পরিচ্ছেদঃ ২২. মু’মিন ব্যতিত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করবে না, মু’মিনদের ভালবাসা ঈমানের অঙ্গ আর তা অর্জনের উপায় হল পরস্পর অধিক সালাম বিনিময়
১০০। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না ঈমান আনবে আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বাতলে দেব না যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা নিজেদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও।
باب بَيَانِ أَنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ الْمُؤْمِنُونَ وَأَنَّ مَحَبَّةَ الْمُؤْمِنِينَ مِنَ الإِيمَانِ وَأَنَّ إِفْشَاءَ السَّلاَمِ سَبَبٌ لِحُصُولِهَا
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا . أَوَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى شَىْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ " .
হাদীসের ব্যাখ্যাঃ
এ হাদীছ জানাচ্ছে, জান্নাত লাভ করতে হলে ঈমানের অধিকারী হতে হবে। মুমিন ছাড়া কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতেও এটা স্পষ্ট করা হয়েছে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُوا عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَلَا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سَمِّ الْخِيَاطِ وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُجْرِمِينَ
‘নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অহংকারের সাথে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাদের জন্য আকাশের দরজাসমূহ খোলা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সুঁইয়ের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে। এভাবেই আমি অপরাধীদেরকে (তাদের কৃতকর্মের) বদলা দিই।২৮৯
আরও ইরশাদ হয়েছে-
مَنْ كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحَاطَتْ بِهِ خَطِيئَتُهُ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (81) وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
‘যেসব লোক পাপ কামায় এবং তার পাপ তাকে বেষ্টন করে ফেলে, তারাই জাহান্নামবাসী । তারা সর্বদা সেখানে থাকবে। যেসব লোক ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারা জান্নাতবাসী। তারা সর্বদা সেখানে থাকবে।২৯০
ঈমানের বিভিন্ন স্তর আছে। সর্বনিম্ন স্তর হলো কুফর ও শিরকী আকীদা-বিশ্বাস পরিহার করা এবং যে সমস্ত কর্মকাণ্ড শিরক ও কুফরের পরিচয় বহন করে তা থেকে বিরত থাকা। তারপর কবীরা গুনাহসমূহ পরিত্যাগ করা ঈমানের পরবর্তী স্তর। ঈমান আনার পরও যে ব্যক্তি কবীরা গুনাহে লিপ্ত থাকে, সে ফাসিক ও পাপী নামে অভিহিত হয়। কোনও মুমিন ব্যক্তির ফাসিক নামে অভিহিত হওয়া উচিত নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ
‘ঈমানের পর ফাসিকী নাম যুক্ত হওয়া বড় খারাপ কথা।২৯১
কবীরা গুনাহ ছাড়ার পাশাপাশি সগীরা গুনাহও পরিহার করে চলা ঈমানের উচ্চতর ধাপ। প্রত্যেক মুমিনের এ ধাপে অধিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা থাকা উচিত।
এ হাদীছে জানানো হয়েছে, একে অন্যকে মহব্বত না করলে মুমিন হওয়া যায় না। তার মানে পূর্ণাঙ্গ মুমিন হওয়া যায় না। কেননা একে অন্যকে ভালো না বাসলে পারস্পরিক হক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যের হক নষ্ট করা কবীরা গুনাহ। অন্যের হক তিন প্রকার- জানের হক, মালের হক ও ইজ্জতের হক। যার অন্তরে অন্যের প্রতি মহব্বত নেই, সে কোনও না কোনওভাবে অন্যের জান, মাল ও ইজ্জতের ক্ষতি করে ফেলে। এরূপ ব্যক্তি প্রকৃত মুমিন নয়। এক হাদীছে আছে—
وَاللَّهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللَّهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللَّهِ لاَ يُؤْمِنُ» قِيلَ: وَمَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: الَّذِي لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَايِقَهُ
‘আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। জিজ্ঞেস করা হলো, কে ইয়া রাসূলাল্লাহ? তিনি বললেন, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।২৯২
কারও অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকবে কেবল তখনই, যখন উভয়ের মধ্যে মহব্বত ও সুসম্পর্ক থাকবে। এর অর্থ দাঁড়াল, পূর্ণাঙ্গ মুমিন হওয়ার জন্য পরস্পরের মধ্যে মহব্বত তৈরি করা জরুরি। সুতরাং হাদীছে ইরশাদ করা হয়েছে-
Md Joynal abedin
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?