গল্পের নাম: “অপেক্ষার শেষ”
পাহাড়ঘেরা ছোট্ট এক গ্রাম—নিশিগন্ধা। গ্রামের নামের মতোই সে ছিল সুন্দর, নীরব, আর রহস্যময়। এখানেই বাস করত অরণ্য ও মেঘলা। দুজনেই গ্রামের স্কুলে পড়ত, কিন্তু মেঘলা ছিল শহর থেকে আসা নতুন ছাত্রী। ওর চুপচাপ স্বভাব, গভীর চোখদুটি, আর সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকা—সবকিছুই অরণ্যের কৌতূহলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রথম প্রথম মেঘলা কারো সঙ্গে বেশি কথা বলত না। কিন্তু একদিন লাইব্রেরিতে অরণ্যের পাশে বসে হঠাৎ সে বলে উঠেছিল, “তুমি কি রবীন্দ্রনাথ পড়ো?”
অরণ্য অবাক হয়ে বলে, “হ্যাঁ, কেন?”
মেঘলা মৃদু হেসে বলেছিল, “তোমার চোখে যেন কবিতার ছায়া আছে…”
সেই দিনের পর থেকে ওদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল ধীরে ধীরে। মেঘলার মন খুলে যায় অরণ্যের সামনে। সে জানায়, কীভাবে সে শহরের কোলাহল থেকে পালিয়ে এই নির্জন গ্রামে এসেছে দাদুর কাছে, একটু শান্তি খুঁজতে। অরণ্য বলেছিল, “শান্তি তো মানুষের ভেতরেই থাকে। বাইরের জায়গা শুধু উপলক্ষ।”
দিন পেরিয়ে যায়। দুজনের বন্ধুত্ব একসময় এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা পড়ে। অরণ্য ধীরে ধীরে মেঘলার প্রতি এক অজানা টান অনুভব করে। তবে কোনোদিন মুখ ফুটে বলেনি।
হঠাৎ একদিন মেঘলা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। শিক্ষকরা জানায়, সে হঠাৎ করে শহরে ফিরে গেছে, কারণ তার মা অসুস্থ। কোনো চিঠি না, কোনো খবর না—শুধু এক অজানা শূন্যতা রেখে সে হারিয়ে যায়।
অরণ্য কষ্ট পায়, কিন্তু কিছু করতে পারে না। সে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পাহাড়ের ধারে বসে থাকে, যেখানে তারা একসাথে বসে কবিতা পড়ত। সময় কেটে যায়, বছর কেটে যায়। মেঘলার কোনো খোঁজ মেলে না।
অরণ্য এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তবু ছুটি পেলেই সে নিশিগন্ধা আসে, মেঘলার অপেক্ষায়। একরকম রুটিনে পরিণত হয় সেই পাহাড়ের ধারে অপেক্ষা।
একদিন হঠাৎ, সেই জায়গায় গিয়ে দেখে, কেউ একজন বসে আছে। চেনা ছায়া, চেনা শরীরী ভাষা…
সে এগিয়ে যায়। সামনে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়—মেঘলা।
মেঘলা বলে, “চলে গিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু মনটা এখানেই রেখে গিয়েছিলাম। তুমিই ছিলে একমাত্র বন্ধু, যাকে না বলেই চলে আসা আমার পক্ষে সবচেয়ে কঠিন ছিল।”
অরণ্যের চোখ ভিজে ওঠে, “তুমি জানো আমি প্রতিদিন তোমার জন্য এখানে এসেছি?”
মেঘলা হাসে, “জানি, তাই তো ফিরে এলাম… এই নিশিগন্ধায়, তোমার কাছে।”
পাহাড়ের ওপারে সূর্য তখন অস্ত যাচ্ছে। আলোর লালচে আভায় দুজন দাঁড়িয়ে, চুপচাপ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে, আবার শুর
Md Joynal abedin
删除评论
您确定要删除此评论吗?