গল্প: চিঠি
বৃষ্টির দিন। পুরনো কাঠের আলমারির গায়ে বৃষ্টির শব্দ টুপটাপ করে পড়ছে। নীলার মনও আজ যেন বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। হঠাৎ পুরনো এক খামে চোখে পড়ল—ধুলো জমা, হলুদ হয়ে যাওয়া একটা চিঠি। ওপরে হাতের লেখা, “নীলার জন্য”।
চিঠি খুলে পড়তে গিয়েই কেঁপে উঠল নীলা। লেখাটা অনিমেষের। দশ বছর আগে হঠাৎ করেই যে চলে গিয়েছিল, কোন কারণ না জানিয়েই। সেই ব্যথাটা আজও বুকের ভেতর পাথরের মতো জমে আছে।
চিঠিতে লেখা—
“নীলা, জানি, এই চিঠি যখন পড়বে, তখন আমি অনেক দূরে। যাওয়ার আগেই সাহস হারিয়ে ফেলেছিলাম, সামনে এসে কিছু বলতে পারিনি। আমার অসুখ হয়েছিল, দুরারোগ্য। চেয়েছিলাম, তুই আমার শেষ দিনগুলোর সাক্ষী না হোক। শুধু মনে রাখিস, ভালোবাসা মানে পাশে থাকা না–ভালো থাকা চাওয়াও।”
চোখের কোণে নীরার জল এসে গেল। এতদিন ধরে যে অভিমান বয়ে বেড়াচ্ছিল, তা হঠাৎ এক পলকে হালকা হয়ে গেল।
বাইরে বৃষ্টি থেমেছে। নীলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে, মনে মনে বলল, “তুই ভালো থাকিস অনিমেষ। যেখানেই থাকিস…”
হয়তো কিছু ভালোবাসা চিঠির মধ্যেই চিরকাল জীবন্ত থাকে।