গরম সিঙ্গাড়ায় কা'ম'ড় দিয়ে পাত্রের মা বললো,
“তো আপনাদের মাত্র এই দুটোই ঘর?
জামাই এসে থাকবে কোই?”
আমার বাবা বললো,“মানে ওপরে বানানোর ইচ্ছে আছে...!!”
পাত্রের মা বললো,“আমাদের আবার বিশাল বাড়ি। চারতলা। অনেক ঘর...!!”
আমি দেখলাম বাবাকে। খুশি হলো না দুঃখ পেলো বুঝা গেলো না। তবে মুখে হাসি ভাবটা রাখার চেষ্টা করছে।
পাত্রের মা এবার খাস্তা কচুরি খাচ্ছে।
বললো,“তো আপনাদের বাথরুম ওই একটাই? ইন্ডিয়ান?”
বাবা বললো,“হুম, ইয়ে মানে ছাদে একটা বানিয়েছিলাম। কমপ্লিট করা হয়নি।”
পাত্রের মা কচুরিটা শেষ করে বললো,“আমার ছেলের কিন্তু ক*মো*ড লাগে।”
বাবা বললো,“ও আচ্ছা... সে বানিয়ে নেবো।”
এবার প্রশ্ন এলো আমার দিকে,
তা তুমি রুটি বেলতে পারো?
বললাম, হ্যাঁ।
ভদ্রমহিলা রসগোল্লা মুখে পুরে বললো,
বাহ্, তা তুমি তো এম.এ পাশ। চাকরি করবে না?
বললাম, হুম ইচ্ছে তো আছে।
পাত্রের মা বললো, আমার ছেলের লাখ টাকা মাইনে। তোমার চাকরি করার দরকার নেই।
আমার মা বললো, হ্যাঁ কিন্তু পড়াশোনায় ও কিন্তু ভালোই... একটু চেষ্টা...
পাত্রের বাবা চিকেন প্যাটিস চি'বো'তে চি'বো'তে শোনালো, আমাদের বাড়ির বৌয়েরা চাকরি করে না। তা তুমি গান জানো তো?
বললাম, না।
বাবা বললো, ও ভালো নাচতে পারে। কতো পুরস্কার...ওই যে দেখুন...
পাত্রের মা চিকেন স্প্রিং রোলটা শেষ করে বললো,
বাড়ির বৌ ধেই ধেই করে নাচানাচি করবে, সে চলবে না। বরং তুমি একটা গান গাও...
আমি মা-বাবার মুখের দিকে তাকালাম। মা বললো,
ওই যে "পুরানো সেই দিনের কথা"টা গেয়ে শোনা।
গাইলাম।
পাত্রের মা সীতাভোগটা এক চামচ মুখে নিয়ে বললো, মেয়ে আমাদের পছন্দ। তা বিয়েতে আপনারা কী কী দিতে পারবেন?
বাবা হাত কচলাতে কচলাতে বললো, ওই...
আমি বললাম, যদি কিছু মনে না করেন বলছি যে, আপনার ছেলে কী নিয়ে পড়েছে?
উত্তর এলো, ইঞ্জিনিয়ারিং।
বললাম, ওহ। গান জানে না?
না।
আর নাচ?
পাত্রের বাবা, না।
রুটি বেলতেও জানে না নিশ্চয়ই। তাহলে ওই চারতলা বাড়িতে শুধু ক*মো*ডে*র ব্যবহার ছাড়া আর কিছুই জানে না? তাহলে প্রতি রবিবার ছেলেকে আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিন। ঐদিন আমি নাচ শেখাই। ফ্রীতে ধেই ধেই করা শিখিয়ে দেবো। এর বেশী আমরা আর কিছু দিতে পারবো না। সরি।
বাবা বললো, আচ্ছা, এবার আসুন।
ওরা দুজন গজরাতে গজরাতে বিদায় নিলো।
বোন বললো, বললেই যখন একটু আগে বলবে তো! খাবারগুলো বেঁচে যেতো তাহলে। # #