বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সাথে বাস করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান। এটি আমাদের গৌরব যে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ এক জাতি। আমরা বাঙালি জাতি, বাংলাদেশিরা খুব সচেতন ভাবেই বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতা আমাদের আদর্শ। পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা আমাদের ধর্ম। ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১-এ বাঙালি জাতি তাদের অসম্প্রদায়িক চেতনার স্বাক্ষর রেখেছে। তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর একতাকে চিরভাস্বর করেছে। মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, খাসিয়া, সাঁওতাল নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকটি উৎসবে বাঙালি জাতি এক হয়ে যায়। পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা, বড়দিন, বৌদ্ধপূর্ণিমা, বৈসাবি আর জাতীয় দিবসগুলোতে সাম্প্রদায়িক পরিচয় ভুলে এক জাতি হিসেবে সকলে সমান অংশগ্রহণ করে। কিন্তু এই সম্প্রীতির মধ্যেও কিছু কিছু ধর্মান্ধ মানুষের কারণে এই দেশেও কখনো কখনো আঘাত হেনেছে সাম্প্রদায়িকতা। ’৯০-র দশকে ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ফলে এদেশেও দাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সময়েও ঘটেছে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা। কিন্তু তার পরেও সবকিছু ছাপিয়ে বিশ্বে আমরা অসম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে পরিচিত।