আবু তালহা মদিনার একজন ধনবান লােক, তার প্রচুর স্বর্ণ-রূপা, ক্ষেতখামার ও গবাদি পশু রয়েছে; কিন্তু তিনি তখনও ইসলাম গ্রহণ করেননি। তিনি জানতে পারলেন যে, উম্মে সুলাইম রা. তালাকপ্রাপ্তা হয়েছেন, তাঁর স্বামী নেই। তাই তিনি উম্মে সুলাইম রা.-এর নিকট বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসলেন। উম্মে সুলাইম রা. তাঁকে বললেন, হে আবু তালহা! তুমি এমন পুরুষ যার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া যায় না; কিন্তু আমার মাঝে এবং তােমার মাঝে একটা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আবু তালহা বললাে, সেই প্রতিবন্ধকতাটা কী? আমি তােমার মহর হিসেবে তােমাকে টাকা-পয়সা স্বর্ণ-রৌপ্য সব দেবাে। উম্মে সুলাইম রা. বললেন, আমি মুসলিম আর তুমি কাফের, তাই আমি তােমাকে বিয়ে করতে পারছি না, তবে তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ কর তাহলে আমি তােমাকে বিয়ে করতে পারি। আবু তালহা বললাে, না আমি আমার ধর্মের উপরই থাকবাে। উম্মে সুলাইম রা, তখন বললেন, হে আবু তালহা! তােমার কি লজ্জা করে না যে, তুমি কাঠের তৈরি মূর্তির পূজা করাে অথচ তা তৈরি করে অমুক ব্যক্তির এক হাবশি গােলাম, অর্থাৎ তুমি সেই ইলাহের পূজা করাে যার কাছে তােমার দরিদ্রতার সময়, কষ্টের সময়, অসুস্থতার সময় আশ্রয় প্রার্থনা করাে এবং যার কাছে হাত জোর করে কেঁদে কেঁদে নিজের প্রয়ােজনের কথা বল অথচ তা একটি কাঠের তৈরি মূর্তি বৈ কিছু না, যা উৎপন্ন হয় মাটি থেকে আর তা খােদাই করে নির্দিষ্ট একটা আকৃতিতে তৈরি করে অমুক গােত্রের অমুকের হাবশি গােলাম!! তােমার কি একটু লজ্জাও করে না যে, তুমি যার পূজা করাে তা মাটি থেকে উৎপন্ন কাঠ থেকে খােদাই করে তৈরি করা একটা মূর্তি, যা বানিয়েছে এক হাবশি গােলাম। আবু তালহা বললাে, হাঁ সবই ঠিক আছে; কিন্তু আমি তােমাকে মহর হিসেবে অনেক সম্পদ দিবাে। উম্মে সুলাইম রা, তাকে বললাে, হে আবু তালহা! আমি তােমার কাছে মহর হিসেবে কোনাে টাকা পয়সাই চাই না এবং তােমার কাছে কখনাে কোনাে টাকা পয়সা চাবােও না; বরং তুমি ইসলাম গ্রহণ করাে, আমি তােমাকে বিয়ে করবাে এবং তােমার ইসলাম গ্রহণটাই হবে আমার মহর। এরপর আবু তালহা ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং উম্মে সুলাইম রা.কে বিয়ে করলেন।