. পুরনো চিঠি
রুবি নিজের ঘরে একদিন পুরনো কাঠের সিন্দুকটা খুলে নানা স্মৃতির জিনিস খুঁজছিল। পুরোনো এক গন্ধ যেন ঘরটাকে ঘিরে ধরলো—কাগজ, চিঠি, শুকনো গোলাপ, অজানা গল্পের গন্ধ। হঠাৎ একটা হলদে হয়ে যাওয়া চিঠি চোখে পড়লো। খামে কোনো নাম নেই, শুধু ভিতরে লেখা এক লাইন—"তোমাকে ভালোবেসেছিলাম, আজও বাসি।" নিচে প্রেরকের নাম নেই, শুধু একটা অদ্ভুত চিহ্ন, দেখতে অনেকটা ছোট্ট একটা নৌকার মতো।
রুবির কৌতূহল চরমে। চিঠির তারিখ প্রায় ত্রিশ বছর আগের। সে জানে, মা তখন কলেজে পড়তেন। বাবার সঙ্গে পরিচয়ও হয়নি তখনও। কে লিখেছিল এই চিঠি? রুবি বহুদিন ধরে মায়ের অতীত সম্পর্কে জানতে চাইতো, কিন্তু মা কখনো কিছু বলেনি। এই চিঠি তার মনকে অস্থির করে তুললো।
সন্ধ্যায় মায়ের সামনে গিয়ে চিঠিটা বাড়িয়ে দিলো সে। মা একটু চমকে উঠলেন, তারপর ধীরে ধীরে বসলেন চেয়ারে। চিঠিটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে রইলেন, যেন হাজার বছরের পুরনো কোনো স্মৃতির দরজা খুলে গেলো।
“এটা ওর লেখা…” মা ধীরে বললেন।
“কার লেখা, মা?” রুবি কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করে।
মা উত্তর দিলেন না। চোখের কোণে জল জমে উঠেছে। অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর বললেন, “সব ভালোবাসা পূর্ণতা চায় না রে… কিছু ভালোবাসা শুধু থেকে যায়, বাতাসে ভেসে বেড়ায়। আমি ভালোবাসিনি, কিন্তু সে ভালোবেসেছিল। এতটা নিঃশব্দে, যে জানতেও দিইনি তাকে। আর সেই নিঃশব্দ ভালোবাসা এই চিঠির মধ্যে বেঁচে আছে আজও।”
রুবি কিছু বললো না। কিন্তু তার চোখে তখন ভেসে উঠছে এক অচেনা প্রেমিকের ছায়া, যে ভালোবেসেছিল কেবল নিঃশব্দে, কোনো দাবি ছাড়াই।
#sifat10
Tajrin Nesa
حذف نظر
آیا مطمئن هستید که می خواهید این نظر را حذف کنید؟