7 w ·Translate

আমাদের পৃথিবী: নীল গ্রহের এক বিস্তারিত চিত্র
আমাদের সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ পৃথিবী, যা নীল গ্রহ নামেও পরিচিত, প্রাণের এক অসাধারণ আশ্রয়স্থল। এর অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলি একে মহাবিশ্বের অন্যান্য পরিচিত গ্রহ থেকে আলাদা করেছে। প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে গঠিত এই গ্রহটি একটি জটিল এবং গতিশীল ব্যবস্থা, যেখানে ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া, জলবায়ু, এবং জীবনের মধ্যে এক অবিচ্ছিন্ন মিথস্ক্রিয়া বিদ্যমান।
পৃথিবীর গঠন ও বৈশিষ্ট্য
পৃথিবী মূলত চারটি প্রধান স্তর নিয়ে গঠিত: অন্তঃস্থ কেন্দ্র (Inner Core), বহিঃস্থ কেন্দ্র (Outer Core), ম্যান্টল (Mantle), এবং ভূত্বক (Crust)।
* অন্তঃস্থ কেন্দ্র: এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ভেতরের অংশ, যা মূলত কঠিন লোহা এবং নিকেল দ্বারা গঠিত। এর তাপমাত্রা সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার কাছাকাছি, প্রায় 5,200° সেলসিয়াস। প্রচলনের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন হয়, যা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরির জন্য অপরিহার্য।
* বহিঃস্থ কেন্দ্র: এই স্তরটি তরল লোহা এবং নিকেল দিয়ে গঠিত। অন্তঃস্থ কেন্দ্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান এই তরল স্তরটি পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে, যা সৌর বায়ু (solar wind) থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে এবং বায়ুমণ্ডলকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
* ম্যান্টল: ভূত্বকের নিচে প্রায় 2,900 কিলোমিটার পুরু এই স্তরটি অর্ধ-কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত। ম্যান্টলের অভ্যন্তরে শিলার ধীরগতির পরিচলন (convection) টেকটোনিক প্লেটগুলির (tectonic plates) নড়াচড়ার জন্য দায়ী, যা ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি এবং পর্বতমালা সৃষ্টির মূল কারণ।
* ভূত্বক: এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বাইরের এবং পাতলা স্তর, যা মহাদেশীয় (continental) এবং মহাসাগরীয় (oceanic) দুটি ভাগে বিভক্ত। মহাদেশীয় ভূত্বক গ্রানাইট পাথরের মতো হালকা শিলা দিয়ে গঠিত এবং মহাসাগরীয় ভূত্বক ব্যাসল্ট পাথরের মতো ঘন শিলা দিয়ে গঠিত। এই স্তরটি আমাদের পরিচিত সমস্ত ভূমি এবং সমুদ্র তলকে ধারণ করে।
পৃথিবীর গড় ব্যাসার্ধ প্রায় 6,371 কিলোমিটার। এর পৃষ্ঠের প্রায় ৭১% জল এবং ২৯% ভূমি দ্বারা আবৃত। এই বিশাল জলরাশি পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বায়ুমণ্ডল ও জলবায়ু
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন গ্যাসের একটি জটিল মিশ্রণ, যার প্রধান উপাদান হলো নাইট্রোজেন (প্রায় ৭৮%) এবং অক্সিজেন (প্রায় ২১%)। এছাড়া আর্গন, কার্বন ডাই অক্সাইড, নিয়ন, এবং অন্যান্য গ্যাসও স্বল্প পরিমাণে উপস্থিত। এই বায়ুমণ্ডল সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি (UV rays) থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে এবং গ্রিনহাউস প্রভাবের (greenhouse effect) মাধ্যমে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাসযোগ্য রাখতে সাহায্য করে।
বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর রয়েছে:
* ট্রপোস্ফিয়ার (Troposphere): এটি সর্বনিম্ন স্তর, যেখানে আবহাওয়ার সমস্ত ঘটনা ঘটে।
* স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার (Stratosphere): এই স্তরে ওজোন স্তর (ozone layer) রয়েছে, যা অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে।
* মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere): উল্কাপিণ্ড এই স্তরে এসে পুড়ে যায়।
* থার্মোস্ফিয়ার (Thermosphere): এটি সবচেয়ে উপরের স্তর, যেখানে অরোরা (aurora) দেখা যায়।
* এক্সোস্ফিয়ার (Exosphere): এটি বায়ুমণ্ডলের শেষ প্রান্ত, যা মহাকাশের সাথে মিশে যায়।
পৃথিবীর জলবায়ু সূর্যরশ্মির বন্টন, মহাসাগরীয় স্রোত, বায়ু প্রবাহ, এবং ভূমিরূপের উপর নির্ভরশীল। এর ফলে পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের জলবায়ু অঞ্চল যেমন - ক্রান্তীয়, নাতিশীতোষ্ণ, এবং মেরু অঞ্চল দেখা যায়, যা বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্র্যকে সমর্থন করে।
প্রাকৃতিক সম্পদ ও বাস্তুতন্ত্র
পৃথিবী অসংখ্য প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, যা মানব সভ্যতার বিকাশে অপরিহার্য। এর মধ্যে রয়েছে:
* জল: নদী, হ্রদ, মহাসাগর এবং ভূগর্ভস্থ জল - পানীয় জল, কৃষি, এবং শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
* ভূমি: কৃষি, বাসস্থান, এবং অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয়।
* খনিজ সম্পদ: লোহা, তামা, সোনা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল - শিল্প ও শক্তির উৎস।
* বায়ু: শ্বাস-প্রশ্বাস এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস (যেমন বায়ু শক্তি)।
* জীববৈচিত্র্য: উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বিভিন্ন প্রজাতি, যা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখে।
পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরণের বাস্তুতন্ত্র (ecosystems) বিদ্যমান, যেমন - বনভূমি, মরুভূমি, তৃণভূমি, মহাসাগর, নদী, এবং পর্বত। প্রতিটি বাস্তুতন্ত্রে নির্দিষ্ট উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি একে অপরের সাথে এবং পরিবেশের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা তৈরি করে। এই বাস্তুতন্ত্রগুলি পৃথিবীর জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ, জল চক্র, এবং পুষ্টি চক্র বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মহাজাগতিক অবস্থান ও গতি
পৃথিবী সূর্যের চারপাশে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে আবর্তন করে, যা প্রায় ৩৬৫.২৫ দিনে সম্পন্ন হয় এবং এই সময়কালকে এক বছর বলা হয়। পৃথিবীর অক্ষ তার কক্ষপথের সমতলের সাপেক্ষে ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে, যার কারণে ঋতু পরিবর্তন ঘটে। যখন পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে থাকে, তখন সেখানে গ্রীষ্মকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল বিরাজ করে, এবং এর বিপরীতও সত্য।
এছাড়াও, পৃথিবী তার নিজের অক্ষের উপর ঘোরে, যা প্রায় ২৪ ঘন্টায় সম্পন্ন হয় এবং এর ফলে দিন ও রাত হয়। এই ঘূর্ণনের গতি নিরক্ষরেখায় প্রায় ১,৬৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।
পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ হলো চাঁদ, যা পৃথিবীর চারপাশে প্রায় ২৭.৩ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। চাঁদ পৃথিবীর জোয়ার-ভাটা এবং অক্ষীয় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মানবজাতির প্রভাব ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
মানবজাতি, বিশেষ করে শিল্প বিপ্লবের পর থেকে, পৃথিবীর উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, শিল্পায়ন, নগরায়ন, এবং জীবাশ্ম জ্বালানির অত্যধিক ব্যবহার জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, বন উজাড়, এবং জীববৈচিত্র্য

image

AFace1 লাইক, কমেন্ট, পোস্ট করে ইনকাম করুন। এই ভিডিওটি যদি আপনি দেখেন তাহলে আর কোথাও কারো কাছে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন হবে না . কিভাবে কাজ করবেন কিভাবে উইথড্রো করবেন এবং কিভাবে বেশি টাকা ইনকাম করবেন .এখানে কোন ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হয় না .শুধু আপনি আপনার সময় দিন আর এরা আপনাকে টাকা দেবে.

3 hrs ·Translate

পরিশেষে বলা যায়, লজ্জাপতি গাছ একটি সহজলভ্য অথচ অত্যন্ত কার্যকর ঔষধি উদ্ভিদ। তবে যেকোনো প্রাকৃতিক ঔষধ ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উত্তম, বিশেষ করে যদি আপনি আগে থেকে কোনো ওষুধ সেবন করেন বা স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে।

3 hrs ·Translate

ত্বকের নানা রোগ যেমন একজিমা, চুলকানি বা ফোঁড়ার ক্ষেত্রেও এটি দারুণ কার্যকর। পাতার পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করলে আরাম মেলে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমে যায়।

3 hrs ·Translate

এই গাছ ঘুমের সমস্যা ও মানসিক অস্থিরতা কমাতেও সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, লজ্জাপতিতে সেরোটোনিন নামক উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কে প্রশান্তি এনে ঘুমের উন্নতি ঘটায়।

3 hrs ·Translate

হেমোরয়েড বা অর্শ রোগেও লজ্জাপতির ব্যবহার রয়েছে। এর শুকনো পাতা গুঁড়ো করে দিনে দু’বার খেলে রক্ত পড়া কমে এবং ব্যথা উপশম হয়। একইসাথে, পাইলসের জন্য বাহ্যিক প্রয়োগেও পাতার পেস্ট ব্যবহার করা হয়।