ইয়াজুজ ও মাজুজ (يَأْجُوج وَمَأْجُوج)—ইসলামিক বিশ্বাস অনুযায়ী, তারা হলো এমন একটি জাতি বা সম্প্রদায় যারা কিয়ামতের আগমনের অন্যতম বড় নিদর্শন হিসেবে পৃথিবীতে ব্যাপক ফিতনা ও ধ্বংস চালাবে। এদের বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে বর্ণনা পাওয়া যায়।
---
📜 কুরআনের আলোকে ইয়াজুজ-মাজুজ:
🔹 সূরা কাহফ (আয়াত 94-98):
> "তারা বলল, হে যুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ এ দেশে অনর্থ সৃষ্টি করছে, আমরা কি আপনার জন্য একটা খরচ নির্ধারণ করবো, যাতে আপনি আমাদের ও তাদের মাঝে একটা প্রাচীর নির্মাণ করে দেন?"
যুলকারনাইন তাদের মাঝে একটি প্রাচীর নির্মাণ করেন, যা এখনো পর্যন্ত তাদের পৃথিবীতে বের হওয়া থেকে আটকায় রাখছে। তবে কিয়ামতের আগে আল্লাহর ইচ্ছায় সেই প্রাচীর ধ্বংস হয়ে যাবে।
🔹 সূরা আম্বিয়া (আয়াত 96):
> "যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং তারা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসবে…"
---
📚 হাদিসে ইয়াজুজ-মাজুজ:
হজরত নওয়াস ইবনে সামান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন—
> "আল্লাহ ঈসা (আ.)-কে ওহি পাঠাবেন, তিনি বলবেন: আমি এমন এক জাতি বের করে দিয়েছি যাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার শক্তি তোমাদের নেই…"
(সহীহ মুসলিম, হাদিস: 2937)
---
🧬 ইয়াজুজ-মাজুজ কারা?
অনেকে মনে করেন তারা প্রাচীন কোনও বর্বর জাতি (যেমন: তাতার, মঙ্গোল) ছিল।
আবার কেউ কেউ বলেন, তারা এখনো গোপন কোনো অঞ্চলে আটকে আছে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ধারিত সময়েই বের হবে।
---
⚔️ তাদের আগমনের লক্ষণ:
1. যুলকারনাইনের নির্মিত প্রাচীর ধ্বংস হবে।
2. তারা দলে দলে ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীতে।
3. দুনিয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।
4. আল্লাহ তাদের এক বিশেষ কীট বা অসুস্থতার মাধ্যমে ধ্বংস করবেন।
---
📍 তারা কোথায় আছে?
কুরআন বা হাদিসে নির্দিষ্টভাবে তাদের অবস্থান বলা হয়নি। কিন্তু "প্রাচীর", "উঁচু অঞ্চল", "প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসা" ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে ধারণা দেওয়া হয়েছে তারা কোনো পাহাড় বা গুহার পেছনে আছে।
---