---
✨ পর্ব ৬: ভালোবাসার শুরু
সেদিনের সেই বিকেলের পর থেকে সব কিছুই যেন অন্যরকম হয়ে গেল। মিম আর রাহাতের সম্পর্ক আর বন্ধুত্বের গণ্ডিতে রইল না। দুজনেই জানত, তারা এখন আর কেবল বন্ধু নয়। তারা পরস্পরের।
কলেজে ঢুকেই মিমকে দেখে রাহাতের চোখে যে আলোর ঝিলিক ফুটত, সেটা মিম এখন টের পেত। মিমের হাসি দেখেই রাহাত বুঝে যেত তার মন খারাপ আছে কিনা। মিমও রাহাতকে ছাড়া যেন এক মুহূর্তও স্বাভাবিক থাকতে পারত না।
একদিন রাহাত মিমকে বলল,
— “চল, আজ তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাই।”
মিম অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,
— “কোথায়?”
— “আমাদের ভালোবাসার প্রথম ঠিকানায়।”
সেদিন সন্ধ্যায় তারা রিকশায় করে শহরের এক চুপচাপ লেকপারে এল। চারপাশে গাছ, বাতাসে শীতলতা। লেকের জলে চাঁদের আলো পড়ে চিকচিক করছিল। দুজনে পাশাপাশি বসে রইল। মিমের চুলে বাতাস খেলা করছিল। রাহাত আস্তে করে মিমের হাত ধরল।
— “কেমন লাগছে?”
মিম হাসল,
— “তোমার পাশে থাকলে সব জায়গাই ভালো লাগে।”
রাহাত মিমকে লক্ষ করছিল। তার চোখে এই মেয়েটা যেন এক পৃথিবী। আর মিম বুঝতে পারছিল, রাহাতের কাঁধে হেলিয়ে দিলে আর কোনো কষ্ট তাকে ছুঁতে পারবে না।
এরপর থেকে তাদের দিনগুলো একসাথে কাটতে লাগল। সকালে কলেজে দেখা, দুপুরে ক্যান্টিনের চা, বিকেলে কবিতা শোনা আর সন্ধ্যায় শহরের রাস্তায় হাত ধরে হাঁটা।
রাহাত প্রায়ই মিমের জন্য ছোট্ট ছোট্ট চিরকুট লিখে আনত।
একটায় লেখা থাকত—
“তোমার হাসিই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
আরেকটায়—
“তুমি না থাকলে আমি কেমন হই, জানো?”
মিমও রাহাতকে চমকে দিত। ক্যান্টিনে দু কাপ চা নিয়ে এসে আস্তে করে বলত,
— “আজ তোমার প্রিয় গানের লাইন লিখেছি খাতায়। বাড়ি গিয়ে পড়ো।”
ওদের বন্ধুরা মজা করত, বলত,
— “তোমাদের দেখে মনে হয় কলেজে প্রেমিক যুগলদের নতুন সংজ্ঞা লিখে দিতে হবে।”
মিম আর রাহাত কেবল মৃদু হেসে মাথা নিচু করত। তারা জানত, এই ভালোবাসা কেবলই তাদের।
একদিন কলেজের ছাদে দাঁড়িয়ে মিম বলল,
— “তুমি কি কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে?”
রাহাত তার কপালে হাত রাখল।
— “তুমি আমার শ্বাস। শ্বাস কেউ ফেলে যায়?”
সেদিনের আকাশে তারার আলো জ্বলছিল, আর মিম বুঝতে পারছিল— এই ভালোবাসা সহজ নয়, কিন্তু এর চেয়ে সত্য কিছু নেই।
ভালোবাসা এখন তাদের জীবনের রং।
হাসি-কান্না, স্বপ্ন-ভালো লাগা— সবকিছুতেই তারা একে অপরকে খুঁজে নিচ্ছিল।
তাদের গল্প নতুন অধ্যায়ে পা রাখল।
যেখানে পথচলার শুরুতেই লেখা থাকল—
"এবার থেকে আমরা একসাথে।"
---