আদিম যুগের আদি কথা

মানবজাতির প্রাচীন সূচনা ও জীবনধারার গল্প।

মানব ইতিহাসের দীর্ঘ যাত্রার প্রথম অধ্যায় হলো আদিম যুগ। এই যুগ আমাদের বলে দেয় মানুষ কিভাবে পৃথিবীতে প্রথম টিকে থাকার লড়াই শুরু করেছিল। সভ্যতা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি—সবকিছুর শেকড় খুঁজে পাওয়া যায় সেই প্রাচীন জীবনে। আদিম যুগের আদি কথা শুধু ইতিহাস নয়, বরং মানবজাতির আত্মপরিচয়ের সূচনা।

 

প্রথমে মানুষ ছিল প্রকৃতির নিছক একটি প্রাণী। তারা গুহায় বাস করত, বন্য প্রাণীর আক্রমণ থেকে বাঁচতে দলে দলে চলাফেরা করত এবং খাদ্যের জন্য নির্ভর করত শিকার ও ফলমূলের ওপর। প্রকৃতির সঙ্গে এক অন্তহীন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছিল তাদের জীবন। এই সংগ্রামেই মানুষ শিখেছিল কৌশল, সহযোগিতা এবং বেঁচে থাকার শিল্প।

আগুনের আবিষ্কার ছিল মানুষের জীবনে এক যুগান্তকারী ঘটনা। আগুন শুধু অন্ধকারে আলোই দেয়নি, বরং দিয়েছে উষ্ণতা, নিরাপত্তা ও রান্না করার সুযোগ। এটি মানুষের জীবনকে আরেক ধাপে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি মানুষ তৈরি করতে শিখল পাথরের অস্ত্র, যা শিকার ও আত্মরক্ষায় তাদের সহায়ক হলো।

 

ভাষার বিকাশ আদিম যুগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। শুরুতে ইশারা, অঙ্গভঙ্গি ও শব্দের মাধ্যমে যোগাযোগ হলেও ধীরে ধীরে ভাষা মানুষের সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করল। এতে জন্ম নিল দলগত সহযোগিতা, নিয়ম-নীতি ও প্রাথমিক সামাজিক কাঠামো।

এ যুগে মানুষ কেবল বেঁচে থাকার লড়াই করেনি, বরং শিল্প ও সংস্কৃতির বীজও বপন করেছিল। গুহার দেয়ালে আঁকা চিত্র, প্রাথমিক বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার এবং কুসংস্কার-ভিত্তিক ধর্মীয় বিশ্বাস মানবমনের কল্পনাশক্তির প্রমাণ বহন করে।

 

আদিম যুগ আমাদের শেখায় প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিভাবে মানুষ ধাপে ধাপে উন্নতির পথে হাঁটতে শুরু করেছিল। আজকের আধুনিক সভ্যতার প্রতিটি শাখায় সেই প্রাচীন যুগের ছাপ বিদ্যমান। তাই ‘আদিম যুগের আদি কথা’ শুধু অতীতের গল্প নয়, বরং আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তি।


Md shazedul Karim

81 مدونة المشاركات

التعليقات