অধ্যায় ৪: আগ্রার অন্ধকার রাত
"রাত্রি কখনো শুধু ঘুম নয়—এ এক নিঃশব্দ বিদ্রোহ, ছায়ায় বোনা বিপ্লব।"
— আসাফ খানের গোপন নোটবই
🌑 আগ্রা, রাত — সিংহাসনের সন্ধ্যার আগে
আগ্রার আকাশ কালো মেঘে ঢাকা।
দূর থেকে বাজ পড়ার শব্দ শোনা যায়।
আলো নিভে গেছে বেশিরভাগ প্রাসাদে—কেবল সিংহাসন কক্ষের আশপাশে জ্বলছে অসংখ্য প্রদীপ।
শাহরিয়ার, নূরজাহানের জামাতা, রাজবেশে সজ্জিত।
তার কণ্ঠে কিছুটা কাঁপন, চোখে জয় পাবার লোভ।
আজকের রাতে সে ঘোষণা করতে যাচ্ছে: “আমি মুঘল সম্রাট।”
কিন্তু তার মুখে হাসি নেই।
কারণ আজ সকালে কেউ তার দরজার বাইরে ফেলে গেছে এক পুঁথির খণ্ড—
সেখানে লেখা ছিল:
“কে রাজা? যার তলোয়ার?
না যার তলোয়ারে হাত না দিয়েও তাকে নাচাতে পারে?”
🕯️ ছায়ার জাল বিস্তার
দূরে, হারেমের পুরনো অংশে বসে গুলনওয়াজ পায়ের আঙুলে মাটি ঘষছেন।
তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে মালতী।
মালতী জানাল,
“প্রহরীদের একাংশ এবার আমাদের।
আসাফ খানও স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—ঘোষণার আগে এক ঝড় উঠবে।”
“ঝড় তো একটাই যথেষ্ট,” গুলনওয়াজ ধীরে বলেন।
“কিন্তু আমি চাই আকাশই বদলে যাক।
আজ রাতে কেবল ঘোষণাই থামবে না—বীজ বোনা হবে সাম্রাজ্য পরিবর্তনের।”
👤 আসাফ খানের কৌশল
সন্ধ্যার ঠিক আগে, আসাফ খান ডেকে পাঠান নূরজাহানের পুরনো সেনাপতি মির্জা রফিককে।
তিনি বলেন,
“সিংহাসন প্রস্তুত। কিন্তু আজকের ঘোষণার আগে দরবারে কেউ আসবে না।
শুধু আমি, আর কিছু ‘বিশেষ অতিথি’।
আর তুমি... বাইরের ফটকে অপেক্ষা করো।
যদি কারও নাম শুনো—‘আলতামির’, তাহলে দরজা খুলে দেবে। তা না হলে নয়।”
রফিক কিছু না বুঝেই মাথা নাড়ল।
আসলে, ‘আলতামির’—এটি ছিল এক কোড নাম।
খুররমের ছদ্মনামে ফেরার সংকেত।
⚔️ খুররমের গোপন প্রত্যাবর্তন
রাত দশটা। আগ্রার দক্ষিণ গেটের সামনে একটি সাধারণ কনভয় এসে দাঁড়ায়।
ঘোড়া ক্লান্ত, মানুষ নিঃশব্দ।
সবাই চেনা—কিন্তু কেউ চিনতে পারে না।
অগ্রভাগে এক মাঝবয়সি পুরুষ, যার মুখ ঢাকা, বললেন:
“আমি আলতামির...। আগ্রায় প্রবেশের অনুমতি চাই।”
দ্বার খুলে যায়।
💥 সিদ্ধান্তহীনতার মুহূর্ত
সিংহাসন কক্ষ।
নূরজাহান উঠে দাঁড়িয়েছেন।
“এবার ঘোষণা দিন,” তিনি বলেন।
কিন্তু ঠিক তখনই প্রবেশ করে আসাফ খান, তাঁর সঙ্গে মুখোশ পরা একটি দল।
শাহরিয়ার ভীতস্বরে বলে:
“এরা কারা?”
আসাফ খান হাসলেন।
“এরা?
এরা ইতিহাসের লেখক।”
তিনি মাথা ঘুরিয়ে বলেন,
“সম্রাট খুররম, আপনিই এখন উঠে দাঁড়ান।”
সবাই ঘুরে তাকায়—একটি মুখোশ সরে যায়।
খুররম দাঁড়িয়ে আছেন, নিঃশব্দ, কিন্তু চোখে আগুন।
নূরজাহান এক পা পিছিয়ে যান।
আর গুলনওয়াজ—দূরে হারেমের জানালার ফাঁক থেকে তা দেখেন।
তাঁর চোখে কোনও হাসি নেই, কিন্তু তাঁর দৃষ্টিতে সেই নির্ভার স্বস্তি—
তিনি জানেন, যুদ্ধ শুরু হয়েছে ঠিকমতো।
✍️ অধ্যায় শেষ
আকাশে বজ্রপাত হয়।
প্রাসাদ কাঁপে, কিন্তু ভেঙে পড়ে না।
কারণ সত্যিকারের পতন শুরু হয় ভেতর থেকে—যখন এক নারী ছায়া থেকে রাজ্য বদলে দেন।
🔮 পরবর্তী অধ্যায়: “সিংহাসনের দাম”
খুররম কি পারবেন নতুন ক্ষমতাকে ধারণ করতে?
নূরজাহান কী এখন থেমে যাবেন?
আর গুলনওয়াজ—তিনি কি কেবল ছায়া থাকবেন, নাকি এবার এগিয়ে আসবেন আলোয়?
বলুন, কি লেখব এবার? চালিয়ে দেবো অধ্যায় ৫? ✍️