক কিছু শেখায়—

১. সততা ও আত্মসংযম:
খেজুরটি খাওয়া সহজ ছিল। কেউ দেখত না। কিন্তু খালিদ জানে, আল্লাহ দেখছেন। এটাই তাকওয়া। আল্লাহর ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা।

২. পরিবারে ইসলামী শিক্ষা:
আব্দুল্লাহ প্রতিদিন খালিদকে নৈতিকতা শেখান। একজন বাবা তার সন্তানকে কীভাবে গড়ে তুলতে পারেন, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এটি।

৩. বিশ্বাসযোগ্যতা গঠনের সূচনা:
একজন মানুষ তার জীবনে যতই বড় হোক, যদি তার মাঝে আমানতের গুণ না থাকে, তবে সে মানুষ হিসেবে সম্পূর্ণ নয়।

সমসাময়িক প্রেক্ষাপট ও আমানতের অভাব
আজ আমাদের সমাজে ছোট-বড় অনেকক্ষেত্রে আমানতের অভাব দেখা যায়। যেমন—

চাকুরির দায়িত্বে অবহেলা করা।

অফিস টাইমে ব্যক্তিগত কাজ করা।

কাউকে টাকা ধার দিয়ে ভুলে যাওয়া বা না চাওয়া।

কথা দিয়ে কথা না রাখা।

এসবই আমানতের বরখেলাপ।

একটি ছোট শিশুর মত খালিদের সিদ্ধান্ত আজ বড়দের জন্যও শিক্ষা। এক খেজুর না খাওয়ার মাধ্যমে যে চরিত্র গঠিত হয়, তা পুরো জাতিকে রক্ষা করতে পারে।

ইসলামের ইতিহাসে আমানতের দৃষ্টান্ত
১. রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে আমানত:
রাসূল (সা.)-এর সবচেয়ে প্রসিদ্ধ গুণগুলোর একটি ছিল আল-আমিন—বিশ্বস্ত ব্যক্তি। এমনকি ইসলামের বিরোধীরাও তাঁর কাছে আমানত রাখত।

২. হযরত উমর (রা.) ও খলীফাতুল মুসলিমীন:
হযরত উমর (রা.) রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে এতটাই আমানতদার ছিলেন যে, একবার একটি মোমবাতি নিভিয়ে দিলেন, কারণ সেটি রাষ্ট্রীয় কাজের জন্য ছিল আর তিনি ব্যক্তিগত কাজ করতে যাচ্ছিলেন।

বর্তমান প্রজন্ম ও আমানতের শিক্ষা
আজকের শিশুরাই আগামীর নেতৃত্ব। যদি তাদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই আমানতের গুরুত্ব, আল্লাহভীতি, সততা গড়ে তোলা যায়, তাহলে দুর্নীতি, প্রতারণা ও অবিচারের সমাজ পরিবর্তন সম্ভব।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার, মিডিয়া—সব ক্ষেত্রেই আমানতের শিক্ষা প্রসার করতে হবে।
উপসংহার
একটি খেজুরের মতো ছোট একটি ঘটনা আমাদের শেখায় জীবনের একটি বড় শিক্ষা—আমানতদারী ও আল্লাহভীতি। খালিদের মত আমাদের প্রত্যেককে হতে হবে নিজ নিজ দায়িত্বে বিশ্বস্ত। এই গুণই একজন মানুষকে সত্যিকার মুসলমান, একজন প্রকৃত মানুষ করে তোলে।

আমরা যদি আমাদের জীবনে খালিদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারি, তবে ইনশাআল্লাহ, আমাদের সমাজ একদিন শান্তি, সুবিচার ও নিরাপত্তার আশ্রয়স্থল হবে।

শেষ কথা:
আমরা যখন এক খেজুর দেখেও নিজেকে প্রশ্ন করি, “এটা কি আমার হক?”—ঠিক তখনই আমাদের চরিত্র গঠনের যাত্রা শুরু হয়।
#face
#national
#bangladesh
#international
#aface1

AFace1 লাইক, কমেন্ট, পোস্ট করে ইনকাম করুন। এই ভিডিওটি যদি আপনি দেখেন তাহলে আর কোথাও কারো কাছে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন হবে না . কিভাবে কাজ করবেন কিভাবে উইথড্রো করবেন এবং কিভাবে বেশি টাকা ইনকাম করবেন .এখানে কোন ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হয় না .শুধু আপনি আপনার সময় দিন আর এরা আপনাকে টাকা দেবে.

পরিশেষে বলা যায়, লজ্জাপতি গাছ একটি সহজলভ্য অথচ অত্যন্ত কার্যকর ঔষধি উদ্ভিদ। তবে যেকোনো প্রাকৃতিক ঔষধ ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উত্তম, বিশেষ করে যদি আপনি আগে থেকে কোনো ওষুধ সেবন করেন বা স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে।

ত্বকের নানা রোগ যেমন একজিমা, চুলকানি বা ফোঁড়ার ক্ষেত্রেও এটি দারুণ কার্যকর। পাতার পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করলে আরাম মেলে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমে যায়।

এই গাছ ঘুমের সমস্যা ও মানসিক অস্থিরতা কমাতেও সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, লজ্জাপতিতে সেরোটোনিন নামক উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কে প্রশান্তি এনে ঘুমের উন্নতি ঘটায়।

হেমোরয়েড বা অর্শ রোগেও লজ্জাপতির ব্যবহার রয়েছে। এর শুকনো পাতা গুঁড়ো করে দিনে দু’বার খেলে রক্ত পড়া কমে এবং ব্যথা উপশম হয়। একইসাথে, পাইলসের জন্য বাহ্যিক প্রয়োগেও পাতার পেস্ট ব্যবহার করা হয়।