“পলাতক ভালোবাসা”
কাফি ছিল এলাকার পরিচিত নাম—সাহসী, সৎ, কিন্তু কিছুটা একরোখা। সে সহজে কাউকে বিশ্বাস করত না। একদিন হাট থেকে ফিরছিল, রাস্তায় দেখতে পেল এক মেয়ে পাথরের পাশে বসে কাঁদছে।
কাছে গিয়ে জানতে পারল, মেয়েটার নাম মায়া। সে পালিয়েছে বাড়ি থেকে। কারণ পরিবার জোর করে বিয়ে দিচ্ছিল এক বয়স্ক লোকের সঙ্গে।
কাফি বলল, “তুই এখানে একা? কোথায় যাবি?”
মায়া বলল, “কিছু জানি না। শুধু পালাতে চেয়েছিলাম।”
কাফি সিদ্ধান্ত নিল, যতদিন না মায়া নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে তাকে আশ্রয় দেবে। নিজের ছোট্ট টিনশেড ঘরের একপাশে জায়গা করে দিল।
প্রথমদিকে খুব অস্বস্তি হতো দুজনের। মায়া চুপচাপ থাকত, কাফি রাতে বাইরে ঘুমাত। কিন্তু সময় বদলায়, মন বদলায়।
মায়া আস্তে আস্তে কথা বলতে শুরু করে, রান্না করে, কাফিকে চা দেয়, গল্প করে। কাফিও বুঝতে পারে তার অভ্যন্তরে একটা আলাদা টান তৈরি হয়েছে।
একদিন কাফি বলল, “তুই চাইলে আমি তোর পরিবারে কথা বলব।”
মায়া বলল, “তুই তো কিছু চাস না। কেন এত ভালো?”
কাফি মৃদু হেসে বলল, “কারণ আমি তোকে ভালোবাসি। কিন্তু তোর পছন্দটাই আমার বড়।”
মায়া সেই রাতে অনেকক্ষণ চুপ ছিল। তারপর বলল, “তুই আমার ভালোবাসার প্রথম আশ্রয়, আমি কোথাও যাব না আর।”
সেই পলাতক মেয়ে, মায়া, আজ কাফির সংসারের মায়া হয়ে গেছে।