অশ্বথ গাছের নিচে

বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে একটা পুরোনো অশ্বথ গাছ দাঁড়িয়ে আছে গ্রামের সীমানায়। গাছটার নিচ দিয়ে রাতে কেউ হাঁটতে সাহস করে না। গ্রামের বয়স্করা বলেন, অনেক বছর আগে সেই গাছের নিচে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছিল। তখন থেকে রাত হলেই শোনা যায় কান্নার আওয়াজ, কানের কাছে ফিসফিসানি, আর কারও কারও মনে হয় যেন পায়ের কাছে কেউ লম্বা চুল ছড়িয়ে বসে আছে।

একবার গ্রামের দুই সাহসী যুবক কৌতূহল নিয়ে রাতে সেখানে গেল। পূর্ণিমার আলোয় হঠাৎ তারা দেখল সাদা শাড়ি পরা এক মেয়ে, মুখে রক্তাক্ত দাগ, লম্বা চুল মাটিতে ঝুলছে। সে গাছের ডাল থেকে ধীরে ধীরে নেমে এসে তাদের দিকে তাকাল।
দু’জনের বুক কেঁপে উঠল—কিন্তু তখনই হাওয়ার ঝাপটা দিয়ে আগুনের মতো কণ্ঠে ভেসে এল, “ফিরে যাও… ফিরে যাও…”

তারা প্রাণভয়ে ছুটে গ্রামে ফিরে আসে। পরদিন সকালে গিয়ে দেখে, যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল, সেখানে গাছের গোড়ায় ভিজে মাটির উপর দুই জোড়া পায়ের ছাপ—যেন মাটিতে বসে থাকা কারও হাড়সর্বস্ব পদচিহ্ন।

এরপর থেকে আর কেউ রাতের বেলায় অশ্বথ গাছের কাছ ঘেঁষেও যায় না।

image