10 میں ·ترجمہ کریں۔

ঈদের জামা ঈদের জামা

ঈদের চাঁদ উঠেছে। আকাশের কোণে বাঁকা এক টুকরো হাসির মতো চাঁদ ঝিকমিক করছে। চারদিক আলোয় আলোয় ভরে যাচ্ছে, যেন শত বছরের দুঃখ এক রাতের জন্য ভুলে যাওয়ার ডাক এসেছে।

কিন্তু সেই হাসির চাঁদ যখন উঠল, রাফি তখনো জানালার পাশে বসে থাকল। তার চোখে কোনো উচ্ছ্বাস নেই, মনেও নেই কোনো আনন্দের জোয়ার। অথচ সে একটা ছোট ছেলে—মাত্র ১৩ বছর বয়স। ঈদ মানেই তার জন্য নতুন জামা, সেমাইয়ের গন্ধ, আতর আর টুপি পরে মসজিদে যাওয়া। কিন্তু এ বছর সবকিছু যেন থমকে গেছে।

রাফির বাবা, মনসুর আলী, একজন রিকশাচালক। কোভিড পরবর্তী সময় আর দ্রব্যমূল্যের আগুনে সংসার চলছিল অনেক কষ্টে। ছোট একটি ঘরে চারজনের সংসার—রাফি, তার ছোট বোন মালিহা, বাবা আর মা। রাফি বড়, পড়াশোনাতেও ভালো, আর খুব দায়িত্ববান। বাবাকে সাহায্য করতে মাঝে মাঝে সে বাজারে প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করত। কেউ জানত না, একটুখানি ঈদের জামা কেনার টাকা জমাতেই তার এই চেষ্টা।

কিন্তু হঠাৎ করেই বাবা একদিন অসুস্থ হয়ে পড়লেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো, ধরা পড়ল টাইফয়েডের জটিলতা। প্রায় দশ দিনের চিকিৎসায় ঘরে কোনো টাকা রইল না। সেই সঙ্গে চলে গেলো রাফির সব জমানো টাকাও।

ঈদের আগের দিন সন্ধ্যা।

রাফি ছাদে বসে আছে চুপচাপ। চারপাশে ফোটানো ফানুস, ঘরঘর শব্দে বাজছে “রমজানের ওই রোজার শেষে...” গান। পাড়ার ছেলেরা নতুন পাঞ্জাবি পরে নাচানাচি করছে। কেউ কেউ আতশবাজি ফুটাচ্ছে।

মা ছাদে এসে পাশে বসলেন। বললেন, “রাফি, দুঃখ করিস না। তোর বাবা কিছুটা সুস্থ হয়েছে। আল্লাহ্ চাইলে আবার সব ভালো হবে।”

রাফি বলল না কিছু। কেবল বলল, “মা, মালীহার নতুন জামাটা কেমন লেগেছে?”

মা বললেন, “খুব খুশি হয়েছে। তোকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল। জানিস, ঈদের দিন সে তোর সঙ্গেই জামা পরে ছবি তুলতে চায়।”

রাফি মাথা নিচু করল। সে জানত, সে নিজে নতুন জামা পায়নি।


---

আগের দিনের কথা

ঈদের আগের শুক্রবারে রাফি গিয়েছিল পুরাতন বাজারে। কিছু পুরনো পাঞ্জাবি দেখছিল। হঠাৎ চোখে পড়ল একটা হালকা নীল পাঞ্জাবি, বেশ সুন্দর। দাম চাইলো ১২০ টাকা। তার পকেটে তখন মাত্র ৭৫ টাকা।

পাশে দাঁড়ানো এক লোক, হয়তো বুঝতে পেরেছিল তার চোখের ভাষা। সে দোকানদারকে বলল, “বাকি টাকাটা আমি দিচ্ছি। ছেলেটা যেন ঈদের দিনে খুশি থাকতে পারে।”

রাফি অবাক হয়ে তাকিয়েছিল লোকটার দিকে। মুখে দাড়ি, চোখে চশমা, হাসিমুখ। লোকটা শুধু বলেছিল, “তুমি যেন একদিন আরেকজনকে এভাবে সাহায্য করো।”

রাফি জামাটা নিয়েছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখে, মা তার হাতে আরেকটা ছোট প্যাকেট ধরিয়ে দিলেন—মালিহার জামা, যেটা কিনে রেখেছিলেন অনেক আগেই। কিন্তু তখন বাবার ওষুধ কিনতে টাকা ছিল না।

রাফি নিজের জামাটা খুলে রাখল। পরদিন খুব ভোরে উঠে সে জামাটা প্যাকেট করল, আর পাড়ার মুদিদার মামার দোকানে রেখে এল।

বলল, “মামা, কাউকে দিও যাদের দরকার। বলবে, ঈদের উপহার এসেছে একজন বন্ধু থেকে।”


---

ঈদের সকাল

ঈদের সকালে রাফি ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে মালিহাকে নিয়ে মসজিদে গেল। মালিহা হাসিমুখে টুপি পরে নিল, পাঞ্জাবি পরে নাচত নাচত রাফির হাত ধরে বলল, “ভাইয়া, তুমি সবচেয়ে ভালো ভাই। তুমি না থাকলে আমি কখনো নতুন জামা পেতাম না।”

রাফি হেসে মাথায় হাত রাখল। তার চোখে জল জমে গেল, কিন্তু সে লুকিয়ে রাখল।

মসজিদে সবাই নতুন কাপড়ে এসেছে, কেউ কেউ রাফির দিকে তাকিয়ে ভাবল, “এই ছেলেটা নতুন জামা পরেনি?” কিন্তু কেউ কিছু বলল না।

নামাজ শেষে সবাই একে অন্যকে কোলাকুলি করল। তখন সেই লোক, যিনি পুরাতন বাজারে পাঞ্জাবির দাম দিয়েছিলেন, আবার রাফিকে দেখলেন।

ভিড় ঠেলে কাছে এলেন। জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি সেই ছেলেটা?”

রাফি মাথা নিচু করে বলল, “জি…”

লোকটা বললেন, “আজ সকালে এক ছেলে আমার কাছে এসে একটা জামা উপহার দিয়ে গেল, নাম বলেনি। আমি বুঝে গেছি, সেটা তুমি।”

রাফি চমকে উঠল।

লোকটা বললেন, “তুমি জানো, ঈদ মানে শুধু নিজের জন্য নতুন কিছু পরা নয়। ঈদ মানে কাউকে নিজের আনন্দে শামিল করা। তুমি আজ সেটাই করেছো। তুমি আজ সত্যিকারের ঈদ পালন করেছো।”

তিনি রাফির পিঠে হাত রাখলেন। তার চোখে জল, কিন্তু মুখে হাসি।


---

ঈদের বিকেল

ঈদের বিকেলে রাফি বাড়ির দরজার পাশে বসে ছিল। হঠাৎ একটি ছেলেমেয়ে, বেশ ভাঙা জামা পরে, দোকানের দিক থেকে আসছে। ওরা দোকানদারের কাছ থেকে একটি প্যাকেট পেল। খুলেই খুশিতে চিৎকার করে উঠল—একটা হালকা নীল পাঞ্জাবি!

ছেলেটা বলল, “এইটা জীবনে প্রথম নতুন জামা পেলাম! কইছে, কেউ একজন উপহার পাঠাইছে ঈদের দিনের জন্য!”

রাফি দূর থেকে তাকিয়ে থাকল। তার চোখে অশ্রু, কিন্তু মনের ভেতর কোথাও একটা অদ্ভুত শান্তি। যেন সে সত্যি ঈদের সবচেয়ে সুন্দর উপহার পেয়েছে।


---

গল্পের শেষ নয়, শুরু

রাফির মা পাশে এসে বললেন, “তুই জানিস, তোকে নিয়ে আমি গর্বিত। তুই আমার ঈদের সবচেয়ে বড় আনন্দ।”

রাফি মাথা নিচু করে বলল, “আমি শুধু চেয়েছিলাম, কেউ যেন খালি হাতে ঈদের দিন না কাটায়, মা।”

সেদিন রাতে আকাশে ঈদের চাঁদ জ্বলজ্বল করছিল। রাফি তার ছোট্ট খোলা ডায়েরিতে লিখল—

> “আজ নতুন জামা পরিনি,
তবু মনে হলো, আমি সবচেয়ে সাজানো ছেলে।
কারণ ঈদ মানে শুধু জামা নয়,
ঈদ মানে—মনের নতুন আলো।”




---

শেষ কথা

ঈদ কেবল একটি উৎসব নয়। এটি এমন একটি মুহূর্ত, যেখানে মানুষ নিজের ভেতরের ভালোবাসা, দয়া আর আত্মত্যাগকে জাগিয়ে তোলে। ঈদের আনন্দ কেবল নতুন জামা, মিষ্টি খাবার বা আতশবাজিতে সীমাবদ্ধ নয়। এর সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হলো—অন্যকে খুশি করতে পারার ক্ষমতা।

রাফির মতো হাজারো শিশু হয়তো এবারো নতুন জামা পায়নি। কিন্তু যদি আমরা একটু খেয়াল করি, একটু ভাগ করে নিই, তবে ঈদের আলো ছড়িয়ে পড়তে পারে সবখানে।

Anarul Slam  مشترکہ a  پوسٹ
1 h

Hi

Kantha Originals  اپنی پروفائل تصویر تبدیل کر دی
3 گھنٹے

image
Anarul Slam  مشترکہ a  پوسٹ
1 h

Hi

Kantha Originals  اپنی پروفائل تصویر تبدیل کر دی
3 گھنٹے

image
5 گھنٹے ·ترجمہ کریں۔

My Free Fair ID................,.........................................................................................................................................................................................................................

image
5 گھنٹے ·ترجمہ کریں۔

Free Fair red
mon........................,................................................................................................................................................................................................................

image
8 گھنٹے ·ترجمہ کریں۔
✨🌸…!🖤🥀
-স্বার্থ যেখানে শেষ,
– বদনাম সেখান থেকে শুরু…!! 🙂🥀
🖤•─┼┼•🖤
000●━━━━━━━━━━━━● 042
⇆ㅤㅤㅤㅤ. ◁ㅤㅤ❚❚ㅤㅤ▷ㅤㅤㅤㅤ↻