🧭 ১. রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সংবিধান সংকট
২০২৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারত মুহূর্তে চলে যাওয়ার ফলে সংবিধানগত সংকট সৃষ্ট হয়েছে। সেই থেকে গত ৮ আগস্ট থেকে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা – অর্থাৎ সরকারের দায়িত্বে আছেন ।
যদিও নতুন সংবিধান গঠনের কথাও বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময় এখনো নির্ধারণ হয়নি ।
সংবিধি-সংক্রান্ত এই বেম্যাচে নির্বাচনের সময়সূচি নির্ভর করছে দেশীয় রাজনৈতিক ও সামরিক স্থিতিশীলতার ওপর; তবে সংসদে স্থায়িত্ব না থাকায় হতাশার ছাপও রয়েছে।
---
🗳️ ২. নির্বাচন ও রাজনীতি
ডিসেম্বরে নির্বাচন চাওয়ার রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে, বিশেষ করে বিএনপির পক্ষ থেকে এবং সেনাবাহিনীর উদ্বেগও প্রকাশ পেয়েছে ।
বিরোধীদের দাবি, সংবিধান সংশোধন ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে আগের মত নির্বাচনে অংশ কিন্তু কঠিন হতে পারে।
---
💸 ৩. অর্থনীতি ও বৈদেশিক লেনদেন
রফতানি ও প্রবাসী আয় বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে উন্নতি হয়েছে – বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী আর্থিক ভারসাম্যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে ।
তবে অনলাইনে জানা গেছে, ভ্যাট বৃদ্ধিও হচ্ছে, ফলে দুর্ভিক্ষের ভীতি থেকে মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না; দামের ওঠা–নামার ফলে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বারছে ।
---
🦠 ৪. স্বাস্থ্য ও করোনা পরিস্থিতি
সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ আবারও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পিসিআর পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্ত হলো ২ জন, মৃত্যু ১ জন ।
স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং রোগপ্রতিরোধ গাইডলাইনগুলো পুনরায় মেনে চলতে বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন।
---
🔐 ৫. নিরাপত্তা ও সহিংসতা
সাম্প্রতিক Cox’s Bazar-এ বিমানবাহিনীর একটি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি এক স্থানীয় ব্যবসায়ী নিহত এবং আহত হয়েছেন – সংঘর্ষের পিছনে ভূমি-দাঙ্গা অন্যতম কারণ ।
২০২৪ সালের “July Revolution” পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘসহ অনেক প্রতিবেদন তুলে ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের (বিশেষ করে হিন্দু, আহমদিয়া) বাড়ি, মন্দিরে হামলার উল্লেখ রেকর্ড করেছে ।
“Operation Devil Hunt” নামক সরকারি অভিযান শুরু করে যারা দাঙ্গায় এবং সহিংসতায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।
---
🔍 সারসংক্ষেপ
ক্ষেত্র বর্তমান অবস্থা
রাজনীতি অন্তর্বর্তী সরকার কোন দৃঢ়তা পায়নি; নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ এখনো অনিশ্চিত
অর্থনীতি রফতানি ও প্রবাসী আয় বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধি ও ভ্যাট বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ব্যস্ততা বৃদ্ধি
স্বাস্থ্য করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর পুনরুত্থান ঘটেছে; স্বাস্থ্যজনিত প্রস্তুতি জরুরি
নিরাপত্তা সাম্প্রতিক হামলা ও সহিংসতার ঘটনা দেশজুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি; সরকারের পদক্ষেপ শুরু হয়েছে
---
✅ করণীয় পরামর্শ
1. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার নিয়ে সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে সমঝোতা ও সংলাপ প্রয়োজন।
2. অর্থনৈতিক নীতিমালা: ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব নিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক সমর্থন, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শ্রেণির মানুষের জন্য উপযোগী নয় এমন নীতি পুনর্বিবেচনা করা সমীচীন।
3. স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ: করোনা মোকাবিলায় টিকা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রচার অব্যাহত রাখা জরুরি।
4. নিরাপত্তা ও সম্প্রদায় সুরক্ষা: সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামাজিক সহিষ্ণুতা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির পরিকল্পনা প্রয়োজন।
---
বর্তমানে বাংলাদেশের সমগ্র পরিস্থিতি দেখতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক প্রভাব, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তা সংকটের মিশ্র চিত্রে ঘেরা। তবে রফতানি ও বৈদেশিক রিজার্ভে উন্নতি আশা জাগাচ্ছে। শাসনব্যবস্থার কর্তাদের টেকসই সমাধান ও সংহত সচেতনতা গ্রন্থন করলে এই সংকট মোকাবেলায় সুসংগঠিত এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
🧭 রাজনৈতিক অস্থিরতা – অতিরিক্ত তথ্য
সেনা বাহিনীর ভূমিকা: সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে মতপার্থক্য বেড়েছে। কিছু কর্মকর্তা বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করছেন না।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার: তিনি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হলেও, দেশের অভ্যন্তরে তাকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক চলমান। বিশেষ করে আওয়ামী লীগপন্থী একটি গোষ্ঠী তার নেতৃত্বের বিরোধিতা করছে।
প্রস্তাবিত সংবিধান: খসড়া সংবিধান তৈরির জন্য ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে কিছু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞও যুক্ত রয়েছেন।
---
🗳️ নির্বাচন – অতিরিক্ত তথ্য
নির্বাচনী সম্ভাব্য সময়: নভেম্বর বা ডিসেম্বরের দিকে একটি ‘সীমিত পর্যায়ের নির্বাচন’ হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বিরোধী দলের অংশগ্রহণ: বিএনপি, গণফোরাম, এবং নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনশক্তি বাংলাদেশ’ একটি ঐক্যফ্রন্ট তৈরির প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
জাতিসংঘের ভূমিকা: জাতিসংঘ বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা ও পর্যবেক্ষকের দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।
---
💰 অর্থনীতি – অতিরিক্ত তথ্য
রেমিটেন্স প্রবাহ: ২০২৫ সালের প্রথম ৫ মাসে প্রায় ১১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা বিগত ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রিজার্ভ অবস্থা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বর্তমানে প্রায় ২৯.৩ বিলিয়ন ডলার, যা কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও স্থিতিশীল নয়।
মূল্যস্ফীতি: চলতি বছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৯.২%, যার ফলে চাল, তেল, ডাল, পেঁয়াজসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।