প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ: টিকে থাকার জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত
প্রাকৃতিক পরিবেশ হলো পৃথিবীর সেই আশেপাশের বস্তুসমূহ যা মানুষ সৃষ্টি করেনি কিন্তু যার উপর মানুষের জীবন নির্ভর করে। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে গাছপালা, পানি, বাতাস, মাটি, প্রাণীকুল এবং আবহাওয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের খাদ্য, পানীয় জল, বাসস্থান ও বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদান সরবরাহ করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আজ মানুষের অজস্র কার্যকলাপের কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বন উজাড়, শিল্পায়ন, যানবাহনের ধোঁয়া, নদী-নালা দুষণ, প্লাস্টিক বর্জ্য, অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ ইত্যাদি প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, মরুকরণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। বহু প্রজাতির প্রাণী絶প্রায় বিলুপ্তির পথে। পরিবেশ দূষণের ফলে মানবদেহে নানা রোগব্যাধি বাড়ছে, যেমন—শ্বাসকষ্ট, ক্যানসার, ত্বকের রোগ ইত্যাদি।
এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের পরিবেশ সচেতন হতে হবে। বৃক্ষরোপণ ও বন সংরক্ষণ, নদী ও জলাশয় পরিষ্কার রাখা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করা, যানবাহনের পরিবর্তে হাঁটা বা সাইকেল চালানো, শিল্প-কারখানায় পরিশোধন প্ল্যান্ট স্থাপন করা প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে।
পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক কর্তব্য। কারণ একটি দূষণমুক্ত ও সুস্থ পরিবেশের মধ্যেই সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর জীবন গড়ে ওঠে। তাই এখনই সময়—সবাই মিলে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসার। আমরা যদি আজ সচেতন হই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দিতে পারব।
উপসংহার:
প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তি। একে রক্ষা না করলে আমাদের টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই আসুন, আমরা সকলে মিলে প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীল হই, পরিবেশবান্ধব জীবনধারা গড়ে তুলি এবং একটি সবুজ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার অঙ্গীকার করি।