আর কতকাল নারী কোলে কাঁখে রেখে অমানুষ করবে পুরুষজাতকে?

ভারতীয় ছবির মেগা স্টার অমিতাভ বচ্চনের ছেলে অভিষেকের সঙ্গে ঐেশ্বর্যার বিয়ে হতে পারে এরকম একটি খবর যখন পত্রিকা

ভারতীয় ছবির মেগা স্টার অমিতাভ বচ্চনের ছেলে অভিষেকের সঙ্গে ঐেশ্বর্যার বিয়ে হতে পারে এরকম একটি খবর যখন পত্রিকায়, সকলের অতি ভালোবাসার ধন অমিতাভ বচ্চন বলে দিলেন জ্যোতিষি বলেছে ঐশ্বর্যাকে বিয়ে করলে অভিষেকের অমঙ্গল হবে, সুতরাং বিয়ে বাদ। তারপর নানারকম পুজো আচ্চা করে নাকি সঙ্গেট মোচন হল। অমঙ্গলও মোচন হল। অভিষেক এখন বিয়ে করতে পারে ঐশ্বর্যাকে। ঐশ্বর্যা নামী অভিনেত্রী। তাঁর পক্ষে কি অভিনয় করা সম্ভব হবে বিয়ের পর, এই প্রশ্ন সকলের মনে। তাঁকে কি অভিনয় করার অনুমতি দেবে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ি? অভিষেক শুনেছি বলেছেন, ঐশ্বর্যা অভিনয় করতে চাইলে করবে। বিয়ের পর অভিষেকের অভিনয় বন্ধ হবে কী হবে না তা নিয়ে কিন্তু কেউ প্রশ্ন করেনি। ঐশ্বর্যার কাছে জানতে চায়নি অভিষেককে তিনি অনুমতি দেবেন কিনা অভিনয় করার।

 

কারও কাছে কি এগুলো খুব অবাক করা ব্যাপার? না। কারও কাছেই নয়। এসব সবই খুবই স্বাভাবিক। কেন এমন? কেন এই প্রশ্নটি কেউ করে না, যে, বিয়ে কেন মেয়ের জীবনকে পাল্টে দেয়, ছেলের জীবনকে নয়?

 

শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা নারীকে সম্পূর্ণ স্বাধীন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে দেয়, এ কথা অনেক নারীবাদীরাও বলে। ভুল বলে নিশ্চয়ই। ভুল না হলে নামী অভিনেত্রী যে কিনা শিক্ষিত এবং অঢেল টাকাকড়ির মালিক, ভীষণভাবে স্বনির্ভর, তাকে কেন স্বামীর ইচ্ছের যূপকাষ্ঠে বলি হতে হয়? তবে কি এই সত্য যে এই স্বামী সংসার ব্যাপারটির মধ্যেই যত গঞ্জগোল! কারণ এখানে মেয়েরা এখনও বন্দি, মেয়ে শিক্ষিত হোক কী অশিক্ষিত হোক, স্বনির্ভর হোক না হোক, সকলের জন্য একই নিয়ম। স্বামী সেবা কর, স্বামীর আদেশ নির্দেশ পালন কর, স্বামীর সন্তান উৎপাদন কর, সন্তান লালন পালন কর — এই নিয়মটির নাম পুরুষতন্ত্র, জগতের সকল নারী এই তন্ত্রের শিকার। পুরুষেরা যুগ যুগ ধরে টিকিয়ে রাখছে এই নোংরা কুৎসিত পুরুষতন্ত্র। স্বামীসন্তানসংসারকে মেয়েরা যেন তাদের জীবনের চেয়েও বেশি মূল্যবান মনে করে, এরকম একটি মন্ত্র মেয়েদের মাথায় আজকাল পুরে দেওয়া হচ্ছে। আগে তো মেয়েদের লেখাপড়া করারই সুযোগ ছিল না, স্বনির্ভর হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। এখন মেয়েদের ইস্কুল কলেজ হচ্ছে, মেয়েরা বিএএমএ পাশ করছে, কিন্তু হলে হবে কী ! পাশ করে হয় গৃহবধূ হয়ে বসে আছে নয়তো চাকরি বাকরি ব্যবসা বাণিজ্য করছে, করছে কিন্তু পুরুষের অনুমতি নিয়ে, বাবার নয়তো স্বামীর নয়তো পুজ্ঞের। মেয়েদের গলায় বা কোমরে শক্ত দড়ি বাঁধা। এই দড়ি খুলে ফেলার সাহস এবং শক্তি কোনওটাই যেন মেয়েদের না থাকে, তার সবরকম ব্যবস্থাই পুরুষেরা করে রেখেছে। পুরুষেরা দড়ি নাড়ে, এই নাড়ায় দড়িতে


Rx Munna

446 ব্লগ পোস্ট

মন্তব্য