গল্প : লগড ইন
অধ্যায় ৩: শূন্য ঘর
রাহাতের মন বেশ চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। রাতের ওই ভীতিকর ঘটনার পর থেকেই সে নিজের মনে সন্দেহ করতে শুরু করেছিল—সব সত্যি কি না? একাকীত্ব আর অদ্ভুত অনুভূতি তাকে ঘিরে ধরেছিল।
চিকিৎসার জন্য সে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গেল। ডঃ ফারহান একজন প্রসিদ্ধ মনোবিদ, যিনি অনেক জটিল কেস সামলেছেন। রাহাত তার সব ঘটনা বিস্তারিত বলল, ল্যাপটপের অদ্ভুত ফাইল, ভয়ংকর ভিডিও আর তার ভেতরে চলমান কণ্ঠস্বরের কথা।
ডঃ ফারহান একদম শান্ত স্বরে বললেন,
“রাহাত, তুমি হয়তো ‘ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিজঅর্ডার’ বা DID–তে আক্রান্ত। অর্থাৎ, তোমার একাধিক ব্যক্তিত্ব বা সত্তা থাকতে পারে। তোমার ভেতরের আরেক ‘রাফিক’ তোমার মস্তিষ্কের গভীরে আটকা থাকতে পারে।”
রাহাত একটু অবাক হয়ে বলল,
“কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? আর ল্যাপটপের সঙ্গে এর কি সম্পর্ক?”
ডঃ ফারহান মাথা নাড়লেন,
“আজকাল প্রযুক্তি অনেক দূর এগিয়েছে। মস্তিষ্কের স্মৃতি ডিজিটাল ডিভাইসে সংরক্ষণ—যেটা অভিজ্ঞ বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করছেন। কিন্তু এই ধরনের স্মৃতির আদানপ্রদান ভুল হলে, বিভ্রান্তি বা ভয়ংকর পরিস্থিতি হতে পারে।”
পরদিন ডঃ ফারহান রাহাতকে তার অফিসে নিয়ে গেলেন। সেখানে এক বিশাল ফাইল কেবিনেটের সামনে এসে বললেন,
“এই রাফিক নামে আরেক রোগীর ফাইল। বছর পাঁচেক আগের। একই নাম, একই বর্ণনা।”
রাহাতের হাত কাঁপতে লাগল। সে ফাইল খুলল—মনে হচ্ছিল যেন সে নিজের অজান্তে অতীতের আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল।
ছবিতে দেখা যায় এক যুবক, ঠিক তার মতোই। ফাইলের পাতা থেকে পড়ল—“বিভক্ত ব্যক্তিত্বের জন্য প্রাথমিক থেরাপি চলাকালীন নিখোঁজ।”
রাহাতের কণ্ঠে কাঁটা,
“এই তো... আমি আর রাফিক... একেই তো।”
ডঃ ফারহান গম্ভীর হয়ে বললেন,
“এই যে তুমি এখন, সে রাফিকের ছায়া। তার স্মৃতি এবং সত্তা যেন তোমার ভেতরে লুকিয়ে আছে, কিন্তু ল্যাপটপের ফাইলগুলো সেই স্মৃতির ডিজিটাল ছায়া।”
রাহাত বুঝতে পারল, তার ভেতরে যুদ্ধ চলছে—তার ‘নিজেকে’ ধরে রাখার সঙ্গে ‘অদেখা রাফিকের’ নিয়ন্ত্রণের লড়াই।
এখন সে জানত, তার একাকীত্ব আর রহস্যের গভীরে লুকিয়ে আছে শূন্য ঘর—যেখানে সময় আর বাস্তবতার কোন মানেই নেই।
Raifa
تبصرہ حذف کریں۔
کیا آپ واقعی اس تبصرہ کو حذف کرنا چاہتے ہیں؟
Rumi Akter
تبصرہ حذف کریں۔
کیا آپ واقعی اس تبصرہ کو حذف کرنا چاہتے ہیں؟