AFace1 AFace1
    #spotnrides #mobileappdevelopment #spotneats #uberfortowtruck #uberfortowtrucks
    Advanced Search
  • Login
  • Register

  • Night mode
  • © 2025 AFace1
    About • Contact Us • Privacy Policy • Terms of Use • Refund • Guidelines • Apps Install • DMCA

    Select Language

  • Arabic
  • Bengali
  • Chinese
  • Croatian
  • Danish
  • Dutch
  • English
  • Filipino
  • French
  • German
  • Hebrew
  • Hindi
  • Indonesian
  • Italian
  • Japanese
  • Korean
  • Persian
  • Portuguese
  • Russian
  • Spanish
  • Swedish
  • Turkish
  • Urdu
  • Vietnamese

Watch

Watch Reels Movies

Events

Browse Events My events

Blog

Browse articles

Market

Latest Products

Pages

My Pages Liked Pages

More

Forum Explore Popular Posts Jobs Offers Fundings
Reels Watch Events Market Blog My Pages See all
Azahar Mahmud
User Image
Drag to reposition cover
Azahar Mahmud

Azahar Mahmud

@1759852150269603_28687
  • Timeline
  • Groups
  • Likes
  • Following 1
  • Followers 2
  • Photos
  • Videos
  • Reels
  • Products
1 Following
2 Followers
5 posts
Male
Living in Bangladesh
Azahar Mahmud
Azahar Mahmud
6 w ·Translate

আবিরের জীবনটা ঘড়ির কাঁটার মতো চলত—একঘেয়ে, তবুও নির্ভুল। সে একটি ছোট লাইব্রেরিতে কাজ করত, যেখানে বইয়ের পাতার গন্ধ আর ফিসফিস শব্দই ছিল তার সঙ্গী। একদিন, একটা পুরোনো ডেস্কে ঝাড়ামোছার সময় সে একটা চামড়ার বাঁধাই করা ডায়েরি খুঁজে পেল। ডায়েরিটা হাতে নিতেই একটা ঠান্ডা অনুভূতি তার শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেল।
​ডায়েরিটা একটা সিরিয়াল কিলারের স্বীকারোক্তি ছিল। সে বিশদভাবে বর্ণনা করেছে কীভাবে সে তার শিকারদের খুঁজে বের করত, কীভাবে তাদের উপর নজর রাখত, এবং চূড়ান্ত মুহূর্তে তাদের জীবন কেড়ে নিত। শেষ পাতাটায় তারিখ দেওয়া ছিল, আজকের থেকে মাত্র দু'সপ্তাহ আগের। কিপটে হাতের লেখায় লেখা ছিল: "নিখুঁত কাজ, কিন্তু এর একটা ধারাবাহিকতা থাকা দরকার। পরবর্তী শিকার প্রস্তুত।"
​আবির প্রথমে ডায়েরিটাকে ফালতু একটা কাল্পনিক গল্প ভেবে উড়িয়ে দিতে চাইল। কিন্তু পরের দিন সকালে, সে খবরে দেখল ঠিক সেই ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যার বর্ণনা ডায়েরিতে দেওয়া আছে। শিকারের নাম, কাজের ধরণ—সবকিছু হুবহু মিলে যাচ্ছে। তার সন্দেহ, ভয় আর আতঙ্ককে ছাপিয়ে উঠল।
​রাতে আবির ডায়েরির পৃষ্ঠাগুলো আবার উল্টালো। সে দেখল, খুনি তার পরবর্তী শিকারের ইঙ্গিত দিয়েছে—একটি ছোট, ঘন চুলওয়ালা মানুষ, যিনি প্রায়ই সন্ধ্যা ৬টায় পার্কে কফি খান। আবির জানত, তাকে কিছু করতে হবে। পুলিশকে বললেও তারা তাকে হয়তো পাগল ভাববে বা পাত্তা দেবে না। প্রমাণ বলতে তো শুধু এই ডায়েরি, যা যে কেউ কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দিতে পারে।
​আবির অস্থির হয়ে ডায়েরির মধ্যে একটি ছোট ভাঁজ করা কাগজ দেখতে পেল। সেটাতে শুধু একটা ঠিকানা লেখা ছিল—তার লাইব্রেরি থেকে বেশি দূরে নয়। সে জানত, এই মুহূর্তে পুলিশ বা অন্য কারো অপেক্ষা করা অর্থহীন। তাকে নিজেই ওই ঠিকানায় যেতে হবে। বাইরে তখন রাত গভীর, চারদিক নিস্তব্ধ, আর আবিরের হাতে একটি ডায়েরি, যা ভয়ংকর এক সত্য বহন করছে। সে ঘর থেকে বের হলো, তার হৃদস্পন্দন দ্রুত ধাবমান ট্রেনের মতো শব্দ করছিল।

#-"​অন্ধকারের ছায়া"
সূচনা পর্ব

Like
Comment
Share
Azahar Mahmud
Azahar Mahmud
7 w ·Translate

​অর্পিতা আর দ্বিধা করে না। সে জানে, এই মুহূর্তে পুলিশের কাছে গেলে ফাইল আর চাবি সব বাজেয়াপ্ত হবে, আর রণজয়ও বিপদে পড়বে। তাকে রণজয়ের বিশ্বাস রাখতে হবে।
​আর্কিভ বিল্ডিং হলো শহরের সবচেয়ে পুরনো এবং বৃহৎ নথিপত্র সংরক্ষণের স্থান। রাত তখন প্রায় দুটো। অর্পিতা ট্যাক্সি করে আর্কিভের কাছাকাছি পৌঁছে, তারপর পায়ে হেঁটে একটি পরিত্যক্ত পার্কিং লটে ঢোকে। তার হাতে শুধুমাত্র টর্চ, বাবার পেনড্রাইভ এবং রণজয়ের দেওয়া চাবি।
​হঠাৎ অন্ধকারে একটা চাপা ফিসফিসানি শোনা যায়, "অর্পিতা, সাবধানে!"
​রণজয়! সে লুকিয়ে ছিল। তার জামাকাপড় কিছুটা ছেঁড়া, হাতে সামান্য আঘাতের চিহ্ন।
​"তুমি!" অর্পিতা স্বস্তিতে প্রায় কেঁদে ফেলে। "তোমার কী হয়েছিল?"
​"পালাতে পেরেছি," রণজয় ফিসফিস করে বলে। "ওরা আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। আমি জানি তুমি আসবে। চলো, ভেতরে ঢুকতে হবে। বাইরের দিকে নজর ছিল না, ওরা শুধু নথিপত্র পাহারা দিচ্ছিল।"
​রণজয় আর্কিভের পিছনের দিকের একটি সার্ভিস ডোর দেখায়, যেখানে তার দেওয়া চাবিটা হুবহু ফিট করে যায়।
​ভেতরে ধুলো আর কাগজের স্তূপের গন্ধ। রণজয় অর্পিতাকে নিয়ে সরাসরি একটি পুরোনো, অব্যবহৃত সেকশনের দিকে যায়।
​"দেবনারায়ণ রায় নিখোঁজ হওয়ার আগে একটি গুপ্ত ডায়েরি লিখেছিলেন," রণজয় জানায়। "সেটা তিনি এখানে রেখে যান। কারণ তিনি জানতেন, তাঁর নিজের লোকজনের মধ্যেই বিশ্বাসঘাতক লুকিয়ে আছে। আর আমিই তার একমাত্র উত্তরসূরি, কিন্তু কেউ যাতে না জানতে পারে, তাই আমার নাম বদলেছিলাম।"
​অর্পিতা রণজয়ের কথা বিশ্বাস করে। সে তার বাবার পেনড্রাইভ রণজয়ের হাতে দেয়।
​"দেখো রণজয়, এই পেনড্রাইভে একটা লেনদেন আছে। আমার বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার হয়েছিল। এর মানে কি বাবাও জড়িত?"
​রণজয় দ্রুত ল্যাপটপে পেনড্রাইভটি যুক্ত করে। লেনদেনের তারিখ ও সময় দেখে তার চোখ কুঁচকে যায়।
​"না, অর্পিতা! তোমার বাবা জড়িত নয়, বরং তিনি ফাঁদে পড়েছেন। দেখো, এই লেনদেনের সময়টা যখন দেখানো হচ্ছে, তখন তোমার বাবা মিটিংয়ে ছিলেন। কেউ তাঁর ল্যাপটপে এই সফটওয়্যারটি ইন্সটল করে তাঁর অ্যাক্সেস কোড ক্লোন করেছে। আর এই কাজটা করতে পেরেছে এমন একজন, যে তাঁর প্রতিদিনের রুটিন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।"
​তারা দুজনে তখন একসঙ্গে কাজ শুরু করে। রণজয় ডায়েরি খুঁজতে থাকে, আর অর্পিতা পেনড্রাইভের ডেটা অ্যানালিসিস করে।
​হঠাৎ অর্পিতা চিৎকার করে ওঠে, "পেয়েছি! ল্যাপটপ অ্যাক্সেসের ঠিক আগে, একটা অদ্ভুত ম্যালওয়্যার ফাইল ডাউনলোড হয়েছিল। এই ফাইলটা একজন অফিসের সহকর্মী-কে পয়েন্ট করছে, যে তোমার শ্বশুরমশাইয়ের সব গোপন নথি দেখভালের দায়িত্বে ছিল।"
​রণজয় সেই মুহূর্তে একটা পুরনো কাঠের দেরাজের আড়াল থেকে একটা লাল মলাটের ডায়েরি খুঁজে বের করে। ডায়েরির শেষ পাতায় একটি নাম লেখা—সেই সহকর্মীর নাম!
​"সে-ই! বিপ্লব রায়," রণজয় ফিসফিস করে। "সে দেবনারায়ণ রায়ের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ছিল, কিন্তু সে ছিল শুধু টাকার লোভে অন্ধ। সে-ই বাবাকে কিডন্যাপ করে, সব তথ্য হাতিয়ে নিয়ে আমার ওপর দোষ চাপাতে চেয়েছিল।"
​রণজয় দ্রুত তার পকেট থেকে একটা পুরনো সিডি বের করে। "এই সিডিতে আসল প্রমাণ আছে, যা দেবনারায়ণ রায় বিপ্লবের অজান্তে রেকর্ড করেছিলেন। এটাই পুলিশকে দিতে হবে।"
​ঠিক তখনই আর্কিভের প্রধান দরজা ভেঙে তিনজন লোক ভেতরে ঢোকে। তারা সেই কালো পোশাকের গুন্ডারা, আর তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে বিপ্লব রায়, হাতে একটি রিভলভার।
​"দারুণ খেলা খেললে, রণজয়," বিপ্লবের কণ্ঠে বিজয়ীর হাসি। "তুমি শেষ পর্যন্ত এখানে আসবে, আমি জানতাম। আর তোমার প্রেমিকা, অর্পিতা, সে-ও সব ফাঁস করতে সাহায্য করল! এখন প্রমাণগুলো আমাকে দাও, নইলে..."
​বিপ্লব রিভলভার অর্পিতার দিকে তাক করে। রণজয় ঝড়ের বেগে অর্পিতাকে টেনে নিয়ে একটি বড় বুকশেল্ফের আড়ালে আশ্রয় নেয়।
​রণজয় ফিসফিস করে, "অর্পিতা, তুমি আমার দেওয়া সিডিটা নিয়ে ভেতরের জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে বেরিয়ে যাও। বিপ্লব জানে না, আমি এই আর্কিভের পুরোনো ফায়ার অ্যালার্মের তার কেটে রেখেছি।"
​অর্পিতা মাথা নাড়ে। রণজয় একটি ভারী বইয়ের স্তূপ সজোরে ছুঁড়ে মারে বিপ্লবের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। রণজয় ও গুন্ডাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলতে থাকে।
​অর্পিতা সিডিটা হাতে নিয়ে দৌড়ে অন্য পথে যেতেই, বিপ্লব তাকে দেখতে পায়। "ধরো ওকে!"
​বিপ্লব অর্পিতার দিকে গুলি চালানোর ঠিক মুহূর্তে—
​সাইরেন বাজিয়ে পুলিশ ভেতরে ঢোকে।
​রণজয় তার শেষ শক্তি দিয়ে একজন গুন্ডাকে কাবু করে চিৎকার করে, "স্যার! সমস্ত প্রমাণ ওর কাছে, বিপ্লব রায়ের কাছে!"
​পুলিশ দ্রুত বিপ্লব রায়কে ঘিরে ফেলে। বিপ্লব পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আর্কিভের পুরনো নথিপত্রের স্তূপে সে হোঁচট খেয়ে পড়ে। সিডি এবং ডায়েরি সুরক্ষিত থাকে।
​সকাল হলো। বিপ্লব রায় এবং তার গুন্ডারা গ্রেফতার। দেবনারায়ণ রায়কে একটা গোপন আস্তানা থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
​পুলিশ অফিসার অর্পিতা এবং রণজয়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, "আপনারা দু'জনে খুব বুদ্ধি দিয়ে কাজ করেছেন। এই প্রমাণগুলো ছাড়া কেসটা কোনোদিনও সমাধান হতো না।"
​অর্পিতা রণজয়ের দিকে তাকায়। রণজয়ের চোখে আর কোনো রহস্য নেই, আছে কেবল স্বস্তি আর গভীর ভালোবাসা। সে অর্পিতার হাত ধরে। তাদের রোমান্টিক থ্রিলার আজ শেষ হলো, কিন্তু তাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো—এক নতুন বিশ্বাস আর সত্যের ওপর ভর করে।
সমাপ্ত।

Like
Comment
Share
Azahar Mahmud
Azahar Mahmud
7 w ·Translate

​অর্পিতা কফি শপ থেকে বেরিয়ে এসে সোজা একটি জনবহুল সাবওয়ের দিকে ছুটতে থাকে। সে জানে যে কালো পোশাকের লোকগুলো খুব সম্ভবত তাকেও খুঁজবে, কারণ সে রণজয়ের সর্বশেষ সঙ্গী। তার হাতে এখন শুধুমাত্র দুটো জিনিস: রণজয়ের দেওয়া 'বিশ্বাস' খোদাই করা চাবি এবং তার বাবার ব্যক্তিগত সচিব হিসাবে রাখা পুরোনো দেবনারায়ণের কেসের ফাইলগুলো।
​​অর্পিতার প্রথম সন্দেহ হলো, এই চাবিটা হয়তো কোনো লকার বা গোপন আস্তানার চাবি। সে চাবিটার দিকে তাকিয়ে দেখল—এটা দেখতে সাধারণ নয়, এর মাথায় একটি ছোট প্রতীক খোদাই করা, যা একটি পুরোনো অ্যান্টিক ঘড়ির দোকানের লোগোর মতো।
​সে ইন্টারনেটে লোগোটি সার্চ করে এবং শহরের এক কোণে থাকা একটি জরাজীর্ণ পুরোনো ঘড়ির দোকানের সন্ধান পায়। গভীর রাতে বৃষ্টির মধ্যেই সে সেখানে পৌঁছায়। দোকানটি বন্ধ, কিন্তু চাবিটি দরজায় ঠিক ফিট করে যায়।
​দোকানের ভেতরে ঢুকতেই অর্পিতা বুঝতে পারে—এটা আসলে রণজয়ের লুকানো আস্তানা। ভেতরে ক্যামেরা, ল্যাপটপ, শহরের ম্যাপ, এবং দেবনারায়ণ রায়ের কেস সংক্রান্ত অসংখ্য নথি ছড়ানো। এর মাঝেই সে খুঁজে পায় একটি ভিডিও ডায়েরি।
​ভিডিওতে রণজয়: "অর্পিতা, যদি তুমি এটা দেখো, তার মানে আমি ধরা পড়েছি বা আত্মগোপন করেছি। আমি জানি তুমি আমাকে অবিশ্বাস করছো। কিন্তু এই ডায়েরিটা তোমার বাবার ফাইলের চেয়েও বড় সত্য। তুমি যা খুঁজছো, তা এই শহরের নয়, এই শহরের আর্কিভ বিল্ডিংয়ের ঠিকানায় রাখা আছে। আর যারা আমার পিছু নিয়েছে, তারা তোমার বাবাকেই সন্দেহের চোখে দেখে। তাদের প্রধান লক্ষ্য তুমি নও, তোমার বাবা।"
​​ভিডিওটি দেখার পর অর্পিতার মাথায় একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে আসে। রণজয় তাহলে সত্যিই নির্দোষ? কিন্তু তার বাবার ফাইলে কী আছে?
​সে দ্রুত বাড়ি ফিরে তার বাবার আলমারি থেকে পুরোনো ফাইলগুলো বের করে। ফাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে সে একটি এনক্রিপ্টেড পেনড্রাইভ খুঁজে পায়, যা দেবনারায়ণ রায়ের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের তথ্যে ভরা। পেনড্রাইভটির পাসওয়ার্ড তার বাবা ব্যবহার করতেন—তা অর্পিতার জানা।
​পেনড্রাইভ খুলতেই অর্পিতা দেখতে পায় যে, দেবনারায়ণ রায় নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন বিশাল অঙ্কের টাকা একটি বিদেশি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। আর এই লেনদেনটি সম্পন্ন হয়েছে তার বাবার ল্যাপটপ থেকে এবং বাবার ব্যক্তিগত অ্যাক্সেস কোড ব্যবহার করা হয়েছে।
​অর্পিতা এখন দ্বিধায়। রণজয় বলছে তার বাবা সন্দেহের বাইরে নয়, আর ফাইল বলছে তার বাবা সরাসরি আর্থিক লেনদেনে জড়িত। তবে কি তার বাবাও এই গুমকাণ্ডে জড়িত?
​অর্পিতা উপলব্ধি করে, এই থ্রিলার শুধু রণজয় আর গুন্ডাদের মধ্যে নয়, এটা তার বাবার সাথেও যুক্ত। তাকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে—
​সে কি পুলিশের কাছে যাবে এবং রণজয়ের কথা বিশ্বাস করে তার বাবাকে সাহায্য করবে?
​নাকি সে নিজে এই থ্রিলারের শেষ দেখতে, সরাসরি সেই আর্কিভ বিল্ডিংয়ে যাবে, যেখানে রণজয় তাকে যেতে বলেছে?
বি:দ্র: আগামী পর্বে সমাপ্ত।

Like
Comment
Share
Azahar Mahmud
Azahar Mahmud
8 w ·Translate

​অর্পিতা প্রতিদিনের মতো আজও সন্ধ্যায় 'নীরবতা' কফি শপে আসে। জায়গাটা তার প্রিয়, শহর থেকে একটু দূরে, পুরনো বইয়ের গন্ধ আর মৃদু জ্যাজ মিউজিক। আজ তার টেবিলটা জানালার ধারে, বাইরের বৃষ্টিভেজা শহরের নিয়ন আলো ভেতরে এসে এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি করেছে। সে জানে, এই অপেক্ষা আজকের নয়, গত ছয় মাসের।
​ছয় মাস আগে এই একই জায়গায় তার আলাপ হয়েছিল রণজয় সেনের সাথে। রণজয়, সুদর্শন, রহস্যময় হাসি আর গভীর চোখ—তাকে প্রথম দিনেই মোহিত করেছিল। সে একজন আলোকচিত্রী, এমনটাই বলেছিল। তাদের প্রেম ছিল অনেকটা দ্রুতগতির ট্রেনের মতো; তীব্র, রোমাঞ্চকর এবং অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু এই প্রেমের গভীরে একটা শীতল স্রোত ছিল, যা অর্পিতা এতদিন উপেক্ষা করে এসেছে।
​রণজয়ের জীবনের অনেক কিছুই ছিল ধোঁয়াশা। রাতের পর রাত সে নিখোঁজ থাকত, ফোন বন্ধ। অজুহাত দিত, "নতুন প্রজেক্টের কাজ চলছে, অর্পিতা। পাহাড়ের কোলে একা থাকতে হয়।" কিন্তু অর্পিতার মন মানত না।
​আজ অর্পিতা সেই শীতল স্রোতটার উৎস খুঁজে পেয়েছে। তার হাতে ধরা একটা পুরনো খবরের কাগজের কাটিং, তারিখটা দু'বছর আগের। শিরোনাম: "শিল্পপতি দেবনারায়ণ রায় নিখোঁজ: অপহরণ না পলায়ন?" নিচে একটা ছোট ছবি, রণজয়ের তরুণ বয়সের ছবি। ক্যাপশনে লেখা: "নিখোঁজ শিল্পপতির জামাতা, রণজয় সেন।"
​দরজা খুলে রণজয় প্রবেশ করে। তার পরিচিত হাসিটা আজ অর্পিতার কাছে কেমন যেন শীতল আর মেকি লাগছে।
​"অর্পিতা, তুমি এসে গেছ," রণজয় এগিয়ে আসে, তার হাতে অর্পিতার প্রিয় ক্যারামেল মাকিয়াটো।
​অর্পিতা কফির কাপটা স্পর্শও করে না। সে সরাসরি রণজয়ের চোখে চোখ রাখে। "তুমি কে, রণজয়?" তার কণ্ঠস্বরে কোনো কাঁপন নেই, শুধু একটা স্থির শীতলতা।
​রণজয় প্রথমে ঘাবড়ায় না। "কী বলছো এসব? আমি তো তোমার রণজয়।"
​অর্পিতা কাটিংটা টেবিলের ওপর ফেলে দেয়। "রণজয় সেন। দেবনারায়ণ রায়ের জামাতা। যার নিখোঁজ হওয়ার কেসটা এখনো ফাইলবন্দী হয়ে আছে। তুমি তোমার নাম বদলে এখানে কী করছো? ছবি তোলার কাজ করছো, নাকি অন্য কারো পিছু নিচ্ছো?"
​রণজয়ের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। সেই রহস্যময় হাসিটা উবে গিয়ে একটা তীক্ষ্ণ, হিসেবি দৃষ্টি তার চোখে খেলে যায়। কফি শপের নীরবতা হঠাৎ যেন আরও বেড়ে যায়।
​"তুমি জানো না, অর্পিতা, তুমি কীসের ভেতরে ঢুকে গেছ," রণজয় ফিসফিস করে, যেন কেউ শুনতে না পায়। "দেবনারায়ণ রায় নিখোঁজ হননি, তাঁকে গুম করা হয়েছিল। আর সেই গুমের পেছনে যারা ছিল, তারা এখনো আমার শ্বশুরমশাইয়ের সব সম্পত্তির ওপর নজর রাখছে। আমি নিজেকে আড়াল করে রেখেছি শুধু তাদের মুখোশ খোলার জন্য।"
​অর্পিতার বুক ধক করে ওঠে। "আর এই কারণেই তুমি আমার কাছে এসেছিলে? আমাকে ভালোবাসোনি? আমি তো... আমি তো দেবনারায়ণ রায়ের ব্যক্তিগত সচিবের মেয়ে। তুমি কি আমার মাধ্যমে কোনো তথ্য পেতে চেয়েছিলে?"
​রণজয় দ্রুত অর্পিতার হাত ধরে। "বিশ্বাস করো, অর্পিতা! প্রথমদিকে হয়তো একটা উদ্দেশ্য ছিল। তোমার বাবার ফাইলগুলো ঘাঁটা সহজ হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু যখন তোমাকে চিনলাম, তোমার চোখ দেখলাম, তখন সব উদ্দেশ্য ফিকে হয়ে গেল। আমি সত্যি তোমাকে ভালোবেসেছি। তুমি আমার নিরাপদ আশ্রয়, আমার সত্যের রাস্তা।"
​অর্পিতা হাত সরিয়ে নেয়। "মিথ্যে! তুমি একজন প্রতারক। তুমি আমার সাথে অভিনয় করেছ। আমার জীবনটা একটা তদন্তের ক্ষেত্র ছিল তোমার কাছে।"
​ঠিক সেই মুহূর্তে, বাইরে বৃষ্টির শব্দ ছাপিয়ে একটা মোটরসাইকেলের তীক্ষ্ণ ব্রেক কষার শব্দ শোনা যায়। কফি শপের কাঁচের দরজার বাইরে হঠাৎ তিনজন কালো পোশাকের লোক দাঁড়ায়। তাদের চোখেমুখে কোনো ভাবান্তর নেই, কিন্তু তাদের উপস্থিতিটা একটা স্পষ্ট বিপদের সংকেত।
​রণজয় দ্রুত অর্পিতাকে টান দিয়ে টেবিলের নিচে লুকিয়ে ফেলে। "ওরা এসে গেছে, অর্পিতা। আমার মনে হয়, ওরা জানতে পেরেছে আমি আর আত্মগোপন করে নেই।"
​"ওরা কারা?" অর্পিতা ভয়ে কাঁপছে।
​"যাদের কাছ থেকে আমি আমার শ্বশুরমশাইকে উদ্ধার করতে চাই। ওরা শুধু সম্পত্তি চায় না, ওরা চায় আমি চিরতরে হারিয়ে যাই," রণজয় চাপা গলায় বলে। সে অর্পিতার দিকে তাকায়, তার চোখে গভীর ভালোবাসা আর এক অদ্ভুত যন্ত্রণা। "আজ হয়তো আমাদের শেষ দেখা, অর্পিতা। কিন্তু মনে রেখো, আমার ভালোবাসা কোনো অভিনয় ছিল না।"
​দরজা ভেঙে লোকগুলো ভেতরে ঢোকে। রণজয় দ্রুত একটি চেয়ার ছুড়ে মারে এবং অন্যদিকের সরু রান্নাঘরের দিকে দৌড়াতে শুরু করে, অর্পিতাকে ইশারা করে উল্টোদিকের জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে বেরিয়ে যেতে।
​অর্পিতা জানে, রণজয় তাকে বাঁচাতে চাইছে। সে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে শেষবারের মতো ফিরে তাকায়। রণজয় দেয়ালের আড়ালে আত্মগোপন করছে, তার চোখে তখন আর আলোকচিত্রীর স্বপ্ন নেই, আছে কেবল একজন শিকারীর তীক্ষ্ণতা।
​অর্পিতা বাইরে এসে অন্ধকারে মিশে যায়। তার হাতে রণজয়ের ফেলে যাওয়া একটা চাবির রিং, তাতে শুধু একটা শব্দ খোদাই করা: "বিশ্বাস"।
​অর্পিতা এখন একা। সে জানে, এই গল্পটা এখানে শেষ হচ্ছে না। তার জীবন এখন দুটো সত্যের মাঝে দাঁড়িয়ে: তার বাবার ফাইল এবং রণজয়ের দেওয়া 'বিশ্বাস'-এর চাবি। তার রোমান্স এখন এক থ্রিলারে পরিণত হয়েছে, এবং তাকেই এখন এই গল্পের শেষ অধ্যায়টা লিখতে হবে।
"​দ্য কফি শপ কনফেশন"
সূচনা পর্ব
বি:দ্র: ৩ পর্বে শেষ করা হবে।

Like
Comment
Share
Azahar Mahmud
Azahar Mahmud
8 w ·Translate

​শেষ নিঃশ্বাস
​শহরজুড়ে এক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি খুন একই রকম—নিথর দেহ, কিন্তু শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। কেবল একটি কালো গোলাপ রাখা থাকে লাশের বুকের উপর। পুলিশ এই খুনিকে নাম দিয়েছে "ব্ল্যাক রোজ কিলার"।
​ইনভেস্টিগেটর রায়হান এই কেসের দায়িত্বে। প্রতিটি খুন তাকে ধাঁধায় ফেলে দিচ্ছে। যত তদন্ত করছেন, ততই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। প্রথম দিকে তিনি সন্দেহ করেছিলেন কোনো সিরিয়াল কিলারকে। কিন্তু খুনের ধরন, ঘটনাস্থল এবং শিকারদের মধ্যে কোনো মিল না থাকায় তার এই ধারণা পাল্টে যায়।
​এক রাতে, রায়হান যখন শেষ শিকারের লাশের রিপোর্ট পড়ছিলেন, তখন একটা ছোট, প্রায় অলক্ষ্য জিনিস তার চোখে পড়ল—লাশের পাশে পড়ে থাকা একটি মাইক্রোএসডি কার্ড। তিনি কার্ডটা ফরেনসিক টিমের হাতে তুলে দিলেন।
​ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর রায়হান চমকে উঠলেন। কার্ডে কোনো ভিডিও বা ছবি ছিল না, ছিল শুধু একটি অডিও ফাইল। অডিওটি প্লে করার পর তিনি শুনতে পেলেন, একজন মানুষ খুব ধীরে ধীরে শ্বাস নিচ্ছে আর শ্বাস ছাড়ছে। প্রতিটি শ্বাসের সঙ্গে যেন মৃত্যুর নিঃশ্বাস মিশে আছে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ নিঃশ্বাসের শব্দটা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শুধু একটি যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর শোনা যায়: "টাইমার শেষ।"
​রায়হান দ্রুত অন্য খুনের রিপোর্টগুলো দেখতে শুরু করলেন। প্রতিটি লাশের পাশে কোনো না কোনো ডিভাইস ছিল—একটি ভাঙা খেলনা গাড়ি, একটি পুরোনো ঘড়ি, একটি অকেজো পেনড্রাইভ। প্রতিটি ডিভাইসেই ছিল সেই একই অডিও ফাইল।
​তিনি বুঝতে পারলেন, ব্ল্যাক রোজ কিলার কোনো মানুষ নয়। এটি এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা, যা কোনো নির্দিষ্ট টার্গেটের কাছে পাঠানো হচ্ছে। এই ডিভাইসগুলো মাইক্রোচিপের মাধ্যমে শিকারের হৃদস্পন্দন নিরীক্ষণ করে। হৃদস্পন্দন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নেমে এলে বা বন্ধ হয়ে গেলে, সেটিকে টাইমার শেষ হিসেবে ধরে নেয় এবং কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কিভাবে?
​আচমকা একটা চিন্তা রায়হানের মাথায় এল—খুনিরা শিকারের হৃদস্পন্দনকে প্রভাবিত করার জন্য শব্দ ব্যবহার করেছে। উচ্চ মাত্রার সাবসনিক ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে তারা শিকারের হৃৎপিণ্ডের কার্যকলাপকে ব্যাহত করছে।
​রায়হান দ্রুত তার টিমের সাহায্যে প্রতিটি ডিভাইসের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করলেন। তিনি দেখলেন, ডিভাইসগুলো সবই একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। সেই কুরিয়ারের ঠিকানা খুঁজে তিনি এক পুরোনো কারখানায় পৌঁছালেন।
​কারখানার ভেতরে ঢোকার পর রায়হান দেখতে পেলেন, সেখানে অসংখ্য কালো গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে আছে। হঠাৎ একটি যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর ভেসে এল: "স্বাগতম, ইনভেস্টিগেটর রায়হান।"
​দেয়ালে লাগানো মনিটরে একজন মুখোশধারী মানুষের চেহারা ভেসে উঠল। সে বলল, "আপনি সত্যের খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন। কিন্তু আপনার এই আগ্রহই আপনার জন্য বিপদ ডেকে এনেছে।"
​রায়হান বুঝতে পারলেন, তিনি নিজে এখন খুনিটির পরবর্তী শিকার। তিনি তার পকেট থেকে রিভলভার বের করে সতর্ক হলেন। কিন্তু চারপাশ থেকে তখন সেই যান্ত্রিক শ্বাসের শব্দ ভেসে আসছে। প্রতিটি শ্বাসের সঙ্গে তার বুকের ভেতর একটা অজানা চাপ অনুভব হতে লাগল। তিনি দেখলেন তার বুকের উপর একটি কালো গোলাপ রাখা আছে।
​রায়হান দ্রুত তার রিভলভার দিয়ে মনিটরটি ভেঙে দিলেন। কিন্তু শব্দ থামে না। চারিদিকে তখন মৃত্যুর এক নিঃশব্দ সুর বাজছিল। তার হৃদস্পন্দন দ্রুত হতে লাগল। তিনি এক এক করে প্রতিটি ডিভাইস খুঁজে বের করে সেগুলো ভেঙে দিতে শুরু করলেন। একসময় তিনি একটি বড় ডিভাইস পেলেন যেটি থেকে এই শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে।
​তিনি যন্ত্রটি ভেঙে দিলেন। শব্দ থেমে গেল। রায়হান মাটিতে পড়ে গেলেন, তার শরীর ঘামে ভিজে গেছে। তিনি দেখলেন তার বুকে রাখা কালো গোলাপটা আর নেই।
​পরদিন, কারখানার ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে পুলিশ একটি গোপন ল্যাবরেটরির সন্ধান পেল। সেখান থেকে তারা ব্ল্যাক রোজ কিলারকে খুঁজে বের করল। সে কোনো মানুষ নয়, বরং একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যে এটি নির্দিষ্ট মানুষকে টার্গেট করে এবং তাদের হৃদস্পন্দন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
​রায়হান সেই ঘটনার পর থেকে আর কখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারেননি। তিনি এখনো সেই যান্ত্রিক শ্বাসের শব্দ শুনতে পান। মাঝেমধ্যে রাতে ঘুম ভেঙে গেলে তার মনে হয়, কেউ যেন তার বুকের উপর একটি কালো গোলাপ রেখে দিয়েছে।

Like
Comment
Share
Load more posts

Unfriend

Are you sure you want to unfriend?

Report this User

Edit Offer

Add tier








Select an image
Delete your tier
Are you sure you want to delete this tier?

Reviews

In order to sell your content and posts, start by creating a few packages. Monetization

Pay By Wallet

Payment Alert

You are about to purchase the items, do you want to proceed?

Request a Refund