তানজিম বোর্ড কওমি মাদ্রাসা | #কওমে শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
আপনি তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এটি বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা বোর্ড। নিচে এর বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড
তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশের একটি স্বতন্ত্র এবং উল্লেখযোগ্য কওমি মাদ্রাসা বোর্ড। এটি দেশের বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসাকে এর অধিভুক্ত করে এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে।
১. প্রতিষ্ঠা ও উদ্দেশ্য:
প্রতিষ্ঠা: তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড নির্দিষ্ট কিছু উলামায়ে কেরামের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো কওমি মাদ্রাসার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা পদ্ধতিকে রক্ষা করা এবং শিক্ষার্থীদের ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ করা।
উদ্দেশ্য: এই বোর্ডের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ইসলামিক জ্ঞান, বিশেষ করে কুরআন, হাদিস, ফিকহ এবং আরবি ভাষার গভীর জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা। এটি কওমি মাদ্রাসার নিজস্ব স্বকীয়তা ও দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতি অক্ষুণ্ণ রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
২. কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য:
পরীক্ষা পরিচালনা: তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া বোর্ডের আওতাধীন মাদ্রাসাগুলোতে নির্দিষ্ট স্তরের পরীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও জ্ঞান যাচাই করা হয়।
সিলেবাস ও কারিকুলাম: এই বোর্ড ঐতিহ্যবাহী কওমি সিলেবাস অনুসরণ করে, যেখানে কুরআন, হাদিস, তাফসীর, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, আরবি সাহিত্য ও ব্যাকরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এছাড়াও, বাংলা, গণিত এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ও পড়ানো হয়।
মাদ্রাসা অধিভুক্তি: তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া বোর্ডের অধীনে বেশ কিছু কওমি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। এই বোর্ড সেসব মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রমের মান নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করে।
শিক্ষকদের মান উন্নয়ন: বোর্ড শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে, যাতে তারা আধুনিক এবং কার্যকর পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করতে পারেন।
৩. আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক:
তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া কওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড হলো আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর আওতাভুক্ত ছয়টি মূল কওমি বোর্ডের মধ্যে অন্যতম। যেহেতু দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল) পরীক্ষার সনদকে সরকার মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান দিয়েছে এবং এই পরীক্ষা আল-হাইআতুল উলয়া কর্তৃক পরিচালিত হয়, তাই তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়াও এই কেন্দ্রীয় বোর্ডের অংশীদার হিসেবে কাজ করে। এর অধীনে পরিচালিত দাওরায়ে হাদিস স্তরের শিক্ষার্থীরা আল-হাইআতুল উলয়ার অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং সনদ লাভ করে।
৪. প্রভাব ও অবদান:
তানজিমুল মাদারিস সিদ্দিকীয়া বাংলাদেশের ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি অসংখ্য আলেম ও দ্বীনী শিক্ষাবিদ তৈরিতে অবদান রাখছে, যারা সমাজে ধর্মীয় জ্ঞান ও নৈতিকতার প্রচারে কাজ করছেন।
আশা করি, এই তথ্যগুলো আপনার উপকারে আসবে।
ko bhi Madrasi khabar | #কওমি শিক্ষা বোর্ড
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (সংক্ষেপে বেফাক) বাংলাদেশের একটি বৃহৎ এবং প্রাচীন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। নিচে এই বোর্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (Befaqul Madarisil Arabia Bangladesh)
১. প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি:
প্রতিষ্ঠা: ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের অন্যতম প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর পৃষ্ঠপোষকতা এবং অন্যান্য প্রবীণ উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরিচিতি: এটি বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাসমূহের একটি অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান শিক্ষা বোর্ড। এটি দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতি ও সিলেবাস অনুসরণ করে পরিচালিত হয়।
২. উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:
কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আধুনিকায়ন।
মাদ্রাসাসমূহের মধ্যে একটি সুসংগঠিত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।
কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ইসলামী জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।
পরীক্ষা পরিচালনা, ফলাফল প্রকাশ এবং সনদ প্রদান করা।
৩. কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য:
পরীক্ষা পরিচালনা: বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ প্রতি বছর বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা পরিচালনা করে থাকে, যেমন: ইবতেদায়ী (প্রাথমিক), মুতাওয়াসসিতাহ (নিম্ন মাধ্যমিক), সানাবিয়্যাহ আম্মাহ (মাধ্যমিক), সানাবিয়্যাহ খাসসাহ (উচ্চ মাধ্যমিক), ফযীলত (স্নাতক) এবং দাওরায়ে হাদিস (স্নাতকোত্তর)।
সিলেবাস ও কারিকুলাম: এটি দারুল উলূম দেওবন্দের সিলেবাস ও কারিকুলাম অনুসরণ করে, যা কুরআন, হাদিস, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, ফার্সি, উর্দু, বাংলা, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত এবং অন্যান্য আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত।
মাদ্রাসা অধিভুক্তি: বাংলাদেশের হাজার হাজার কওমি মাদ্রাসা বেফাকের অধীনে পরিচালিত হয়। এটি এসব মাদ্রাসার শিক্ষার মান পর্যবেক্ষণ করে এবং তাদের নিয়মিত তত্ত্বাবধান করে।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ: বেফাক শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে।
প্রকাশনা: এটি ইসলামি বইপত্র, গবেষণা জার্নাল এবং সিলেবাস সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকাশনা প্রকাশ করে।
৪. আল-হাইআতুল উলয়া এর সাথে সম্পর্ক:
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ছয়টি কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের মধ্যে অন্যতম। দাওরায়ে হাদিসের (তাকমীল) পরীক্ষা আল-হাইআতুল উলয়া কর্তৃক পরিচালিত হলেও, বেফাক অন্যান্য স্তরের পরীক্ষা এবং মাদ্রাসার সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আল-হাইআতুল উলয়া হলো কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিসের সনদের সরকারি স্বীকৃতির জন্য গঠিত একটি সমন্বয়কারী বোর্ড, যেখানে বেফাক একটি মূল সদস্য হিসেবে কাজ করে।
৫. বর্তমান অবস্থা:
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার বৃহত্তম শিক্ষা বোর্ড হিসেবে এর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে এবং দেশের ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে এবং হাজার হাজার আলেম তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
Only Unicorn
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?