14 w ·Traducciones

অপেক্ষার শেষ নেই

নন্দিনী প্রতিদিন একই সময়ে ছাদে দাঁড়িয়ে থাকে। রোদ ম্লান হয়ে আসলে আকাশটা যেন লালচে শাড়ি পরে ফোটে ওঠে— ঠিক যেমনটা অরিন্দম পছন্দ করত।

তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল কলেজের বারান্দায়। বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতে অরিন্দম হেসে বলেছিল—
"তোমার হাসিটা কি সবসময় এমনই হয়, নাকি শুধু আমার জন্য?"

নন্দিনী লাজুকভাবে উত্তর দিয়েছিল—
"এত অহংকার কোরো না, আমি সবার সাথেই হেসে কথা বলি।"

কথার শুরু থেকে গল্পের শেষ কোথায় যে গিয়ে দাঁড়াল, তারা বুঝতেই পারেনি। দু’জনেই স্বপ্ন দেখত— একদিন নিজেদের ছোট্ট ঘর হবে, সেখানে জানালার পাশে বসে বই পড়বে, আর চা-এর কাপ ভাগাভাগি করে খাবে।

কিন্তু স্বপ্ন তো সবসময় সত্যি হয় না। অরিন্দম চাকরির জন্য চলে গেল বিদেশে। প্রতিদিন ফোনে কথা হলেও সেই ছোঁয়া, সেই গন্ধ— কিছুরই কোনো বিকল্প নেই।
নন্দিনী প্রতিজ্ঞা করেছিল— অপেক্ষা করবে।

তিন বছর কেটে গেছে। অরিন্দমের ফেরা আর হয়নি। হয়তো ব্যস্ততা, হয়তো দূরত্ব, হয়তো ভাগ্য— যা-ই হোক, কথার সংখ্যা কমতে কমতে একদিন শূন্যে এসে দাঁড়াল।

তবু প্রতিদিন সূর্যাস্তের সময় নন্দিনী ছাদে দাঁড়িয়ে থাকে। হয়তো অরিন্দম ফিরে আসবে— ঠিক যেভাবে লাল আকাশ প্রতিদিন ফিরে আসে।
তবে নন্দিনীর মনে একটা প্রশ্ন থেকে যায়—
"অপেক্ষারও কি কোনো শেষ আছে?"